মান সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ

19

‘তরুণ শিক্ষকরাই পেশার ভবিষ্যৎ’ এই প্রতিপাদ্যে গত শনিবার পালিত হয়েছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। অন্যান্য দেশে এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য যতটা যথার্থ, বাংলাদেশের বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। বিভিন্ন দেশে শিক্ষকতা পেশার প্রতি তরুণদের আগ্রহ থাকলেও বাংলাদেশের তরুণরা বেশির ভাগই বাধ্য হয়ে এই পেশায় আসেন। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, সর্বত্র একই চিত্র। অনেক দেশেই প্রথম মর্যাদাবান পেশা হচ্ছে শিক্ষকতা। আর্থিকভাবেও শিক্ষকরা বেশি বেতন পান। ফলে তরুণ, মেধাবীদের প্রথম পছন্দের চাকরি শিক্ষকতা। ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা শেষ করা সবচেয়ে মেধাবীরা আসেন শিক্ষকতায়। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও মালয়েশিয়ায় শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা অনেক ওপরে। অনেক দেশেই শিক্ষকদের জন্য রয়েছে আলাদা বেতন কাঠামো। বাংলাদেশে তা নেই। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ আছে। বাংলাদেশের বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির ভূমিকা সব সময় প্রশ্নবিদ্ধ থেকেছে। বাংলাদেশে প্রাথমিকের শিক্ষকরা মর্যাদার দিক দিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে। যদিও সরকার প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দিয়েছে। তবে তাঁদের বেতনের দিক থেকে এখনো দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়নি। অন্যদিকে মেধাবীদের অনেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়ে বা পিএইচডি করতে যাওয়ার পর আর দেশে ফিরে আসেন না। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের শিক্ষার মান উন্নত হবে না। আর সে কারণেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে।
শিক্ষকতা কোনো চাকরি নয়, ব্রত। সেই ব্রত সাধনায় কাউকে উদ্বুদ্ধ করতে হলে তার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। জীবনমানের উন্নয়নে আলাদা বেতন কাঠামো প্রণয়নের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে শিক্ষকদের আবাসনব্যবস্থারও উন্নতি করা দরকার। তা নাহলে সেখানে মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে টিকিয়ে রাখা যাবে না। শিক্ষার মান উন্নত করার স্বার্থে বিষয়গুলো বিবেচনা করা দরকার।