সভ্য দুনিয়ায় খুচরা পর্যায়ের বাজারেও কিছু নিয়ম-কানুন থাকে। আমাদের তা নেই। বাংলাদেশে যেকোনো একটা ছুতায় এক শ্রেণির ব্যবসায়ী প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে এটাই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে উৎসব সামনে রেখে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা। সামান্য বৃষ্টি হলে বাজারে তার প্রভাব পড়ে। খরায় জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। পবিত্র রমজান মাসে বাড়ে ছোলা, চিনিসহ নানা নিত্যপণ্যের দাম। ঈদুল আজহা সামনে রেখে এবার বাজারে বেড়েছে সব ধরনের মসলার দাম। রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার তথ্য বিশ্লেষণ বলেছে গত এক মাসের ব্যবধানে ২০.৬৯ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে আদার। একইভাবে রসুনের দামও বাড়তি। দেশি রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে। টিসিবি বলছে, গত এক মাসে রসুনের দাম গড়ে ২৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। টিসিবির হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দামও বেড়েছে ২৫ শতাংশ। ঈদ উপলক্ষে যেসব মসলার চাহিদা বাড়ে তার মধ্যে দারচিনির দাম এবার বেশ চড়া। গত বছর দারচিনি বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। এবার তা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৪০ থেকে ৫৬০ টাকায়। তবে স্থিতিশীল রয়েছে জিরার দাম। ভারত থেকে আমদানি করা জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে। লবঙ্গ এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, তেজপাতা ১৬০ থেকে ২২০ টাকা, কিশমিশ বাজারভেদে ৪২০ থেকে ৫০০ টাকা, কালো এলাচ এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে খুচরা বাজারের দাম। এসব মসলা বিক্রি হচ্ছে আরো বেশি দামে। দেখার কেউ নেই।
এসব মসলা সারা বছর এত বেশি চলে না, ঈদের পরই সব মসলার চাহিদা কমে যাবে। কাজেই এই সময়ে বেশি দামে বিক্রি করে বাড়তি মুনাফা করা হয়। এ সবই হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা না থাকার কারণে। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেত সাধারণ মানুষ।