স্পোর্টস ডেস্ক :
এক রোহিত শর্মার কাছেই হেরে গেল বাংলাদেশ! ৪৩ বলে ৬টি চার ও ৬টি ছক্কার সাহায্যে ৮৫ রান করে তিনিই ম্যাচটি কেড়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের কাছ থেকে। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বৃহস্পতিবার ৮ উইকেটে হেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। যার ফলে সিরিজে এখন ১-১ সমতা বিরাজ করছে। ১০ অক্টোবর নাগপুরে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি। ওইদিন ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
রাজকোটে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের দেয়া ১৫৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৫.৪ ওভারে ২ উইকেটে জয় তুলে নেয় ভারত। দলের পক্ষে অধিনায়ক রোহিত শর্মা সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন। ৩১ করেন ধাওয়ান। ১৩ বলে ২৪ করে অপরাজিত থাকেন শ্রেয়াস আয়ার। ভারতের দুইটি উইকেটের মধ্যে দুইটিই নেন লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।
ভারত শুরু থেকে বাংলাদেশের বোলারদের তুলোধুনো করতে থাকে। ধাওয়ান শান্ত থাকলেও চড়াও ছিলেন রোহিত। দলীয় ১১৮ রানে ধাওয়ান আউট হওয়ার মাধ্যমে স্বাগতিকদের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। বিপ্লবের বলে বোল্ড হন তিনি। দলীয় ১২৫ রানে বিপ্লবের বলেই সাবস্টিটিউট ফিল্ডার মিথুনের হাতে ক্যাচ হন রোহিত। এরপর রাহুল ও আয়ার মিলে ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছাড়েন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন ওপেনার নাঈম শেখ। ২০ বলে ৩০ রান করেন সৌম্য। ২১ বলে ৩০ করেন অধিনায়ক রিয়াদ। ২১ বলে ২৯ করেন লিটন। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে যুজবেন্দ্র চাহাল ২টি, ওয়াশিংটন সুন্দর ১টি, খলিল আহমেদ ১টি ও দীপক চাহার ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ সূচনা করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার লিটন ও নাঈমের ব্যাটে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে দলীয় অর্ধশত রান পূরণ করে টাইগাররা। দলীয় ৬০ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। রান আউট হয়ে ফিরে যান লিটন। ২১ বলে চারটি চারের সাহায্যে তিনি করেন ২৯ রান।
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ব্যক্তিগত ১৭ রানে আউট হয়ে যেতে পারতেন লিটন। কিন্তু ভারতীয় উইকেটরক্ষক রিশাব পান্তের ভুলে বেঁচে যান তিনি। সেবার স্ট্যাম্পিং হয়েছিলেন লিটন। কিন্তু উইকেটের সামনে হাত বাড়িয়ে বল ধরেছিলেন পান্ত। যে কারণে তৃতীয় আম্পায়ার নট আউটের সিদ্ধান্ত দেন।
এর পরের ওভারে বল আকাশে তুলে দিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু সহজ ক্যাচ মিস করেন রোহিত শর্মা। কিন্তু অষ্টম ওভারে বাঁচতে পারেননি লিটন। রান আউট হয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে।
১১তম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে শ্রেয়াস আয়ারের হাতে ক্যাচ হয়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার নাঈম শেখ। ৩১ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩৬ রান করেন নাঈম।
গত ম্যাচের ম্যান অব দ্য ম্যাচ মুশফিকুর রহিম আজ বেশিদূর যেতে পারেননি। ৬ বলে ৪ রান করে ফিরে যান তিনি। দলীয় ৯৭ রানে চাহালের বলে তিনি ক্রুনালের হাতে ক্যাচ হন।
আজ শুরু থেকেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে খেলছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।
যুজবেন্দ্র চাহালের করা ১৩তম ওভারের শেষ বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন সৌম্য। কিন্তু ব্যাটে বলে হয়নি। স্ট্যাম্প ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক রিশাব পান্ত। নিশ্চিত আউট জেনে সাজঘরের দিকে ফিরে যাচ্ছিলেন সৌম্য। কিন্তু ফিল্ড আম্পায়াররা আউট নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত দেন।
তৃতীয় আম্পায়ার রিপ্লে দেখে তার সিদ্ধান্ত জানান। প্রথমে মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো জয় ‘নট আউট’। তা দেখে একটু আপ্লুতই হয়েছিলেন টাইগারভক্তরা। কিন্তু পর মুহূর্তেই আবার স্ক্রিনে দেখানো হয় আউট। ফিরে যেতে হয় সৌম্যকে। ওয়ানডাউনে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ বলে ২টি চার ও একটি চারের সাহায্যে ৩০ রান করেন তিনি।
দলীয় ১২৮ রানে খলিল আহমেদের বলে রোহিতের হাতে ধরা পড়েন আফিফ হোসেন। দলীয় ১৪২ রানে ফিরে যান রিয়াদ। তিনি ওই সময় আউট না হলে দলের স্কোরটা আরেকটু বড় হতে পারতো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৮ উইকেটে জয়ী ভারত।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৫৩/৬ (২০ ওভার)
(লিটন দাস ২৯, নাঈম শেখ ৩৬, সৌম্য সরকার ৩০, মুশফিকুর রহিম ৪, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২০, আফিফ হোসেন ৬, মোসাদ্দেক হোসেন ৭*, আমিনুল ইসলাম ৫*; দীপক চাহার ১/২৫, খলিল আহমেদ ১/৪৪, ওয়াশিংটন সুন্দর ১/২৫, যুজবেন্দ্র চাহাল ২/২৮, শিভম দুবে ০/১২, ক্রুনাল পান্ডিয়া ০/১৭)।
ভারত ইনিংস: ১৫৪/২ (১৫.৪ ওভার)
(রোহিত শর্মা ৮৫, শিখর ধাওয়ান ৩১, লোকেশ রাহুল ৮*, শ্রেয়াস আয়ার ২৪*; মোস্তাফিজুর রহমান ০/৩৫, শফিউল ইসলাম ০/২৩, আল-আমিন হোসেন ০/৩২, আমিনুল ইসলাম ২/২৯, আফিফ হোসেন ০/১৩, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/২১)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: রোহিত শর্মা (ভারত)।