এহতেশামুল আলম জাকারিয়া
লাইলাতুল মেরাজ বা শবে মেরাজ , হচ্ছে যে রাতে ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) আল¬াহপদত্ব উপায়ে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ এবং আল¬াহর সাথে সাক্ষাৎ করেন সেই রাত। মুসলমানরা এবাদত-বন্দেগীর মধ্য দিয়ে এই রাতটি উদযাপন করেন। ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে, কেননা এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চম স্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক অর্থাৎ (ফরজ) নির্ধারণ করা হয় এবং দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নির্দিষ্ট করা হয়। হযরত মুহাম্মদের (সা:) নবুওয়াত প্রকাশের একাদশ বৎসরের (৬২০ খ্রিষ্টাব্দ) রজব মাসের ২৬ তারিখের দিবাগত রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল¬াল¬াহু আলাইহি ওয়া সাল¬াম সশরীরে সজ্ঞানে জাগ্রত অবস্থায় হযরত জিবরাইল (আ.) এর সঙ্গে বিশেষ বাহন বোরাকের মাধ্যমে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা অতঃপর প্রথম আসমান থেকে একে একে সপ্তম আসমান এবং সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আজিম পর্যন্ত ভ্রমণ; জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন এবং মহান রাব্বুল আলামিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করে ফিরে আসেন । মেরাজের একটা অংশ হলো ইসরা। ইসরা অর্থ রাত্রিকালীন ভ্রমণ। যেহেতু নবী করিম সাল¬াল¬াহু আলাইহি ওয়া সাল¬ামের মেরাজ রাত্রিকালে হয়েছিল, তাই এটিকে ইসরা বলা হয়। বিশেষত বায়তুল¬াহ শরিফ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত সফরকে ইসরা বলা হয়। এই সফরে ফেরেশতা জিবরাইল তার সফরসঙ্গী ছিলেন। কুরআন শরিফের সুরা বনি ইসরাঈল এর প্রথম আয়াতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে :
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنْ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّه هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِير
অর্থ : ‘তিনি পবিত্র (আল্লাহ) যিনি তাঁর বান্দাকে রাত্রিভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার আশপাশ আমি বরকতময় করেছি। যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনসমূহ দেখাতে পারি। নিশ্চয় তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা-বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)
মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল নবুওয়াতের ১১তম বছরের ২৭ রজবে। তখন নবীজীর বয়স ৫১ বছর। মেরাজ হয়েছিল সশরীরে জাগ্রত অবস্থায়। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো কাফের, মুশরিক ও মুনাফিকদের অস্বীকৃতি ও অবিশ্বাস। যদি আধ্যাত্মিক বা রুহানিভাবে অথবা স্বপ্নযোগে হওয়ার কথা বলা হতো, তাহলে তাদের অবিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিল না। মেরাজের বিবরণ পবিত্র কোরআনের সুরা নাজমে সুরা ইসরায় বিবৃত হয়েছে। হাদিস শরিফ, বুখারি শরিফ, মুসলিম শরিফ, সিহাহ সিত্তাসহ অন্যান্য কিতাবে এই ইসরা ও মেরাজের বিষয়টি নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ সূত্রে বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। আল্ল¬াহ তাআলা বলেন: ‘শপথ নক্ষত্রের যখন তা বিলীন হয়। তোমাদের সাথি (মুহাম্মাদ সাল¬াল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল¬াম) বিপথগামী হননি এবং বিভ্রান্ত হননি। আর তিনি নিজে থেকে কোনো কথা বলেন না। (বরং তিনি যা বলেন) তা প্রদত্ত ওহি (ভিন্ন অন্য কিছু) নয়। তাকে শিখিয়েছেন মহাশক্তিধর (জিবরাইল আ.)। সে (জিবরাইল আ.) পাখাবিশিষ্ট, সে স্থিত হয়েছে দূর ঊর্ধ্বে। অতঃপর নিকটবর্তী হলো, পরে নির্দেশ করল। তারপর হলো দুই ধনুকের প্রান্তবর্তী বা আরও নিকট। পুনরায় তিনি ওহি করলেন তাঁর বান্দার প্রতি যা তিনি ওহি করেছেন। ভুল করেনি অন্তর যা দেখেছে। তোমরা কি সন্দেহ করছ তাকে, যা তিনি দেখেছেন সে বিষয়ে। আর অবশ্যই দেখেছেন তিনি তাকে দ্বিতীয় অবতরণ স্থলে; সিদরাতুল মুনতাহার কাছে; তার নিকটেই জান্নাতুল মাওয়া। যখন ঢেকে গেল সিদরা যা ঢেকেছে; না দৃষ্টিভ্রম হয়েছে আর না তিনি বিভ্রান্ত হয়েছেন; অবশ্যই তিনি দেখেছেন তাঁর রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ।’ (সুরা-নাজম, আয়াত: ১-১৮)।
মুহাদ্দিসীনগণ বলেছেন-দুনিয়ার রাজা-বাদশাহদের আগমনে যেমন জনতা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে, তার সম্মানে সব যানবাহন, মানুষের কর্মকান্ড বন্ধ থাকে তেমনিভাবে মহানবী (স)-এর আগমনে তামাম ব্রহ্মান্ডের কর্মকান্ড সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। এখানে স্বাভাবিক প্রশ্ন হতে পারে যে, মেরাজের এমন মর্যাদাপূর্ণ সফরে দুনিয়ার সময়ের গতিকে থামানো হলো কেন? তাফসীরবিদরা এর যৌক্তিক জবাব দিয়েছেন এভাবে যদি দুনিয়ার সময়কে চালু রেখেই আল¬াহতায়ালা তার প্রিয় হাবিবের ২৭ বছরের মেরাজের সফরের সময় পার করতেন, তাহলে এই সুদীর্ঘ সময়ে জাতি সম্পূর্ণভাবেই খোদাবিমুখ হয়ে যেত এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার আগেই ফেতনা-ফ্যাসাদে জড়িয়ে পড়তো। কারণ, হযরত মুসা (আ.) মাত্র ৪০ দিন তুর পর্বতে সাধনা করতে গিয়ে উম্মতের কাছ থেকে দূরে থাকার সময় তার উম্মতেরা বাছুর পূজার ফেতনায় জড়িয়ে ঈমানহারা হয়ে যায়। মহানবী (স)-এর দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে মুশরিকদের পক্ষে ও ইসলামের বিপক্ষে হয়তো এমন জনমত গড়ে উঠতো, যা’ পরে আর কাটিয়ে ওঠা মুসলমানদের পক্ষে সহজ হতো না। এ ধরনের ঘটনা মহানবীর উম্মতের জীবনে ঘটুক, তা’ আল্লাহতায়ালা পছন্দ করেননি বলেই তিনি দুনিয়ার সময়ের গতি বন্ধ করে দিয়েছেন।
শবে মেরাজ উপলক্ষে বিশেষ কোনো আমলের কথা শরীয়তে উল্লেখ করা হয়নি। তারপরও এ রাতে এতদঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশেষ ইবাদত বন্দেগিতে লিপ্ত থাকতে পছন্দ করে থাকেন। বিশেষত এ রাতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মসজিদে কিংবা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রথা বহুদিন যাবৎ চলে আসছে। অনেকে এ উপলক্ষে নফল রোজা রাখেন। তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করেন। এর কোনোটিকেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ আল্লাহতায়ালার কাছে বান্দার যে কোনো আমলই মূল্যবান। তবে খেয়াল রাখতে হবে এ ক্ষেত্রে যেন বাড়াবাড়ী না হয়, মৌলিক ঈমান -আকিদার পরিপন্থী কোন কাজ না হয়। আমাদের প্রিয়নবী (সা.) এর মোজেজাগুলোর মধ্যে পবিত্র মেরাজ অন্যতম। এটি এমনই একটি ঘটনা, যার সঙ্গে রয়েছে ঈমানের গভীরতম সম্পর্ক। কাজেই মেরাজের বৈজ্ঞানিক যুক্তি খুঁজতে যাওয়া একটি অবান্তর চিন্তা। বলা বাহুল্য, যুক্তি কোনো দিনই ঈমানের ভিত্তি নয়, ঈমানই হচ্ছে যুক্তির ভিত্তি। বরং যুক্তির মাত্রা যেখানে শেষ ঈমানের যাত্রা সেখান থেকেই শুরু। তারপরও কোনো কোনো মহৎ ব্যক্তির এ ব্যাপারে যুক্তির অবতারণাÑ শুধু ঈমানের স্বাদ অনুভব করার জন্যই। বিজ্ঞানের এ চরম উৎকর্ষের যুগে আমরাও তাই মেরাজকে বিজ্ঞানের আলোকে বিশে¬ষণ করে দেখতে চাই। মহানবী (সা.) এর সশরীরে মেরাজের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধবাদীদের প্রধান যুক্তি হলো জড় জগতের নিগড়ে আবদ্ধ স্থূলদেহি মানুষ কীভাবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ভেদ করে আকাশলোকে বিচরণ করে? তাছাড়া পৃথিবীর আকর্ষণীয় শক্তি যেখানে শূন্যে অবস্থিত স্থূল বস্তুকে মাটির দিকে টেনে নামায়, সেখানে কী করে প্রিয়নবী (সা.) সশরীরে মেরাজে গমন করেন? , গতিবিজ্ঞান (উুহধসরপং), মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব (খধি ড়ভ এৎধারঃু) এবং আপেক্ষিক তত্ত্বের (খধি ড়ভ জবষধঃরারঃু) সর্বশেষ বিশে¬ষণ ও পর্যালোচনার আলোকে মেরাজের ঘটনাকে বিচার করলে এর সম্ভাব্যতা সহজেই আমাদের কাছে বোধগম্য হয়ে ওঠে। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতে পারেননি যে, মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ভেদ করা সম্ভব। যেমন স্যার আইজাক নিউটনের সূত্র অনুসারে, ষধি ড়ভ সড়ঃরড়হ ধহফ ঃযব রফবধ ড়ভ ঁহরাবৎংধষ মৎধারঃধঃরড়হ বা মাধ্যাকর্ষণ নীতি যা ডিঙানো অসম্ভব। কিন্তু সত্তরের দশকের বিজ্ঞানীরা চাঁদে পৌঁছার মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে, মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ডিঙানো সম্ভব। এ সম্পর্কে আধুনিক বৈজ্ঞানিক অৎঃযবৎ এ ঈষধৎশ তাঁর ঞযব বীঢ়ষড়ৎধঃরড়হ ড়ভ ংঢ়ধপব গ্রন্থে বলেছেন, অং ঃযব ফরংঃধহপব ভৎড়স ঃযব বধৎঃয ষবহমঃযবহং রহ ঃড় ঃযব ঃযড়ঁংধহফ ড়ভ সরষবং ঃযব ৎবফঁপঃরড়হ (ড়ভ এৎধারঃু) নবপড়সবং ংঁনংঃধহঃরধষ ঃবিষাব ঃযড়ঁংধহফ সরষবং ঁঢ়, ধহ ড়হব-ঢ়ড়ঁহফ বিরমযঃ ড়িঁষফ বিরমযঃ ড়হষু ধহ ড়হব ড়ঁহপব. ওঃ ভড়ষষড়ংি, ঃযবৎবভড়ৎব, ঃযধঃ ভঁৎঃযবৎ ধধিু ড়হব মড়বং ভৎড়স ঃযব ঊধৎঃয. ঞযব বধংরবৎ রঃ রং ঃড় মড় ড়হধিৎফং. তিনি অন্যত্র বলেছেন, ‘এৎধারঃু ংঃবধফরষু বিধশবহং ধং বি মড় ঁঢ় ড়িৎফং ধধিু ভৎড়স ঊধৎঃয, ঁহঃরষ ধঃ াবৎু মৎবধঃ ফরংঃধহপবং রঃ নবপড়সবং পড়সঢ়ষবঃবষু হবমষরমরনষব. এভাবে আকর্ষণ ক্ষমতা যখন মোটেই বোঝা যায় না, সে অবস্থাকে তবৎড় এৎধারঃু বলা হয়। গতিবিজ্ঞানীরা আরো জানিয়েছেন, ঘণ্টায় ২৫ হাজার মাইল বেগে ঊর্ধ্বালোকে ছুটতে পারলে পৃথিবীর আকর্ষণ থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব। এ গতিমাত্রাকে তারা মুক্তিগতি (ঊংপধঢ়ব াবষড়পরঃু) নামে আখ্যায়িত করেন। আমরা