প্রাথমিকে এক বিধিমালায় সব নিয়োগ – প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

5

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শীর্ষ পদ থেকে সর্বনিম্ন পদে নিয়োগ দিতে একটি সমন্বিত বিধিমালা তৈরি করতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী ও প্রধান শিক্ষক এবং অফিস সহায়ক থেকে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পর্যন্ত নিয়োগ দিতে দুটি বিধিমালার পরিবর্তে একটি বিধিমালার আলোকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, পিডিপি-৪ (চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি-৪) অনুযায়ী নতুন নিয়োগ বিধিমালা করতে হবে। সেটাতে আমরা একটা নিয়োগ বিধিমালা করবো।
‘এখন সহকারী ও প্রধান শিক্ষক এবং অফিস সহায়ক থেকে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পর্যন্ত দুটি নিয়োগ বিধিমালা আছে। এখন একটা বিধিমালা তৈরি করার জন্য কনসালট্যান্টকে নির্দেশ দিয়েছি। আগামী এক মাসের মধ্যে সেটা আমাদের কাছে উপস্থাপিত হবে। এই বিধিমালার মধ্যে সব পরিষ্কার করা থাকবে।’
সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ দ্রুতই
সহকারী প্রধান শিক্ষকদের পদ সৃজন বিষয়ে সচিব বলেন, আগে প্রধান শিক্ষকেরা দুই গ্রেডে বেতন পেতেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা ১১তম এবং প্রশিক্ষণবিহীনরা ১২তম গ্রেডে। অর্থ বিভাগ দুই গ্রেডের একটা স্কেল করে ১১তম গ্রেড দিয়েছে।
আর সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা ১৪তম এবং প্রশিক্ষণবিহীনরা ১৫তম গ্রেডে ছিল। এখন সবার একটাই স্কেল ১৩তম গ্রেড। এর মাঝখানে ১২তম গ্রেডে সহকারী প্রধান শিক্ষকের একটি পদের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছি। এটা একেবারে শেষ পর্যায়ে আছে। অর্থ বিভাগ যে অনুমোদন দিয়েছে (প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড উন্নীত) সেই চিঠিতেও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড রাখা হয়।
সচিব বলেন, গত সপ্তাহেও আমরা জনপ্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করেছি, সেটা পাওয়া গেলেই আমরা অর্থ বিভাগে পাঠাবো।
‘পদ সৃষ্টির জন্য সচিব কমিটিতে যেতে হয়, ওইসব প্রক্রিয়া শেষ করে আমরা আশা করছি এটা দ্রুত সচিব কমিটিতে নিয়ে যেতে পারবো।’
প্রধান শিক্ষকেরা ১০তম গ্রেডে যেতে মামলা করেছে, এটিওরাও (১০ম গ্রেড) ৯ম গ্রেডে যাওয়ার বিষয়ে বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ১৯৮৫ সালের পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কোনো নিয়োগ বিধিমালা নেই। আমরা নিয়োগ বিধি তৈরি করে জনপ্রশাসনে পাঠিয়েছি, এটা সচিব কমিটিতে গেছে।
সচিব বলেন, আগে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের (এটিও) ১০ম গ্রেড আছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের ৯ম গ্রেডে আছে। আমরা প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু অর্থ বিভাগ বলেছে যেহেতু প্রধান শিক্ষকদের সুপারভিশন অফিসার হচ্ছে এটিও, তাদের গ্রেড ১০, সে কারণে তাদের দেওয়া হয়নি। আমাদের মন্ত্রণালয়ের কোনো বিরোধিতা ছিল না।
‘প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হতে পারে, কারণ ১০ম গ্রেডের লোক কীভাবে ১০ম গ্রেডের লোককে আবার কন্ট্রোল করবে, সুপারভিশন করতে পারবে?’
সহকারীদের নিয়োগ জটিলতা কাটছে
সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগ জটিলতা দ্রুতই কেটে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা ১৮ হাজার ১৪৭ জন নিয়োগ দিয়েছিলাম। সেখান থেকে বেশ কয়েকটি জেলায় নিয়োগ দিয়ে ফেলেছি। কিছু জেলায় হাইকোর্টে রিট করার কারণে দিতে পারিনি। এগুলো আমরা আইনি লড়াই করছি। খুব তাড়াতাড়ি নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে। এখনতো নিছক ঘটনা নিয়ে রিট করে।
সচিব বলেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেছি। এরইমধ্যে আমরা ৪৭টি আদেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেয়েছি। বাকি প্রায় ৪০/৪৫টি মামলা স্থগিতের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর কোনো স্টে-অর্ডার দেওয়া হচ্ছে না। এ মাসের মধ্যে হয়ে যাবে।