কাজিরবাজার ডেস্ক :
সিরিয়া-ইরাকে জঙ্গিদের সর্বশেষ আইএস ঘাঁটি পতনের পর বাংলাদেশের অন্তত ২০ জঙ্গি গোপনে দেশে ফিরে অসতে চাইছে। কিন্তু দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি এসব জঙ্গিকে ফিরতে দেয়া হবে না। এই আশঙ্কা থেকে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের জঙ্গিদের ঢোকা ঠেকাতে বিমানবন্দর-গুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবু আল বাঙ্গালি নামে নিজেদের অন লাইন গ্রুপে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ কাফেরদের ওপর হামলা চালানোর পোস্ট দেয়ার পর ঢাকার চার্চ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কূটনৈতিক পল্লীসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও স্পর্শকাতর স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সিরিয়ায় আইএসের (ইসলামিক স্টেট) সর্বশেষ ঘাঁটির পতন হয়। সেখানে মার্কিন সমর্থিত বাহিনী সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এসডিএফ) হাতে আটক ৮শ’ বিদেশী জঙ্গী বন্দী হয়েছে, যারা যে দেশের তাদের সে দেশে নিয়ে বিচারের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এতেই আইএস জঙ্গি যারা বাংলাদেশ থেকে ইরাক ও সিরিয়ায় গেছে তারা ফিরে আসতে পারে কিংবা তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হতে পারে এমন আশঙ্কা করছে গোয়েন্দা সংস্থা।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের হিসাব মতে, আন্তর্জাতিক জঙ্গীগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হতে দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীর সংখ্যা ৪০। তাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন মারা গেছে যুদ্ধের ময়দানে। বাকি ২০ জন থাকতে পারে যারা আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। তাদের কে কোথায়, সে সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত শনিবার সিরিয়ার বাঘুজে আইএসের সর্বশেষ ঘাঁটির পতনের পর সেখানে বাংলাদেশের চার-পাঁচজন থাকতে পারে বলে ধারণা করছে গোয়েন্দা সংস্থা। এর মধ্যে আইএসে যোগ দিতে দেশ ছেড়েছিল বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী দুই ভাই ইব্রাহিম হাসান খান ও জুনায়েদ হাসান খান, ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক রোকনউদ্দিন, তার স্ত্রী নাইমা আক্তার, মেয়ে রমিতা রোকন ও রেজওয়ানা রোকন ও জামাতা সাদ কায়েসের। নাম রয়েছে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া দন্ত চিকিৎসক আরাফাত রহমান তুষারের।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, সিরিয়ায় আইএসের পতনের ঘোষণা এসেছে ঠিকই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিও এখনও রয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে আইএসের কর্মী-সমর্থকেরা আবার ফিরে আসার হুমকি দিচ্ছেন। এর মধ্যে আবু আল বাঙ্গালিই নিজেদের অন লাইন গ্রুপে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ কাফেরদের ওপর হামলা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি আইএস জঙ্গী কিনা সেই বিষয়েও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। আইএস জঙ্গীদের মুখপাত্র দাবিকের দাবি অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে একটি সম্মেলনে যোগদানের অজুহাতে তিনি সিরিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করেন আবু আল বাঙ্গালি। জাল কাগজপত্র তৈরি করে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে চলে যান বলে তথ্য রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার। সিরিয়ায় পৌঁছার পর আবু জিন্দাল অন্যান্য বাঙালী জিহাদীদের সঙ্গে যোগ দেন।