কাজিরবাজার ডেস্ক :
অবৈধ অভিবাসীদের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফেরার সময়সীমা বেঁধে দেয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন মালয়েশিয়ায় আটকেপড়া ৩১ হাজার বাংলাদেশী। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে এদের যে কোন মূল্যে দেশে ফিরে আসতে হবে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে এয়ারলাইন্সগুলো অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের কাছে কোন টিকেট নেই। যে কারণে এখন ২২ হাজার টাকার টিকিট ৫২ হাজার টাকাতেও মিলছে না। একদিকে বলা হচ্ছে টিকিট সঙ্কট, আবার চড়া দাম দিলে অনায়াসেই মিলছে টিকিট। আটকেপড়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের অভিযোগ, টিকিটের কিছু সঙ্কট থাকতে পারে। তার জন্য ২২ হাজার টাকার টিকিট কিছুতেই ৫২ হাজার টাকা হতে পারে না। এটা এয়ারলাইন্সগুলোর কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। পেঁয়াজের দামের মতো এ রুটে বাড়ানো হয়েছে টিকিটের দাম। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে সঙ্কট কাটাতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় জরুরী ভিত্তিতে এ রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালানোর নির্দেশ দিয়েছে। বিমান আপাতত অতিরিক্ত ১৬ ফ্লাইট চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে। তারপরও টিকেটের সঙ্কট কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা।
উল্লেখ্য ‘ব্যাক ফর গুড’ কর্মসূচীর আওতায় মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশী অবৈধ শ্রমিকদের দেশে ফিরে আসার সুযোগ দিয়েছে। মালয়েশিয়া সরকার ঘোষিত এ সুযোগ এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। এই কর্মসূচীর আওতায় নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২৯ হাজার বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসী সাধারণ ক্ষমার সুবিধা নিয়েছেন। আরও তিন হাজার আবেদন পড়েছে। মোট আবেদন পড়েছে প্রায় ৩২ হাজার। সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসব প্রবাসীর দেশে ফেরার বাধ্যবাধকতা থাকায় টিকিটের এমন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। টিকিট সঙ্কটের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আটাবের একজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, এখন শীতকাল। বছরের শেষ। এ সময়টাতে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও বিত্তবানরা দেশের বাইরে ভ্রমণে মালয়েশিয়ান ও থাইল্যান্ডকেই টার্গেট করেন। তারা সস্তায় বিভিন্ন প্যাকেজের টিকেট কনফার্ম করে রাখেন অন্তত ২/৩ মাস আগেই। ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেখা গেছে বিমানসহ অধিকাংশ এয়ারলাইন্স তাদের আসন বিক্রি করে বসে আছে। একদিকে ডিসেম্বরের স্কুল ছুটি অন্যদিকে অবৈধ ঘোষিত প্রবাসী শ্রমিকদের ফেরত আসার চাপ। এটাতে কারও কোন হাত নেই। কিংবা কৃত্রিম সঙ্কটও বলা যাবেনা। এটা বুঝতে পেরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি সামাল দিতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালানোর। আটাব সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরার জন্য টিকেট সঙ্কট হতে পারে এটা আগেই টের পাওয়া গিয়েছিল। একটা সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এত সংখ্যক প্রবাসীকে ফিরিয়ে আনাটা আসলেই কঠিন হয়ে উঠবে এমন বাস্তবতা থেকেই বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। তাতে সাড়া দিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত ফ্লাইট অপারেট করার সিদ্বান্ত নেয়। বোয়িং ৭৩৭ ও ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার দিয়ে এসব ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। প্রয়োজনে শেষের দিকে আরও ফ্লাইট বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিমানের একজন পদস্থ কর্মকর্তা। যদিও কবে থেকে এসব ফ্লাইট পরিচালিত হবে সেটি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।