গোয়াইনঘাট উপজেলার ৬ নম্বর ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি হাওর ভূমিখেকোদের হাত থেকে রক্ষা না হলে আত্মহুতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে নির্যাতিত দুই শতাধিক পরিবার। বুধবার বিন্নাকান্দি হাওরে ভূমিখেকোদের হাত থেকে নিজের জমি রক্ষার দাবিতে আয়োজিত গণমানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন গ্রামবাসী।
বক্তব্য গ্রামবাসী জানান, বিন্নাকান্দি গ্রামবাসীর ধান চাষ, গরু-মহিষ চারণ ও মাছ চাষের একমাত্র হাওর উক্ত হাওরটি স্থানীয় একটি ভূমিখেকো চক্র কোম্পানীর নামে বহিরাগতদের হাতে হাওরের জায়গাটি দখল দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমনকি ট্রাক্টর গাড়ি দিয়ে ধানচাষের জমি দখলের প্রস্তুতি নিয়েছে ভূমিখেকো চক্রটি। গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে বিন্নাকান্দি গ্রামে একমাত্র হাওরটি ১৯৫৬ রেকর্ডীয় ৬৯টি পরিবারের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। জায়গাটি দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রামের লোকজন মিলেমিশে ভোগ করে আসছিল। বর্তমান মাঠ জরিপে সরজমিনে সেটেলম্যান কর্মকর্তা পরিদর্শন না করে গ্রামের সহজসরল নিরক্ষর লোকজনকে ঠকিয়ে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কাগজপত্র দখলের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন প্রভাবশালীর ব্যক্তিদের নামে রেকর্ড করে দেন। পরবর্তীতে ভুয়া কোম্পানীর নাম ধারণ করে পুরো হাওরটি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য গোয়াইনঘাট তপশীল কর্মকর্তাদের দিয়ে নামজারীর করিয়ে নেন।
আমরা গ্রামবাসী নামজারীর বিরুদ্ধে সরজমিনে তদন্ত প্রতিবেদন দাবী করিলে তদন্ত কর্মকর্তা সরজমিনে পরিদর্শন করে আমাদের ধান চাষ ও মুর্তা গাছ সহ হাওরের এই পরিস্থিতি দেখে তিনি নিজেও অবাক হয়ে যান। এই হাওর ভূমিদস্যুদের হাতে চলে গেলে গ্রামবাসীর বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটুকুও হাত ছাড়া হয়ে যাবে। তখন গ্রামবাসীর আত্মহত্যা করার ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। বক্তারা বলেন বিন্নাকান্দি কৃষকদের রক্ষার্থে হাওরে পানি সরবরাহের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের মাধ্যমে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ করা হয়েছে এবং বর্তমানে হাওরে বাধের জন্য ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ চলমান।
বক্তারা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে ঘোষণা দিয়েছেন কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখতে চাষযোগ্য জমিতে কোন ধরনের অপরিকল্পিত স্থাপনা করা যাবে না। অথচ ভূমিখেকো চক্রটি কোম্পানীর মাধ্যমে কৃষকদের কৃষি জমি কেড়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে। তাই গ্রামের কৃষকরা প্রাণ থাকতে তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন।
গণমানববন্ধনে বিন্নকান্দির গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী আয়াত উল্লাহ সভাপতিত্বে ও ইউসুফ আলীর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি আমরা ফতেহপুরবাসীর আহ্বায়ক সাংবাদিক মো. ইসমাইল আলী। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মনির উদ্দিন, তরিক উল্লাহ, বশির উল্লাহ, শাসছুল ইসলাম, কুটই মিয়া, ইছরাইল, ইসলাম উদ্দিন, জমির উদ্দিন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি