শাহ আলম শামীম, কুলাউড়া থেকে :
জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৯ মার্চ রবিবার। শেষ মুহূর্তে এসে দুই নারী প্রার্থী নির্ঘুম প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জমে উঠেছে তাদের ভোট লড়াই।
৬টি ইউনিয়ন নিয়ে জুড়ী উপজেলা গঠিত। উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮৯ হাজার ৪০১। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৫ হাজার ৫১৩ এবং মহিলা ভোটার ৪৩ হাজার ৮৮৮।
ভোটের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ভোটারদের মন জয় করতে দুই নারী প্রার্থী ততই ব্যস্ত সময় পার করছেন। তফসিল ঘোষণার পর থেকে দুই নারী প্রার্থী মিছিল, মিটিং করে এবং ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন।
প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ মুমিত আসুক মিয়ার স্ত্রী গুলশানারা চৌধুরী মিলি, বিএনপির হুসনে আরা বেগম। মিলি উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং হুসনে আরা উপজেলা বিএনপির নেত্রী।
গুলশান আরা মিলি ঘোড়া প্রতীক ও হুসনে আরা মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। এ দুই নারী নেত্রীকে নিয়ে মাঠে, ময়দানে চায়ের দোকানসহ সর্বত্র চলছে আলোচনার ঝড়। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন।
দু জনের রয়েছে পারিবারিক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিচয়। গুলশান আরা মিলি জুড়ী উপজেলা পরিষদের দুবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে স্বর্ণপদক লাভকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ এম এ মুমীত আসুকের স্ত্রী। জুড়ীবাসীর সেবায় নিজেকে উৎসর্গকারী আসুককে দ্বিতীয়বার উপজেলাবাসী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে তিনি ইন্তেকাল করায় তার অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করার লক্ষে গুলশান আরা মিলি জুড়ীবাসীর সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। মিলির ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বামী হারানোর চাপা কান্না আর কষ্টের মাতম বুকে ধরে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তার আবেগপ্রবণ বক্তৃতায় স্বামীর কথা মনে করে নিজে কাঁদছেন, হাজারো মানুষকেও কাঁদাচ্ছেন। তার প্রতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিত, সমাজকল্যাণমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলী, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজবাহ উদ্দিন সিরাজসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার অনেক আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থন রয়েছে। এদিকে হুসনে আরা বেগম জায়ফরনগর ইউনিয়নের সাবেক ৩ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মক্তদীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও অসংখ্য স্কুল-মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট সমাজসেবক, দানবীর আবদুল মক্তদীরের সুযোগ্য কন্যা। তিনি মক্তদীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ অসংখ্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তার প্রতি জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান, সাধারণ সম্পাদক খালেদা রব্বানী, স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসহ ২০ দলীয় জোটের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। মোটরসাইকেল প্রতীকের এ প্রার্থী গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় ২৭ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। উপজেলার সর্বত্র তার রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক। এ কারণে তিনি এই উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারেন বলে তার কর্মী-সমর্থকরা আশাবাদী।