কাজিরবাজার ডেস্ক :
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর (ইউএনডিপি) মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী বৈশ্বিক মানব উন্নয়ন সূচকে একধাপ এগিয়ে ১৩৫তম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ১৮৯টি দেশ নিয়ে এ সূচক তৈরি করা হয়েছে। ২০১৮ সালের তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৯ সালে এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো। গতবছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩৬তম।
বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট-২০১৯’ প্রকাশিত হয়। অনুষ্ঠানে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি, পিকেএসএফ সভাপতি কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, পিপিআরসির নির্বাহী পরিচালক হোসেন জিল্লুুর রহমান এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশিত ইউএনডিপির প্রতিবেদনে গড় আয়ু, মাথাপিছু আয়সহ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়েছে। বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবনযাত্রার অগ্রগতি তুলে ধরতে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন সূচক তৈরি করা হয়। আগের তুলনায় বাংলাদেশ এক ধাপ এগোলেও ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পেছনে রয়েছে। যদিও পাকিস্তান, মিয়ানমার, নেপালের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
এই মানব উন্নয়ন সূচককে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলো হলো- অতি উচ্চ মানব উন্নয়ন, উচ্চ মানব উন্নয়ন, মধ্যম মানব উন্নয়ন ও নিচু মানব উন্নয়ন। অতি উচ্চ মানব উন্নয়নে রয়েছে ৬২টি দেশ। এর মধ্যে প্রথম নরওয়ে, দ্বিতীয় সুইজারল্যান্ড, তৃতীয় আয়ারল্যান্ড, চতুর্থ জার্মানি ও পঞ্চম হংকং। উচ্চ মানব উন্নয়ন সূচকে রয়েছে ৫৪টি দেশ। এর মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। শ্রীলঙ্কার অবস্থান ৭১ আর মালদ্বীপের ১০৪তম।
মধ্যম মানব উন্নয়নের তালিকায় রয়েছে ৩৬টি দেশ। এর মধ্যে ভারতের অবস্থান ১২৯তম, ভুটানের ১৩৪তম, বাংলাদেশের ১৩৫তম, মিয়ানমারের ১৪৫তম, নেপালের ১৪৭তম ও পাকিস্তানের ১৫২তম। নিচু মানব উন্নয়নের ৩৫ দেশের মধ্যে থাকা আফগানিস্তানের অবস্থান ১৭০তম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ইউএনডিপির অর্থনীতিবিদ শামসুর রহমান বলেন, প্রতিটি দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আয় ও সম্পদের উৎস, বৈষম্য, লৈঙ্গিক সমতা, দারিদ্র্য, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও আর্থিক প্রবাহ, যোগাযোগ, পরিবেশের ভারসাম্য ও জনমিতির তথ্য বিশ্লেষণ করে এই মানব উন্নয়ন সূচক তৈরি করে ইউএনডিপি। এসব মানদ-ে এবার বাংলাদেশের এইচডিআই স্কোর দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৬১৪, যা গতবার শূন্য দশমিক ৬০৮ ছিল।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সার্বিকভাবে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। যার ফল আমরা পেতে শুরু করেছি। উন্নয়নশীল দেশে কিছু বৈষম্য থাকে, এ বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। আমাদের সরকার সব খাতে ভাল করছে বলেই মানব উন্নয়ন সূচকে এগিয়েছি।
এম এ মান্নান বলেন, সম্পদ এখানে আসবে, ওখানে যাবে এটাই সম্পদের হিসাব। সম্পদের গতিবিধিতে আমরা হাত দিচ্ছি আমাদের মতো করে। সামাজিক নিরাপত্তার ওপর আমরা জোর দিয়েছি। নানা ধরনের কাজ আমরা করি, দরিদ্র মানুষের কল্যাণে সরাসরি। শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য টিকা, বিনামূল্যে বই বিতরণ, দুপুরে খাবার দেয়া শুরু করেছি, স্কুলে খাবার দেয়ার বিষয়ে আমরা সামনে আরও যাব। পল্লী ক্লিনিক চালু রেখেছি, সুপেয় খাবার পানির জন্য চাপকল হাজারে হাজারে গাড়ছি (স্থাপন করছি), টয়লেট লাখে লাখে সরবরাহ করছি। এসব করায় জীবনযাত্রার মান অনেক বেড়েছে। এভাবে আমরা বৈষম্য কমানোর চেষ্টা করছি।