সড়কে খানাখন্দ, স্বাভাবিক হচ্ছে না তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ

89
তাহিরপুরের আনোয়ারপুর ব্রীজ এপ্রোচ ভেঙ্গে যাওয়া স্থান নৌকায় পারাপার হচ্ছেন যাত্রী সাধারণ।

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
বন্যার পানি কমলেও জেলা সদরের সাথে স্বাভাবিক হয়নি সড়ক যোগাযোগ। সড়কে একাধিক স্থানে পানি, নৌকা যোগে কোন রকম পারাপার হচ্ছে মোটর বাইক ও লোকজন। সিএনজি, ট্রাক, ট্রলি, বাস কিংবা প্রাইভেট কার কোনটি আর চলছে না এ সড়কে। সিএনজি চালক ও লেগুনা চালকরা রয়েছেন বেকায়দায়। কবে সচল হবে এ সড়ক সহসা বলা যাচ্ছে না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে যাতায়াতকারী তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার ৫ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী।
তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরের দুরত্ব ৩৩ কিলোমিটার। সড়কে বিশ^ম্বরপুর উপজেলার দূর্গাপুর (১শ মিটার)ও শক্তিয়ার খলাতে (২শ মিটার) স্থান দ’ুটি অপেক্ষাকৃত নিচু। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে সামন্য পানিতে সড়ক দু’টি তলিয়ে যায়। ফলে বর্ষা মৌসুমে প্রায়ই কখনো ১০ দিন কখনো ১৫ দিন এ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। অপরদিকে আনোয়ারপুর ব্রীজের পূর্ব পাশে ১’শ মিটার এপ্রোচ এর কাজ ২০১৮ সালে থেকে এখনো সম্পন্ন করতে পারছে না উক্ত কাজের ঠিকাদার। ঠিকাদারের গাফিলতি ও এলজিইডির উদাসীনতায় গত দু’বছর ধরে ঐ স্থান দিয়ে পাহাড়ি ঢলে পানি প্রবাহে খানখন্দের সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি ২৭ জুন থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। পাহাড়ি ঢলের পানি যাদুকাটা নদী দু তীর উপচে এপ্রোচ সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে পানি থোরে সড়কটি একেবারেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পরে।
রবিবার সরজমিন তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র। আনোয়ারপুর ব্রিজের এপ্রোচ সড়ক পারাপার হতে গিয়ে একটি ট্রাক গর্তে পরে আটেক যায়। পথে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণ নৌকা যোগে এ জায়গাটুক কোন ভাবে পারাপার হচ্ছেন। একই অবস্থা সড়কের আরও একটু পূর্ব দিকে শক্তিয়ারখলা ও দূর্গাপুরে। সেখানেও লোকজন নৌকায় করে পারাপার হচ্ছেন।
পথে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের অভিযোগ ইচ্ছে করে এলজিইডি সড়কের এমন অবস্থা করে রাখছে। ২শ মিটার সড়ক নীচু করে রাখছে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহের জন্য। তা না করে ঐ স্থানে দুটো ছোট খাটো ব্রিজ নির্মাণ করে দিলে সড়কটি সামান্য পানিতে তলিয়ে যেত না। তাছাড়া একই অভিযোগ এর কথা বললেন আনোয়ার পুর ব্রীজ এপ্রোচ সড়কের কথা। তার জানান, তারা ভেবে পান না কেন ১’শ মিটার সড়ক এর কাজ ৩ বছরেও শেষ করা গেল না।
মধ্য তাহিরপুর গ্রামের আলী হায়দার তিনি তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে ভাড়ায় সিএনজি চালান। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে বন্যার পানি কমেছে, কিন্তু সড়ক ভাঙ্গা থাকার কারণে তিনি গাড়ি নিয়ে বেড় হতে পারছেন না।
রতনশ্রী গ্রামের মোটর বাইক চালক সাময়ূন মিয়া বলেন, সড়কে তিন স্থানে পানি থাকায় নৌকায় করে পারাপার হতে হয়, এতে ১ ঘণ্টার পথ যেতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা। তাই ইচ্ছে করেই জেলা সদর ভাড়া নিয়ে যাই না। আনোয়ারপুর ভাঙ্গাতেই বসে থাকি, এখান থেকেই যে কয়টা ভাড়া পাই। উপজেলার বালিজুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হারুনর রশিদ, তিনি বলেন, আমাদের উপজেলা সদরে আসতেও সমস্যা জেলা সদরে যাতায়াত করতে সমস্যা। বর্ষায় তিন স্থানে কোথাও না কোথায় পানিতে নিমজ্জিত থাকে।
বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুজ জহুর বলেন, এপ্রোচ সড়কের কাজটি না করায় সড়কে ভোগান্তিতে পড়েছেন সড়কে যাতায়াতাকারী যাত্রী সাধারণ।
এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী সুনামগঞ্জ মাহবুবুর রহমান বলেন, পানি প্রবাহের জন্য দুটো স্থান নীচু রাখা হয়েছে। তাছাড়া হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলে বন্যা সৃষ্টি হওয়ায় আনোয়ারপুর এপ্রোচ সড়কটি মেরামত করা গেল না। পানি কমলে দ্রুত সড়কটি মেরামত করে দেয়া হবে বলে তিনি জানান। সেই সাথে চলমান বন্যায় তাদের কমপক্ষে ১ শ কিলোমিটার সড়ক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি অবহিত করেন।