নির্বাচনী হাওয়া বইছে

40

দেশে নির্বাচনী হাওয়া ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের বাকি আছে আট মাসের মতো। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে কারা নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তার তালিকা চাওয়া হয়েছে। জোটের বাইরেও কয়েকটি দলের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে। তার আগে মে-জুন নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে পারে পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এটিকেও অনেকে জাতীয় নির্বাচনের মাঠ রিহার্সাল হিসেবে দেখছেন। নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোর জন্য সরকারের মতামত চেয়ে নোট পাঠিয়েছে। আশা করা যায়, কিছুদিনের মধ্যেই সেসব নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে বলা যায়, এখনো পর্যন্ত দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ ধরেই এগোচ্ছে। সাধারণ মানুষেরও প্রত্যাশা এই নির্বাচনমুখী শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অক্ষুণœ থাক। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করায় সেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা দেশে ও বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিল। যদিও সেই নির্বাচনে বিজয়ী দলের মেয়াদ পূর্ণ করার ক্ষেত্রে তা বড় কোনো বাধা হয়নি, তবু উভয় পক্ষকেই সেই নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করতে হবে। এর ফলে দেশে যে সংঘাতপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে সাধারণ মানুষকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তাই তারা চায়, আগামী নির্বাচন নিয়ে যেন কোনোভাবেই সে রকম পরিস্থিতি তৈরি না হয়। এর মধ্যে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতি মামলার রায়ে কারাভোগ করছেন। বিএনপি নেতৃত্ব আশা করছে, তিনি শিগগিরই জামিনে মুক্তি পাবেন। তবে তারা এমনটাও ভাবছে, কোনো কারণে খালেদা জিয়া মুক্ত না হলে, সে ক্ষেত্রে তারা আন্দোলন ও নির্বাচন একসঙ্গে চালিয়ে যাবে। বিএনপির এমন চিন্তাভাবনাকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল ইতিবাচকভাবেই দেখছে। আবার কারাগারে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক করার অনুমতি দেওয়ার মধ্যে সরকারের সদিচ্ছাও দেখছেন অনেক বিশ্লেষক। নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্বে মাঠের সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রেও সরকার বিএনপিকে প্রয়োজনীয় ছাড় দেবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন।
গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে পরমতসহিষ্ণুতা অত্যন্ত জরুরি। দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলেছে। আমরা চাই, রাজনৈতিকভাবেও দেশ এগিয়ে যাক। দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র আরো দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হোক। সে ক্ষেত্রে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে একটি বড় মাপকাঠি। নির্বাচনে বিরোধী দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দায়িত্ব যেমন সরকারের ওপর বর্তায়, তেমনি বিরোধী দলগুলোকেও যেকোনো ছুতোয় নির্বাচন বর্জনের ঐতিহ্য থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা চাই, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হোক।