জানি, মহানবী (সা:) ‘বুরাক’ নামক এক অলৌকিক বাহনের ওপর বসে ঊর্ধ্বালোকে গমন করেছিলেন। আরবি শব্দ ‘বারকুন’ অর্থ বিদ্যুৎ। বুরাক বলতে মূলত বিদ্যুৎ থেকে অধিক গতিসম্পন্ন বাহনকে বোঝায়। অতএব দেখা যাচ্ছে, মাধ্যাকর্ষণ যুক্তি দ্বারা মেরাজের সম্ভাবনাকে নিবারিত করা যাচ্ছে না। আপেক্ষিক তত্ত্বের প্রবক্তারা বলেছেন, সময়ের স্থিরতা বলতে কিছুই নেই, ওটা আমাদের মনের খেয়াল মাত্র। বস্তুত সময় সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান ও ধারণা আপেক্ষিক। সময়ের প্রভাব সবার ওপর সমান নয় বলেই আইনস্টাইন বলেছেন, ঞযবৎব রং হড় ংঃধহফধৎফ ঃরসব, ধষষ ঃরসব রং ষড়পধষ. দর্শকের গতির তারতম্যে বস্তু বা ঘটনার স্থান নির্ণয়ে তারতম্য ঘটে। আবার একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে সঙ্ঘটিত দু’টি ঘটনা দর্শকের গতির তারতম্যে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত হচ্ছে বলে মনে হয়। গতির মধ্যে সময় অস্বাভাবিকভাবে খাটো হয়ে যায়। সময় সম্বন্ধে আমাদের ধারণার এই আপেক্ষিকতা গতি সম্বন্ধীয় স্বতঃসিদ্ধের ওপর আপতিত হলে যে ফলাফল দাঁড়ায় তা হল, স্থান ও কাল সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধিটা একটা গোলক ধাঁধার মধ্যে আপতিত বলে মনে হতে পারে; কিন্তু প্রকৃত অবস্থা তা নয়। আলোক বিজ্ঞানের আবিষ্কারের ফলে এটা আজ সবার জানা যে, আলোকরশ্মি সেকেন্ডে ১,৮৬,০০০ মাইল অতিক্রম করে। আলোর গতিই সর্বোচ্চ- এ ধারণাও ইদানীং আবার ধ্রুব সত্য হিসেবে স্বীকৃত নয়। ঐবৎড়ষফ খবষধহফ এড়ড়ফরিহ তার ঝঢ়ধপব ঞৎধাবষ গ্রন্থে বলেছেন, ‘আলোর গতি অপেক্ষা মনের গতি ঢের বেশি।’ যাইহোক, আলোর গতির সাথে কোনো বস্তুর গতির সামঞ্জস্যের তারতম্যই (উবমৎবব ড়ভ উরংঢ়বৎংরড়হ) সময়ের তারতম্য ঘটার অন্যতম কারণ। ওপরের বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলোর আলোকে মেরাজের ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বোরাক আরোহী মহানবী (সা)-এর গতির মাত্রা এত বেশি ছিল যে, সব ঘটনাই পৃথিবীর দর্শকের কাছে কয়েক মুহূর্তের ঘটনা বলে মনে হলেও কালের প্রবাহে তা ছিল দীর্ঘ সময়। মেরাজের ঘটনাবলি আমাদের চিন্তা ও কল্পনাকে ঊর্ধ্বমুখী করে। বিজ্ঞানের নভোচারিতায় অভূতপূর্ব সাফল্য তার বাস্তব প্রমাণ। বস্তুত যেদিক দিয়েই দেখি না কেন, মেরাজ সত্যিই এক বিস্ময়কর মোজেজা। এ সম্বন্ধে চিন্তা করলেও হৃদয় পবিত্র হয়, মনের দিকচক্রবলী সম্প্রসারিত হয়ে যায়। মূলত মেরাজ মানবজাতির জন্য সামাজিক, বৈজ্ঞানিক, আধ্যাত্মিক- এক কথায় ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ সাধন করেছে। আল¬াহ তায়ালা তার প্রিয় হাবিবের মাধ্যমের মেরাজের পবিত্র রজনীতে উম্মতের কাছে তুলে দিয়েছেন সালাত নামক বেহেস্তের চাবি। মুসলিম উম্মার দায়িত্ব সেই সালাত সম্পর্কে গাফিল না থেকে তার প্রতি গভীর মনোযোগী হওয়া। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামায়াতের সাথে আদায়ের পাশাপাশি গভীর রাতে তাহাজ্জুদের সালাতের সিজদায় অশ্রুকণার মাধ্যমে চাবি কে মরিচামুক্ত রাখতে চেষ্টা চালাতে হবে নিরন্তর । তবেই মুমিন জীবনে আসবে সাফল্য, তবেই খুলে যাবে জান্নাতের দুয়ার।