সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন : রাতারগুলের রিপন হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসির দাবি

2

গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের রাতারগুলের গোলাম হাদী রিপন হত্যা মামলার আসামিদের দ্রæততম সময়ের মধ্যে ফাঁসি দাবি করেছেন মামলার বাদী ও নিহতের ভাই সৈয়দ গোলাম বাছিত রিমন। সেই সাথে মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত যুবদল কর্মী মো. শাহজাহান সিদ্দিকীকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে নেতৃবৃন্দের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন তিনি। রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। লিখিত বক্তব্যে সৈয়দ গোলাম বাছিত রিমন বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নই। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই আমার জীবন অতিবাহিত করছি। ২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আমাদের নিজ গ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আমার ভাই সৈয়দ গোলাম হাদী রিপনকে একই গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুন নুরের পুত্র সম্প্রতি বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের আহŸায়ক মো. শাহজাহান সিদ্দিকী গংরা খুন করে। এ হত্যা মামলার বাদী হওয়ায় এবং ভাই হত্যার বিচার চাওয়ার কারণে আজ আমার এবং মামলার সাক্ষীদের উপর নেমে এসেছে একের পর এক মিথ্যা মামলার খড়ক আর অব্যাহত হুমকি ধামকি। বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মো. শাহজাহান সিদ্দিকী কর্তৃক মিথ্যা মামলা ও হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে গোলাম বাছিত রিমন আরো বলেন, বদর আমিনের উপস্থিতিতে আমাদের জায়গা জমির জরিপ চলাকালে ২০১১ সালে শাহজাহান সিদ্দিকী ও তার সহযোগীরা আমাদেরকে ঘেরাও করে আমার ভাইকে খুন করে। তাদের সন্ত্রাসী হামলায় আমি নিজেও গুরুতর আহত হই। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা বর্তমান অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতে বিচারাধীন। রিমন বলেন, মামলার প্রধান আসামি শাহজাহান সিদ্দিকী আমাকে এবং সাক্ষীদেরকে অসংখ্য মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে সে আরো বেশি মামলাবাজি শুরু করে দিয়েছে। সম্প্রতি এসএমপির কোতয়ালী থানা ও এয়ারপোর্ট থানার দুটি মামলায় সে আমাকে আসামি করেছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এসব বিষয়ের প্রমাণাদিসহ আমরা সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বারস্থ হলে তারা শাহাজহান সিদ্দিকীর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পান। যে কারনে গত ২৯ আগস্ট সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মোমিন ও সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শাহজাহান সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। এমনকি মামলার প্রথম সাক্ষী হারিছ মিয়ার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে সিলেটের বিভিন্ন থানায় কাল্পনিক ও মিথ্যা অভিযোগে পরপর ৪টি মামলা দাখিল করেছে। মামলার আরেক সাক্ষী আবুলের ওপরও দুটি মামলা দায়ের করে তারা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সাক্ষীগণকে মামলা হামলা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিরত রাখা। এভাবে শাহজাহান গংরা হত্যা মামলাটি দুর্বল করতে নানা চক্রান্ত চালিয়ে আসছে। এমনকি ২০১৩ সালে দায়রা জজ ৩য় আদালতে মামলার চার্জ গঠন করা হলে তখনকার আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বাবুলের মাধ্যমে হাইকোর্টে মামলা স্টে’র একটি কাগজ দাখিল করলে আদালত আমাকে হাইকোর্ট থেকে মামলাটির রায় নিয়ে আসার জন্য বলেন। অবশেষে হাইকোর্ট থেকে আমার পক্ষে রায় হয়। পরে আসামি শাহজাহান সুপ্রিমকোর্ট থেকে পুনরায় মামলা স্টে করে রাখে। পরবর্তীতে আমি সুপ্রিমকোর্টে এপিয়ার হলে মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট আমার পক্ষে রায় দেন। এভাবে এই মামলাটি প্রায় ১০ বার সে স্টে করে রাখায়। সব জল্পনা শেষে সিলেটের দায়রা জজ ৩য় আদালত গত ২৫ জুলাই বাদীর সাক্ষী গ্রহণ করেন। বর্তমানে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে। আমি আশাবাদী আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেবেন আদালত। সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ গোলাম বাছিত রিমন তার ওপর দায়েরকৃত দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একইসাথে তার ভাই সৈয়দ গোলাম হাদী রিপনের হত্যাকারীদের দ্রæত সময়ে ফাঁসি দাবি ও শাহজাহান সিদ্দিকীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে নেতৃবৃন্দের প্রতি আহŸান জানান।