সমবায় ব্যাংক মুখ থুবড়ে পড়েছে এটা লাভজনক করতে হবে – প্রধানমন্ত্রী

27
৪৮তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন ও জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১৮ বিতরণ অনুষ্ঠানে সমবায় মেলার উদ্বোধন শেষে মেলা পরিদর্শন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
পণ্যের অপচয় রোধ করে সহজে বাজারজাতকরণ নিশ্চিতে সমবায়ে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৮তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন ও জাতীয় সমবায় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের চাষ উপযোগী জমি সীমিত। গবেষণার মাধ্যমে আমরা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। সবকিছু উৎপাদনে কিন্তু আমরা অগ্রগামী। সেগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হলে সমবায়ের ভিত্তিতে যত আমরা করতে পারব অপচয় কম হবে, বাজারজাত হবে পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত শিল্প আমরা করে তুলতে পারব।’
সমবায় ব্যবস্থাটাকে যথাযথ কাজে লাগাতে পারলে চাষ উপযোগী কোন জমি অনাবাদি থাকবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। দেশের উন্নয়নে জনশক্তিকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মাটি উর্বর, জমি উর্বর, মানুষগুলো যথেষ্ট কাজের। তাদের একটু কাজে লাগাতে পারলেই আমাদের কোন কষ্ট হয় না।’
বাংলাদেশে যে এক শ’টা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে সেখানেও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত বা কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি সমবায়ের উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রহণ করা বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সমবায় সমিতিগুলো হচ্ছে তারা যে সব পণ্য উৎপাদন করছে, সেগুলোকে আমরা শিল্প-কলকারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারি বা সেটাকে প্রক্রিয়াজাত করতে পারি তার সঙ্গে যদি যোগসূত্র করে দেই, তাহলে কিন্তু আমাদের কোন গ্রামে আর অবহেলিত থাকবে না।’
কৃষি জমিতে অধিক ফসল উৎপাদনের আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের যেন আর কখনও কোনদিন কারও কাছে খাদ্যের জন্য হাত পাততে না হয়। আমরা এভাবেই কাজ করে যাব যেন আমাদের দেশ যেন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে।
‘ইতোমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। এটা আমাদের ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতার যে নির্দেশনা, সেটা মেনে আমরা সমবায়টাকেই বেশি গুরুত্ব দেব। অধিক সংখ্যক মানুষ এখানে লাভবান হতে পারি।’
বিদ্যমান সমবায় আইনকে যুগোপযোগী করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সমবায় ব্যাংক যেটা আছে সেটা অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়েছিল। এ ব্যাংক আইনও সময়োপযোগী করে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যেন চালু করা যায় তার ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘এক্ষেত্রে আমি মনে করি, সমবায় কাজে যারা দক্ষ তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং সৎভাবে তারা যেন কাজ করে সে বিষয়টা আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।’
বর্তমান যুগে ডিজিটাল বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একেবারে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলে সমবায়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সমবায় বিভাগের উন্নয়নে নেয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম, সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি খন্দকার মোশাররফ হোসেন, প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামাল উদ্দিন তালুকদার, সমবায় অধিদফতরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলামসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।