সড়ক সংস্কার জরুরী

34

জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিক থেকেই শুরু হবে ঈদ যাত্রা। আশঙ্কা করা হচ্ছে বরাবরের মতো এবারও ঈদ যাত্রায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে ঘরমুখো মানুষকে। দীর্ঘ যানজটে আটকে থেকে বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে এমন আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে রাজধানী ছেড়ে যাওয়ার সব মহাসড়কে যানজটের খবর দেখে। এর পাশাপাশি দেশের সড়ক-মহাসড়কের যে অবস্থা এখন, তাতে আশান্বিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। গত বছরের নভেম্বর থেকে গত জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে ১৭ হাজার ৯৭৬ কিলোমিটার মহাসড়ক জরিপ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের এইচডিএম বিভাগ। এতে ধরা পড়ে দেশের ২১ হাজার কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক ও জেলা সড়কের ২৬.৩২ শতাংশ নাজুক। এরপর আরো চার মাস চলে গেছে। বিভিন্ন মহাসড়ক স্থানে স্থানে আরো খারাপ হয়েছে। গত বছরের বন্যার ধকল সামাল না দিতেই এবার ঘন ঘন বর্ষণে নতুন নির্মিত মহাসড়ক চলাচলের উপযোগিতাই শুধু হারায়নি, হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনাপ্রবণও।
ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ে। নিকটজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরে মানুষ। স্বাভাবিক কারণেই এ সময় আন্ত জেলা বাস কম্পানিগুলো তাদের ট্রিপের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। ঘরমুখো মানুষের ভিড় সামাল দিতে চালু হয় বিশেষ সার্ভিস। ঈদের সময় দেখা যায়, আঞ্চলিক রুটের অনেক বাস চলে আসে মহাসড়কে। এসব বাস মহাসড়কে যানজটের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একদিকে এসব বাসের চালক মহাসড়কে যানবাহন চালানোর ব্যাপারে অভিজ্ঞ নয়, তার ওপর রয়েছে যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মাঝরাস্তায় গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তোলা হচ্ছে বা নামানো হচ্ছে। এতে পেছনে যানবাহনের লম্বা লাইন পড়ে যায়, সৃষ্টি হয় যানজটের। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দুই পাশে তিন ফুট করে থাকা শোল্ডার দিয়ে মূলত তিন চাকার যানবাহন চলাচল করে। এই শোল্ডারও কয়েক দিন আগে মেরামত করা হয়েছে। এই মহাসড়ক মসৃণ থাকলেও বেশ কয়েকটি পয়েন্টে হাট-বাজারের কারণে এবারও যানজটে পড়তে হতে পারে। উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের সবচেয়ে বড় ভয় ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল মহাসড়ক পর্যন্ত। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এখন বাসে বসা দায়। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চন্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগছে পাঁচ থেকে আট ঘণ্টা।
তবে ঈদ যাত্রা নির্বিঘœ করতে সড়ক-মহাসড়ক সংস্কারে হাত দিতে হবে। ভাঙাচোরা রাস্তা যেন যানজট ও কোনো দুর্ঘটনার কারণ না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। হাতে যে কয় দিন সময় আছে, এর মধ্যে যেটুকু সম্ভব রাস্তা মেরামত করা গেলে ঈদ যাত্রার দুর্ভাবনা কিছুটা হলেও কমবে। সেই সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশকে সক্রিয় করতে হবে। যত্রতত্র গাড়ি থামানো ও যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করা গেলে অনেকটা নির্বিঘœ হবে ঈদ যাত্রা।