করোনা সংকট মোকাবেলায় বিশ^ সম্প্রদায়ের ঐক্য

10

কভিড-১৯ বিশ্বকে এক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সব দেশের জন্যই করোনাভাইরাস এক নতুন অভিজ্ঞতা। রোগটি সম্পর্কে আগে থেকে কারো কোনো ধারণা ছিল না। পুরো বিশ্বব্যবস্থাকে নতুন এক প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেওয়া অজানা এই ভাইরাসের দাপটে ঘরবন্দি বিশ্বের কয়েক শ কোটি মানুষ। করোনা ভাইরাস শুধু মানুষকেই ঘরবন্দি করেছে তা নয়, সীমিত করেছে শিল্প-কারখানা ও যানবাহন চলাচল। বিশ্ব অর্থনীতিতেও পড়েছে করোনার থাবা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দায় বিশ্ব ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডাব্লিউএফপি বলছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তীব্র খাদ্যসংকটে থাকা মানুষের সংখ্যা বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ হতে পারে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা ওইসিডি এই বলে হুঁশিয়ার করেছে যে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লেগে যাবে।
বৈশ্বিক এই সংকটকালে ‘এনহ্যান্সিং রিজিওনাল কো-অপারেশন ইন সাউথ এশিয়া টু কমব্যাট কভিড-১৯ রিলেটেড ইমপ্যাক্ট অন ইটস ইকোনমিকস’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। গত বৃহস্পতিবার আয়োজিত এই সম্মেলনে গণভবন থেকে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাঁর বক্তব্যে বর্তমান জটিল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরে বলেছেন, বিশ্বকে মানবকল্যাণ, বৈষম্য দূরীকরণ, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তা এবং কভিড-১৯-এর আগের অর্থনৈতিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নতুন করে ভাবতে হবে। জানিয়েছেন, এখন প্রয়োজন জি-৭, জি-২০ এবং ওইসিডির মতো সংগঠনগুলোর দৃঢ় ও পরিকল্পিত বৈশ্বিক নেতৃত্ব। গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন, এমন কৌশল ও বাস্তবমুখী সহায়তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যেন বাংলাদেশের মতো দেশগুলো টিকে থাকতে পারে। অভিবাসী কর্মীদের বেকারত্ব দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। সুতরাং বোঝা ও দায়িত্ব শেয়ার করার মতো আমাদের এমন একটি অর্থপূর্ণ বৈশ্বিক কৌশল ও পরিকল্পনা নেওয়ার বিষয়েও গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি। বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এবং সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বসম্প্রদায়ের ঐক্যের ওপর জোর দিয়েছেন। ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব যেকোনো সংকট মোকাবেলা করতে পারবে শক্ত হাতে। এই সিদ্ধান্তটি বিশ্বসম্প্রদায়কে এখনই নিতে হবে।