স্পোর্টস ডেস্ক :
বিফলে গেল পাকিস্তানের টেলএন্ডার ব্যাটসম্যান হাসান আলী ও ওয়াহাব রিয়াজের প্রচেষ্টা। আশা জাগিয়েও হারল পাকিস্তান। বিশ্বকাপে বুধবার সরফরাজ আহমেদদের ৪১ রানে হারাল অস্ট্রেলিয়া। চার ম্যাচ খেলে অস্ট্রেলিয়ার এটি তৃতীয় জয়। পয়েন্ট টেবিলে তারা এখন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে তিন পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আছে অষ্টম অবস্থানে।
এদিন টন্টনে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ৩০৮ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪৫.৪ ওভারে ২৬৬ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন ওপেনার ইমাম-উল-হক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন মোহাম্মদ হাফিজ।
নয় নম্বর পজিশনে নেমে ৩৯ বলে ৪৫ রান করেন ওয়াহাব রিয়াজ। আট নম্বর পজিশনে নেমে ১৫ বলে ৩২ রান করেন হাসান আলী। ৪০ রান করেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে প্যাট কামিন্স ৩টি, মিচেল স্টার্ক ২টি, কেন রিচার্ডসন ২টি, নাথান কুল্টার-নাইল ১টি ও অ্যারোন ফিঞ্চ ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
দলীয় ১৬০ রানে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে অস্ট্রেলিয়ার। তখন হয়তো কেউ ভাবেনি ওই অবস্থা থেকে পাকিস্তান এতো রান করতে পারবে। কিন্তু এরপর হাসান আলী নেমে ঝলক দেখান। ১৫ বলে তিনটি চার ও তিনটি ছক্কার সাহায্যে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলীয় ২০০ রানে তিনি ফিরে যান সাজঘরে। এরপর অধিনায়কের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ওয়াহাব রিয়াজ। পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যানের মতো ব্যাটিং করতে থাকেন তিনি।
এই দুজনে মিলে পাকিস্তানকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। দলকে অনেক দূর নিয়ে যান তারা। কিন্তু ৪৫তম ওভারে পাকিস্তানের সব স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করে দেন মিচলে স্টার্ক। ওভারের দ্বিতীয় বলে ওয়াহাব রিয়াজকে ফিরিয়ে দেন তিনি। ওয়াহাবের ব্যাটে বল হালকা স্পর্শ করে চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। কিন্তু আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। তবে রিভিউ নিয়ে সফল হয় অস্ট্রেলিয়া। এখানেই ম্যাচ পুরোপুরি অস্ট্রেলিয়ার হাতে চলে যায়। এই ওভারেই চতুর্থ বলে আমিরকে বোল্ড করেন স্টার্ক। আর পরের ওভারে রান আউট হন সরফরাজ।
এর আগে অস্ট্রেলিয়া টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা যেভাবে করেছিল শেষটা সেভাবে করতে পারেনি। ৪০ ওভার শেষে তাদের স্কোর ছিল চার উইকেটে ২৫৬ রান। সেখান থেকে ৪৯ ওভারে ৩০৭ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। অর্থাৎ, শেষ ৯ ওভারে তারা ৬ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ৫১ রান। এদিকে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং করেছেন পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমির। ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়ে পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে দুইটি ওভারে তিনি কোনো রান দেননি। এর আগে তার সেরা বোলিং ছিল ৪/২৮।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০৭ রান করেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮২ রান করেন আরেক ওপেনার অ্যারোন ফিঞ্চ। রান যা করার এই দুইজনই করেছেন। বাকিরা বলার মতো স্কোর করতে পারেননি। পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ আমির ৫টি, শাহীন শাহ আফ্রিদি ২টি, হাসান আলী ১টি, ওয়াহাব রিয়াজ ১ ও মোহাম্মদ হাফিজ ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন। ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন সেঞ্চুরিয়ান ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৪১ রানে জয়ী অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়া ইনিংস: ৩০৭ (৫০ ওভার)
(অ্যারোন ফিঞ্চ ৮২, ডেভিড ওয়ার্নার ১০৭, স্টিভেন স্মিথ ১০, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ২০, শন মার্শ ২৩, উসমান খাজা ১৮, আলেক্স ক্যারি ২০, নাথান কুল্টার নাইল ২, প্যাট কামিন্স ২, মিচেল স্টার্ক ৩, কেন রিচার্ডসন ১*; মোহাম্মদ আমির ৫/৩০, শাহীন শাহ আফ্রিদি ২/৭০, হাসান আলী ১/৬৭, ওয়াহাব রিয়াজ ১/৪৪, মোহাম্মদ হাফিজ ১/৬০, শোয়েব মালিক ০/২৬)।
পাকিস্তান ইনিংস: ২৬৬ (৪৫.৪ ওভার)
(ইমাম-উল-হক ৫৩, ফখর জামান ০, বাবর আজম ৩০, মোহাম্মদ হাফিজ ৪৬, সরফরাজ আহমেদ ৪০, শোয়েব মালিক ০, আসিফ আলী ৫, হাসান আলী ৩২, ওয়াহাব রিয়াজ ৪৫, মোহাম্মদ আমির ০, শাহীন শাহ আফ্রিদি ১*; প্যাট কামিন্স ৩/৩৩, মিচেল স্টার্ক ২/৪৩, কেন রিচার্ডসন ২/৬২, নাথান কুল্টার-নাইল ১/৫৩, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ০/৫৮, অ্যারোন ফিঞ্চ ১/১৩)।
ম্যাচ সেরা: ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)।