ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
“মুজিব বর্ষের প্রতিশ্রুতি জোরদার করি দুর্যোগ প্রস্তুতি” প্রতিপাদ্যে ওসমানীনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ও সিপিপির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কমিটির সদস্য ভাইস চেয়ারম্যন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণের অনুপস্থিতে বুধবার ইউএনও নীলিমা রায়হানার সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের হল রুমে আলোচনা সভা ও সভা পরবর্তী অগ্নিকান্ড নিবারণ বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য উপজেলা আওয়ামীলীগ দায়িত্ব প্রাপ্তরাসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের অধিকাংশ কর্মকর্তারা ওই সভায় অনুপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। ফলে নির্ধারিত সময় থেকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে সংশ্লিষ্টরা না আসায় দুপুর পোনে ১২টার দিকে সাংবাদিক ও ফায়ার সার্ভিসের মহড়া টিমের সদস্যদের উপস্থিতিতে শুধু মাত্র উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তরের উপপ্রকৌশলী, তথ্য কর্মকর্তা এবং শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে সস্বল্প সময়ের মধ্যেই জনগুরুত্বপূর্ণ সভার কার্যক্রম শেষ করতে হয়েছে ইউএনওকে। আইন শৃঙ্খলার বাস্তবায়ন, দুর্যোগ প্রতিরোধসহ গুরুত্বপূর্ণ সভায় অনেকটা সম্মেলিত ভাবে উপজেলা পর্যায়ের সকল জনপ্রতিনিধি, ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের অধিকাংশ কর্মকর্তারা অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হচ্ছে। সমালোচনার ঝড় বইছে। এ বিষয়ে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন কান্তি রায় জানান, দুর্যোগ প্রশমন দিবসকে ঘিরে সকল কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সকলকে যথা নিয়মে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। ইউপি নির্বাচনকে নিয়ে চেয়ারম্যান গণ ব্যস্ত থাকায় সভায় উপস্থিত হতে পারেন নাই। এছাড়া দুর্গা পূজার ছুটিতে থাকায় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি কম ছিল। সভা শেষে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ওসমানীনগর বালাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের ইনচার্জ তাওহিদুর রহমানের নেতৃত্বে অগ্নিকান্ড নিবারণ বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আলমঙ্গীর রেজার পরিচালনায় সভায় বক্তারা বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় বর্তমান সরকার বিভিন্ন টেকসই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দুর্যোগ মোকাবেলার পূর্ব প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের পাশাপাশি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সম্মেলিত ভাবে এগিয়ে আসলে অপূরণীয় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন কান্তি রায়, শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফ মো: নেয়ামত উল্ল্যাহ, তথ্য কর্মকর্তা রুহানী আক্তার, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জুবেল আহমদ সেকেল, বর্তমান সভাপতি উজ্জল ধর, সাধারণ সম্পাদক শিপন আহমদ, থানার এসআই রফিকূল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক শহিদ হাসান। উপস্থিত ছিলেন, প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি আব্দুল মতিন, কোষাধ্যক্ষ আবুল কালামসহ অনান্য সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রসঙ্গত নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে ইউএনও নীলিমা রায়হানা যোগদানের পর থেকে উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরগুলোতে নানা অব্যবস্থাপনার সৃষ্টির অভিযোগে ঘোষণা দিয়ে প্রশাসনের সভাসহ কার্যক্রমগুলোতে অংশগ্রহণ বর্জন না করলেও ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীলরা কৌশলে উপজেলা প্রশাসনের সভা সমাবেশ এড়িয়ে যাচ্ছেন। যার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত দুর্গা পূজার প্রস্তুতি সভা, সোমবার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা এবং বুধবার দুর্যোগ প্রশমন দিবসসহ সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রমে তাদের কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে উপজেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের জনপ্রতিনিধিরাসহ আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ প্রকাশ্য কোনো মন্তব্য করতেও রাজি হচ্ছে না।