কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে সব ধরনের ট্যাক্স ও ভ্যাট থেকে অব্যাহতি প্রদান এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সিলেটের একটি হোটেলে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির পঞ্চদশ সভায় এ আলোচনা হয়। সভায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিদ্যুৎ সচিব অজয় কুমার ভাল্লা।
বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদায় দিন-রাত হিসেবে ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। সন্ধ্যায় হঠাৎ করে চাহিদা বাড়ে, মধ্যরাতে আবার চাহিদা কমে যায়। একইভাবে শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কমে যায়। নির্মাণাধীন বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে এলে বাংলাদেশের বিদ্যুতের উৎপাদন অনেক বেড়ে যেতে পারে। সে সময়ে ভারত ও নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
সভা সূত্র জানায়, দু’পক্ষের মধ্যে ভেড়ামারা ও ত্রিপুরা ইন্টারকানেকশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানির বর্তমান অবস্থা, ভেড়ামারা ইন্টারকানেকশনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির অগ্রগতি, এইচভিডিসি ২য় ব্লক নির্মাণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি, সূর্যমনি-কুমিল্লা নর্থ লিংকের মাধ্যমে জি টু জি-এর আওতায় এনটিপিসির বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহ থেকে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে আরও ৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে।
প্রস্তাবিত কাটিহার-পার্বতীপুর-বড়পুকুরিয়া-বরানগর ৭৬৫ কেভি গ্রিড ইন্টারকানেকশন, বহরমপুর-ভেড়ামারা ৪০০ কেভি ২য় ট্রান্সমিশন লাইন ও সূর্যমনি-কুমিল্লা নর্থ লিংকের মাধ্যমে আরও বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে কুমিল্লায় ব্যাক টু ব্যাক এইচভিডিসি সাব-স্টেশন নির্মাণের বিষয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে।
স্টিয়ারিং কমিটির সভায় অন্য বিষয়ের মধ্যে ভারতীয় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে অংশগ্রহণ, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে অংশগ্রহণের বিষয় পর্যালোচনা ছাড়াও জিএমআর কর্তৃক নেপালে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভারতের এনভিভিএন এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আমদানির ব্যাপারে কথা হয়।
ভুটানের হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্টে বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের যৌথ বিনিয়োগ ও এই প্রজেক্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানি এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার বিষয়সমূহ বিস্তারিত পর্যালোচনাও করা হয়েছে সভায়।
এছাড়া সভায় রামপালে বাস্তবায়নাধীন মৈত্রী সুপার থারমাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। সভায় রামপালে বাস্তবায়নাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থারমাল প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ ও বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা উত্তরোত্তর বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ১৫তম সভা সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম-সচিব শেখ ফয়েজুল আমিন এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ভারতী ।