স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটে লন্ডন থেকে গতকাল সোমবার আগত প্রবাসীদের সরকারি নির্দেশনা মেনে থাকতে হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে। এ লক্ষ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে নগরীর উন্নতমানের ১০টি আবাসিক হোটেল। এর মধ্যে সোমবার আসা ৪২জন প্রবাসীকে রাখা হয়েছে নগরীর দরগাহ গেইটস্থ হোটেল স্টার প্যাসিফিক ও হোটেল হলি গেইট এবং আরও কয়েকটি হোটেলে।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৩ জন প্রবাসী ওই ২ হোটেলে উঠেছেন। বাকিরা অন্য হোটেলে উঠবেন বলে জানা গেছে। তবে প্রবাসীরা এসব নিয়ম মানতে নারাজ। তারা বলেছেন, করোনার রিপোর্ট নেগেটিভ থাকা স্বত্তেও কেন কোয়ারেন্টিনে তাদের থাকতে হবে।
বিষয়টি সোমবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের। তিনি বলেন, প্রবাসীরা হোটেল ভাড়া বেশির অভিযোগে হোটেলে উঠতে আপত্তি জানান। এজন্য বুকিং দিতে দেরি হয়েছে। তবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৮ জন প্রবাসী হোটেল স্টার প্যাসিফিক ও ৭ জন হোটেল হলি গেইটে পরিবার নিয়ে উঠেছেন। বাকিরা আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত করা অন্য কোনো হোটেলে উঠবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে লন্ডন থেকে সোমবার দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে করে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আসেন
৪৭ জন লন্ডন প্রবাসী। এরমধ্যে এক শিশুসহ ৪২জন সিলেটের। ইমিগ্রেশ প্রক্রিয়া ও স্বাস্থ্যপরীক্ষা শেষে সোমবার বিকেল ৩টার দিকে প্রবাসীদের নিয়ে আসা হয় দরগাহ গেইটস্থ হোটেল স্টার প্যাসিফিক হোটেলে। তবে সরকারি নির্দেশনা মেনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকাসহ কয়েকটি বিষয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়ে হোটেলের সামনেই জড়ো হয়ে হট্টগোল করেন প্রবাসীরা। এসময় তারা নিজ খরচে কেন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন এবং থাকার খরচ নিজেরা কেন বহন করবেন এসব বিষয়ে আপত্তি তুলে অনেকে পুলিশের বাধা অমান্য করে হোটেল থেকে বেরিয়ে যেতে চান। এসময় হোটেল ভাড়া বেশি বলে অভিযোগ করেন তারা এবং বুকিং দিতে অস্বীকৃতি জানান।
হোটেল ভাড়া বেশি অভিযোগ করে প্রবাসীরা বলেন, আমরা সম্পূর্ণ সুস্থ। আমরা হোটেলে থাকবে কেন? তার উপর ভাড়া খুব বেশি, আমরা বাড়ি যেতে চাই।
এছাড়াও কেউ কেউ বাইরে এসে সিগারেট খাওয়া নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তর্কে লিপ্ত হন। এসবের চিত্র ক্যামেরাবন্দি করতে গেলে এসময় কয়েকজন প্রবাসী সাংবাদিকদের ইঙ্গিত করে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন এবং অশোভন আচরণও করেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে হোটেলের ভেতরে নিয়ে যান।
হোটেল স্টার প্যাসিফিক জানায়, লন্ডন থেকে আগত যাত্রীদের জন্য তাদের হোটেলের পুরো চতুর্থ তলা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হোটেলের নিয়ম অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন সকালের নাস্তা ফ্রি খাওয়াবে। আর দুপুর ও রাতের খাবার প্রবাসীদের চাহিদা অনুযায়ি তাদের কক্ষে সরবারহ করা হবে। খাবারের বিল ও হোটেল কক্ষের বিল প্রবাসীরা পরিশোধ করতে হবে। এই হোটেলের সিঙ্গেল বেডের কক্ষের ভাড়া ৪ হাজার ও ডাবল বেডের কক্ষের জন্য ৫হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। হোটেলের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকাকালীন সময়ে কেউ তাদের সাথে দেখা করতে পারবেন না। সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনার পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।