তারুণ্য নির্ভর নতুন মন্ত্রী সভা

146

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রী সভা শপথ নিয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অভাবনীয় জয়ের পর শেখ হাসিনা এবার তাঁর নতুন সরকার সাজিয়েছেন মূলত নতুনদের নিয়ে। নবগঠিত মন্ত্রিসভায় ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। এবারের মন্ত্রী সভার লক্ষণীয় দিক হলো, প্রবীণ ও হেভিওয়েট অনেকেই বাদ পড়েছেন। গত রবিবার বিকেলে যখন অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয় তখন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের পাশাপাশি দেশের বেশির ভাগ মানুষই বিস্মিত হয়েছিল। আবার তারুণ্যনির্ভর নতুন মন্ত্রিসভা অনেককে আশাবাদীও করেছে। বলা যেতে পারে, নতুন মন্ত্রিসভা দেশের মানুষের প্রত্যাশাও অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এরই মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। নতুন মন্ত্রী সভা বাংলাদেশকে উন্নত দেশে উন্নীত করবে মানুষের মধ্যে এখন এমন আশার সঞ্চার হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের সামনে এখন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নেওয়ার যে প্রতিশ্র“তি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া হয়েছে, তা পূরণ করার কোনো বিকল্প নেই। তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে হলে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে সবার আগে। আবার কর্মসংস্থান সৃষ্টির পূর্বশর্ত হচ্ছে দক্ষতা বৃদ্ধি। বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করা গেলে দক্ষতা উন্নয়ন সম্ভব হবে। সৃষ্টি করা যেতে পারে তরুণ ও সৃজনশীল উদ্যোক্তা। সে জন্য দিতে হবে প্রকৃত প্রণোদনা। দেশ থেকে বেকারত্ব দূর করতে না পারলে তরুণ প্রজন্মকে ইতিবাচক কোনো কাজে লাগানো যাবে না। শহরের নাগরিক সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে হলে সবার আগে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি খাতে রীতিমতো বিপ্লব আনা সম্ভব না হলে গ্রামের মানুষ শহরের সুবিধা পাবে না। মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে ইতিবাচক ব্যবস্থা নিতে না পারলে অনেক অর্জন নষ্ট হয়ে যাবে। নিশ্চিত করতে হবে সামাজিক নিরাপত্তাও। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার করে মানবকেন্দ্রিক উন্নয়ন ও টেকসই দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি হাতে নেওয়াও এখন জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তনের যে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ রয়েছে, তা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে নতুন সরকারকে। দেশের সামাজিক সমস্যাগুলোর অন্যতম হচ্ছে মাদক ও জঙ্গিবাদ। মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ আছে নির্বাচনী ইশতেহারে। বলা হয়েছে বিশেষ অভিযান পরিচালনার কথা। জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির যথার্থ বাস্তবায়নে সরকারকে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।
তারুণ্যনির্ভর নতুন মন্ত্রিসভা মানুষের মনে যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তা ধরে রাখাও অত্যন্ত কঠিন কাজ। সততার সঙ্গে কাজ করতে পারলে এই সরকারের হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালিত হবে। দেশ এগিয়ে যাবে। উন্নয়নের গতি থাকবে নিরবচ্ছিন্ন।
নতুন মন্ত্রী সভার সব সদস্যকে অভিনন্দন।