শাবি থেকে সংবাদদাতা :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি)’র একমাত্র শরীরচর্চা কেন্দ্র (ব্যায়ামাগার) কোন রকমে চলছে। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষকসহ দীর্ঘদিন ধরে নেই আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা দফতর কার্যালয়ের নিচ তলায় ছোট দুটি কক্ষে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা ফিটনেস ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। কিন্তু সেখানে শরীর চর্চার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। স্থান সংকুলান এবং প্রয়োজনীয় বাজেটের অভাবে নতুন আধুনিক যন্ত্রপাতি তেমন ক্রয় করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের অযত্ম, অবহেলায় এভাবেই চলছে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর একমাত্র ব্যায়ামাগার। ফলে বাধ্য হয়েই শরীর চর্চার জন্য অন্যত্র যেতে হয় শিক্ষার্থীদের।
অপরদিকে শরীর চর্চার জন্য ছাত্রদের সকাল ৬ টা থেকে পৌনে ৯টা এবং বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সময় নির্ধারিত রয়েছে। আর ছাত্রীদের জন্য ব্যায়ামাগার খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ফলে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্লাস থাকায় শিক্ষার্থীদের সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার ছুটির দিনগুলোতে জিমনেসিয়াম থাকে বন্ধ। ফলে শিক্ষার্থীরা পড়েন নানা অসুবিধায়। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নেই কোনো শরীর চর্চার প্রশিক্ষক। যদিও শারীরিক শিক্ষা দফতর থেকে জানোনো হয়েছে পদটি শূন্য আছে মাত্র ১ বছর। এ কারণেও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট দুটি কক্ষে শরীর চর্চার জন্য সামান্য কয়েকটি উপকরণ রয়েছে। যেখানে ১০ জনের বেশি শিক্ষার্থী একত্রে শরীর চর্চা করতে পারেন না। একজনের পর আরেকজনকে অপেক্ষা করতে হয়। সাইক্লিং মেশিন, ট্রেডমিল, ক্রস ট্রেইনার, স্মিথ মেশিন, লেগ প্রেস, চাকতি, থাই এক্স, হাইট মেশিন, ওয়েট মেশিন, বেঞ্চ প্রেস, রফ চিনাফস, লেগ এক্সটেনশন, বারবেল ওয়েট যন্ত্রসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। এছাড়া ডাম্বেল ও বারবেল ওয়েট যন্ত্র দুটি দিনে দিনে ব্যবহারের অনুপযোগী পড়ছে। বার্বেল প্রেসার কার্লসহ কয়েকটি উপকরণ ভাঙা, কাপড় পরিবর্তন করার ব্যবস্থা নেই।
বাংলা ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ইউসুফ হোসেন টিটু অভিযোগ করেন, ব্যায়ামের সময় প্রশিক্ষক না থাকায় তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। বারবার ইউটিউব ও মোবাইল অ্যাপস দেখতে হয়। আবার অধিকাংশ সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্লাস করতে হয়। এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আসলে মাত্র ৩০-৪০ মিনিট সময় পাওয়া যায়। এত অল্প সময় দিয়ে হয় না।
সার্বিক বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা দফতরের পরিচালক চৌধুরী সউদ বিন আম্বিয়া বলেন, আরও আগে থেকেই অর্থ ও স্থান সংকুলানসহ নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। তবে বর্তমান উপাচার্য আসার পর ওনার সহযোগিতায় এসব সমস্যা ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। নতুন আধুনিক ব্যায়ামাগার নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। ৯৮৭ কোটি টাকার প্রকল্পে ব্যায়ামাগার অন্তুর্ভুক্তির জন্য তাকে জানিয়েছি। প্রতি বছরই নতুন কিছু উপকরণ যোগ করছি। ইতোমধ্যে স্পিনার বাইকসহ কয়েকটি উপকরণ কেনা হয়েছে। কিছু মেরামত করছি। স্থান সংকুলানের কারণে নতুন আরও কয়েকটি উপকরণ অন্তর্ভুক্ত করা যাচ্ছে না।
প্রশিক্ষক না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, একজন ছিলেন, গতবছর তিনি পিএইচডি করতে দেশের বাইরে চলে গেছেন। ইতোমধ্যে নতুন দুই জনকে নিয়োগ দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। আশা করি শিগগিরই প্রশিক্ষক নিয়োগ হবে। এছাড়া পরবর্তীতে ব্যায়ামাগার খোলা রাখার সময় বাড়ানো হবে।