আতিকুর রহমান নগরী
প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তি সম্পদের শর্ত অনুযায়ী নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তাঁর ওপর যাকাত আদায় করা ফরজ। যদি কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু ও পাগলের নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাদের পক্ষ থেকে অভিভাবকরা যাকাত আদায় করবেন।
যে বা যারা যাকাত আদায়ে কার্পণ্য ও অলসতা করে যাকাত আদায় করবে না, এ জন্য তাকে ফাসেক কবিরা গোনাহে লিপ্ত বলে গণ্য করা হবে। আর যে ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হওয়া সত্ত্বেও জেনে বুঝে ইচ্ছাকৃতভাবে তা দিতে অস্বীকার করবে, সে ঈমানহারা হয়ে যাবে।
সম্পদ পুঞ্জীভূত করে রেখে যাকাত আদায় না করার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। কুরআন এবং হাদিসে এ ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে সতর্ক করা হয়েছে। যা তুলে ধরা হলো-
আল্লাহ তাআলা জাকাত অস্বীকারকারীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন-
‘আর যারা সোনা-রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ প্রদান করুন। সে দিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের কপাল, পার্শ্বদেশ এবং পিঠ আগুনে পোড়ানো হবে এবং (সেদিন বলা হবে), এগুলো (সেই সম্পদ) যা তোমরা নিজেদের জন্যে জমা রেখেছিলে, সুতরাং এখন এ গুলো (সম্পদ) জমা করে রাখার স্বাদ গ্রহণ কর। (সুরা তাওবা : আয়াত ৩৪-৩৫)
যারা জাকাত আদায় করবে না তাদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠিন ভাষায় সতর্ক করেছেন। হাদিসে এসেছে- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মালের (সম্পদ) মালিক জাকাত আদায় না করলে সে মালকে (সম্পদ) জাহান্নামের আগুনে গরম করে তক্তা বানানো হবে। তারপর তা দিয়ে তার (যাকাত অনাদায়কারীর শরীরের) উভয় পাশ ও কপালে দাগ দিতে থাকবে। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মাঝে ফয়সালা করা পর্যন্ত (এ শাস্তি ভোগ করবে) ঐ দিন। যে দিনটি হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। তারপর সে জান্নাতি হলে জান্নাতে পথে আর জাহান্নামি হলে জাহান্নামের পথ দেখবে। (বুখারি, মুসলিম)
পরিশেষে জাকাত আদায়ে সম্পদ কমে না বরং বৃদ্ধি পায়। কুরআন-হাদিসেই তার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। সুতরাং জাকাত আদায়ে অলসতা ও জাকাতের বিধানকে অস্বীকার না করে জাকাত আদায়ে এগিয়ে আসুন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়ে তুলুন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যাকাত আদায় করে তাঁর বিধান পালনে সচেষ্ট থাকার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ঘোষিত যাকাত অনাদায়ের ভয়াবহ পরিণাম থেকে হিফাজত করুন। আমিন।