পুঁজি বাজার গতিশীল হউক

14

দেশের দুই পুঁজিবাজারে মন্দা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। আসছে না নতুন বিনিয়োগ। পুঁজির পাশাপাশি পণ্যেরও অভাব রয়েছে। আসছে না কোনো নতুন প্রতিষ্ঠান। বাজারের এ অবস্থায় বাজারকে গতিশীল করতে নির্দেশনা আসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। এরপর কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের শেয়ারবাজার, যদিও এখন পর্যন্ত বাজারকে কোনোভাবেই যথেষ্ট গতিশীল কিংবা স্থিতিশীল বলা যাবে না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা। আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলে বাজার কখনো স্থিতিশীল হবে না। তবে বাজার বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ছয় দফার একটি নির্দেশনা আসার পর মূল্যসূচকের যে অধোগতি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল, তা এবার বন্ধ হবে। সূচক একটা পর্যায়ে গিয়ে স্থিতিশীল হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আসা ছয়টি নির্দেশনার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাটি হলো, লাভজনক সরকারি কোম্পানিগুলো থেকে শেয়ার বেচা এবং বাংলাদেশে ব্যবসা করছে এমন বহুজাতিক কম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করা। এই নির্দেশনার যদি আংশিকও বাস্তবায়িত হয়, তাহলে পুরো শেয়ারবাজারের চরিত্রই বদলে যাবে।
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিশেষ তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আওতায় প্রতিটি ব্যাংক বিদ্যমান আইনি সীমার বাইরে প্রতিটি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে। এ তহবিলের মেয়াদ হবে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সব মিলিয়ে তহবিলের আকার দাঁড়াবে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা। এটি হবে ঘূর্ণায়মান বা আবর্তনশীল তহবিল। ব্যাংকগুলো নিজস্ব উৎস থেকে তহবিল জোগানের মাধ্যমে অথবা নিজেদের ধারণকৃত ট্রেজারি বিল ও বন্ড বাংলাদেশ ব্যাংকে বন্ধক রেখে সমপরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে এই টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৫ শতাংশ সুদে এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো, যা পরিশোধের সময় পাবে পাঁচ বছর। তবে ব্যাংকগুলো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারবে। এ তহবিলের বিনিয়োগকে পাঁচ বছরের জন্য ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগ হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সরকারি ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে আনার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরকারি চার ব্যাংককে তালিকাভুক্ত করা হবে। আর তালিকাভুক্ত একটি ব্যাংকের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার অফলোড করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেয়ারবাজারকে সব বাজার অর্থনীতিই পুঁজি জোগানোর জন্য ব্যবহার করেছে। আমরা আশা করব, আমাদের পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করে গতি আনতে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।