ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
বালাগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা শাহাব উদ্দিন খুনের ঘটনাটি ডাকাতি নাকি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নির্মম ঘটনার শিকার হয়ে শাহাব উদ্দিনের অকালে চলে যাওয়ায় তার পরিবার ও স্বজনরা শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন। শোকের ছাদরে যেন ঢাকা পড়েছে পুরো চাম্পারকান্দি গ্রাম। গ্রামের কয়েক জনের সাথে কথা হলে তারা জানান, শাহাব উদ্দিনদের মধ্যবিত্ত পরিবার। ডাকাতরা লুট করে নেয়ার মত তাদের ঘরে নগদ টাকা কিংবা সেরকম মূল্যবান কোনো জিনিস ছিলনা। তাই ঘটনাটি তারা ডাকাতি বলে মেনে নিতে পারছননা। তারা এটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছেন। এদিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে রবিবার রাত নয়টায় জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক করবস্থানে লাশের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। জানাযায় শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। এতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনসহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
শাহাব উদ্দিনের রাজনৈতিক সহকর্মী ও বন্ধুরা জানান, সে খুব বিনয়ী ও ন¤্র-ভদ্র স্বভারে ছিল, সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলত, সুন্দর ব্যবহারের জন্য সবাই তাকে পছন্দ করতেন এবং এলাকার সবার সাথে তার সু সম্পর্ক ছিল। আমাদের জানা মতে, তার কোনো শত্র“ ছিল না, কিন্তু কেনো তাকে নির্মম ভাবে খুন করা হল- আমরা তা বুঝতে পারছি না, সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচনের দাবি জানাচ্ছি। শাহাব উদ্দিনের চাচা ওহাব আলী বলেন, এলাকার কারো সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। জমিজমা কিংবা টাকা পয়সা নিয়েও কোনো ঝামেলা হয়নি। তবে এটি ডাকাতির ঘটনা নয় কারণ ডাকাতি হওয়ার মত আমাদের ঘরে গচ্ছিত সম্পদও নেই। আমাদের ধারণা হয়ত কারো সাথে আমার ভাতিজার ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্ধের জের ধরে তাকে এভাবে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হতে পারে। তিনি বলেন, পরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে ডাকাতির ঘটনা সাজাতে সন্ত্রাসীরা ঘর থেকে কিছু জিনিস লুট করেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জোরালো তদন্ত করা হত্যার সঠিক কারণ বেরিয়ে আসবে বলে আমি আশাবাদি। বালাগঞ্জ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান বলেন, নিহত শাহাব উদ্দিনের পিতা সুরমান আলী বাদি হয়ে (গতকাল সোমবার) অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত চলছে শিগ্রই এর রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদি।
প্রসঙ্গত, উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের চাম্পারকান্দি গ্রামের সুরমান আলীর ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাব উদ্দিনকে (২৬) শনিবার রাতে নিজ বাড়িতে ডাকাত ছব্দবেশি একদল দুবৃত্ত গুলি করে ও কুপিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রাতে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। দুবৃত্তদের হামলা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহতের বাবা সুরমান আলী (৬০), মা লামেলা বেগম (৫৫), বোন আলিফা বেগম (১৭), বড় ভাই মুছলেখ উদ্দিন (৩০), ছোট ভাই জসিম উদ্দিন (২০), চাচা ওয়াহাব আলী (৫০), ছুরাব আলী (৫৫) এবং চাচী রাবিয়া বেগম (৩৫) গুরুতর আহত হন।