বর্ষায় প্রতিবছর উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। পানিবন্দি মানুষ দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, দেশের ১৩ নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৩৬ ঘণ্টা ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চল, হাওরাঞ্চল ও বৃহত্তর চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বান্দরবানে সড়ক ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ধসে পড়ছে পাহাড়। সুনামগঞ্জের ছয় উপজেলা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এবারের বন্যা বড় আকারে দেখা দিতে পারে। বন্যার সঙ্গে সঙ্গে আসে পানিবাহিত রোগবালাই। দেখা দেয় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। এখন প্রধান কাজ বন্যাকবলিত মানুষের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া। খাদ্য ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করাও জরুরি। বন্যার পানির কারণে অনেক জায়গায় রাস্তা ডুবে যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, সেগুলো মেরামতের ব্যবস্থা নিতে হবে। উপদ্রুত মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। উপদ্রুত মানুষের কাছে যাতে দ্রুততম সময়ে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব করবে না।