৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণার নির্দেশ

5

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিনকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। আগামী এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশের জন্য বলা হয়েছে।
এ-সংক্রান্ত জারি করা এক রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন। স্বাধীনতার লড়াইয়ের প্রস্তুতির জন্য জনগণের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’এরপর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি নিধনে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের পর লাল-সবুজের স্বাধীন বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নেয়।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দিনটি স্মারক হিসেবে ইতিহাস হয়ে আছে। এই ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত করেছে ইউনেস্কো।
ঐতিহাসিক ওই দিনকে কেন জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হবে না এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থানে কেন তার ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে না তা জানতে চেয়ে ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের জারি করা রুলে পরবর্তী তিন সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ-সচিব, অর্থসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, শিক্ষাসচিব, গণপূর্তসচিব, সংস্কৃতিসচিবকে জবাব দিতে বলা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদ ৭ মার্চকে ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণা ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সেই মঞ্চে তার আবক্ষ ভাস্কর্য নির্মাণের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করেন।
আদালতের শুনানিতে বশির আহমেদ বলেন, ‘১৯৫টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুপ্রিম কোর্ট দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে বিভিন্ন আদেশ দিয়েছেন। এ কারণে আমি এ রিট দায়ের করেছি। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ যে স্থানে ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে মঞ্চ নির্মাণ করতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তার নয় মাস পর ১৬ ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেই উদ্যানেই আত্মসমর্পণের দলিলে সই করে।