কাজিরবাজার ডেস্ক :
নতুন মন্ত্রীদের জন্য প্রস্তুত সচিবালয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীদের রুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত করা হয়েছে। শপথ গ্রহণের আগেই কোথাও কোথাও মন্ত্রীদের নামফলকও লাগানো হয়েছে। নতুন মন্ত্রীদের খুশি করতে কোথাও কোথাও নামফলকের পাশে বিভিন্ন ছবিও স্থাপন করা হয়। সোমবার সচিবালয় ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের মন্ত্রিসভার চিত্র একটু ভিন্ন। রবিবারই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানিয়ে দেয়া হয় কে কে মন্ত্রী হচ্ছেন। শুধু তাই নয় কে কোন দফতরের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী হচ্ছেন তাও বলে দেয়া হয়। অন্য সময় শপথ নেয়ার আগে সাধারণত কে মন্ত্রী হচ্ছেন সে সম্পর্কে মানুষের ধারণা থাকে কিছুটা অস্পস্ট। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেও কে কোন মন্ত্রণালয় পাচ্ছেন এর জন্য থেকে যায় অপেক্ষার পালা। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ‘পোর্ট ফলিও’ প্রকাশ করলে বিষয়টি সকলের কাছে জানা হয়ে থাকে। কিন্তু এবার সব কিছু আগে থেকে জেনে যাওয়ায় অনেকেরই সুবিধা হয়েছে।
সোমবার সকালে সচিবালয়ে গিয়ে দেখা গেছে খাদ্য, বাণিজ্য, অর্থ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি, স্থানীয় সরকার, নৌ-পরিবহন, যুব ও ক্রীড়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান, পরিবেশসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের বসার রুম ঠিকঠাক করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রুম ঠিক করে রাখার পর সচিব এসে তা পর্যবেক্ষণ করছেন। যেখানে যে অসঙ্গতি রয়েছে সচিবের নির্দেশে তা ঠিক করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। তিনি এসে দেখেন প্রতিমন্ত্রীর নাম ফলক ছোট হয়েছে। তৎক্ষণাৎ তিনি তা পরিবর্তন করতে নির্দেশ দেন। এছাড়া মন্ত্রীর কক্ষে ঢুকে তিনি একে একে প্রতিটি জিনিস দেখে নেন। এমনকি দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত নতুন প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান একটি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দী হন। সেই ছবিটি বড় করে প্রতিমন্ত্রীর প্রবেশদারের পার্শ্বে স্থাপন করা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কন্যার অনেক কর্মসূচী থাকে।
দুর্যোগ সচিব শাহ কামাল বলেন, আজ মঙ্গলবার নতুন প্রতিমন্ত্রী অফিসে আসবেন। তিনি আগের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকেও অফিসে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে পুরনো মন্ত্রীকে ফেয়ার ওয়েল এবং নতুন প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে চান তিনি।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর রুম পরিদর্শন করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব। পাশাপাশি সোমবার সদ্যবিদায়ই মন্ত্রী কামরুল ইসলাম অফিসে আসেন সকলের কাছ থেকে বিদায় নিতে। এ সময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাকে ফেয়ার ওয়েল দেয়া হয়। এ সময় মন্ত্রী সকলের কাছ থেকে বিদায় নেন। বিদায় নেয়ার মুহূর্তে তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। সকলকে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে দুই টার্ম মন্ত্রী রেখেছেন। মনে করেছেন এবার অন্যদের দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে আমি আপনাদের সকলের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি। কাউকে অহেতুক কষ্ট দিয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করবেন। তিনি বলেন, দায়িত্ব পালন করতে গেলে অনেক সময় অনেক কিছু বলতে হয়। কেউ তা ধরে রাখবেন না। আর সকলকে বিদায় নিতে হয়। আমাদের পর নতুনরা আসবেন। আশা করি তারাও ভাল চালাবেন।