সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিষয়ে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। বেশির ভাগ জরিপই উন্নয়ন কার্যক্রমসংক্রান্ত। বাজার পরিস্থিতি জরিপও করা হয়। উন্নয়ন কার্যক্রমবিষয়ক জরিপ বা সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা করে থাকে। বাজার পরিস্থিতিবিষয়ক জরিপ বা নির্দিষ্ট পণ্যের চাহিদা নিরূপণবিষয়ক জরিপ কিছু বেসরকারি বাণিজ্যিক জরিপ প্রতিষ্ঠান করে। এসব জরিপের ফল অবশ্যই কাজে লাগে। সরকারের নীতিমালা প্রণয়নের জন্য জরিপ বা সমীক্ষা প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। আবার বিভিন্ন বিষয়ে জরিপের তথ্য নিয়ে প্রশ্নও দেখা দেয়।
জরিপের ফল প্রতিষ্ঠানভেদে ভিন্ন হয়; ক্ষেত্র বিশেষে বিভ্রান্তিও দেখা দেয়। জরিপের ফল নিয়ে মাঝেমধ্যে বিতর্কও হয়। বেসরকারি বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তথ্যে ও সুপারিশে জনমত বা অভীষ্ট জনগোষ্ঠীর মতের যথাপ্রতিফলন ঘটে না, এ অভিযোগও ওঠে। এ অভিযোগও রয়েছে, এমআরবি বাংলাদেশ একটি বহুজাতিক কোম্পানি, যার বিরুদ্ধে প্রতিনিধিত্বহীন জরিপ পরিচালনা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে মূলত বাজার সমীক্ষণ করে তারা; মুদ্রিত সংবাদপত্রের পাঠকসংখ্যা জরিপও করে। কিন্তু এ কাজ যে তারা করে, তা সরকারকে জানায় না।
তাদের গণমাধ্যমসংক্রান্ত জরিপের তথ্য সরকারি তথ্য এবং অন্যান্য বেসরকারি জরিপের তথ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আগে তারা অন্য নামে কাজ করত। তখন টেলিভিশন রেটিং পয়েন্টস (টিআরপি) নিয়ে তারা যে তথ্য দিত তাতে ভুল থাকত—২০১৬ সালে এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের টিআরপি প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। এরপর তারা নাম বদল করে। সরকারি নথিতে প্রচারসংখ্যার বিচারে কালের কণ্ঠ তৃতীয় স্থানে থাকলেও কান্তারের তথ্য অনুযায়ী অবস্থানটি সপ্তম। অন্যান্য সংবাদপত্রের বিষয়েও সরকার ও কান্তারের তথ্যে উল্লেখযোগ্য অমিল রয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানের জরিপের তথ্যের সঙ্গেও তাদের তথ্যের বিস্তর গরমিল রয়েছে। তারা জরিপের তথ্য সংবাদপত্রসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে বিক্রি করে থাকে। ক্রেতাদের অভিযোগ, জরিপের তথ্য ক্যাটাগরি অনুযায়ী সবিস্তারে দেওয়া হয় না।
পাশাপাশি গণমাধ্যমবিষয়ক জরিপ সম্পর্কে সরকারকে জানানো উচিত। বাণিজ্যের নামে অসততা বা অস্পষ্টতা কাম্য নয়। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ক নীতি স্পষ্ট করা।