বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগী হোন

18

‘এবারও এসএসসি পাসের পর ঝরে যাচ্ছে সোয়া দুই লাখ শিক্ষার্থী’ দেশের আট সাধারণ শিক্ষা বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন জমা দেওয়ার তারিখ গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। সেই ধাপে আবেদন করেছে মোট ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ জন শিক্ষার্থী। ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও ভর্তি আবেদন চলছে। সেখানে গত শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত আবেদন করেছে ৪৭ হাজার ৮৭৯ জন। আর বেসরকারি পলিটেকনিক মিলিয়ে কারিগরিতে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।
একাদশে ভর্তির দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপেও আরো কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করবে। ধারণা করা হচ্ছে, সব মিলিয়ে সোয়া ১৫ লাখ এসএসসি ও সমমানের উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ভর্তির আওতায় আসবে। এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ জন। সেই হিসাবে প্রায় সোয়া দুই লাখ শিক্ষার্থী পড়ালেখা থেকে ঝরে যাচ্ছে।
এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া থেকে ঝরে যাওয়ার কারণ কী? ধারণা করা যেতে পারে, এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের একটি অংশ দারিদ্র্যের কারণে সাধারণ লেখাপড়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে চায় না। অনেক পরিবারই এসএসসি পাসের পর তাদের ছেলেসন্তানদের বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। আবার অনেক পরিবারে মেয়েদের এসএসসি পাসের পর বিয়ে হয়ে যায়। আবার এসএসসি উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকেই যে সাধারণ শিক্ষায় ভর্তি হতে হবে, এর কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা আশানুরূপ ফল করতে পারেনি তাদের বৃত্তিমূলক বা ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি করার ব্যাপারে উৎসাহিত করা যেতে পারে। এখন দেশে অনেক বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থানের সুযোগ যদি কেউ করে নিতে পারে, সেটা হবে একটি ভালো দিক। বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ আরো প্রসারিত করার ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। যারা একাদশে ভর্তির আওতায় এলো না, দেশের ভবিষ্যৎ কল্যাণের স্বার্থে তাদের চিহ্নিত করে বৃত্তিমূলক শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে সাধারণ শিক্ষার সুযোগ কমিয়ে কারিগরিতে শিক্ষার্থী বাড়ানোর ব্যাপারেও সরকার পদক্ষেপ নিতে পারে। তাতে হয়তো শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমবে। আমরা আশা করব, আয় ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারে সরকার উদ্যোগী হবে।