কানাইঘাটে কুখ্যাত এনাম ডাকাত সহ দুইজন গ্রেফতার, ডাকাতির সরঞ্জামাদি উদ্ধার

98

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাটে গত মঙ্গলবার রাত অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এনাম বাহিনীর ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে পুলিশ। সংঘবদ্ধ হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কানাইঘাটের কুখ্যাত ডাকাত এনাম উদ্দিনসহ ২জনকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত শক্তিশালী সরঞ্জামসহ কানাইঘাট থানা পুলিশ স্থানীয় জনতার সহায়তায় গ্রেফতার করেছে। এলাকার আতঙ্ক এনাম ডাকাত পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পেশাদার ডাকাত কয়েকেটি মামলার আসামী উপজেলার বনগৌরিপুর গ্রামের মৃত শফিকুল হকের পুত্র এনাম ডাকাতের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে পৌরসভার মহিলা কলেজ সংলগ্ন আন্দু নদী জলমহালের পাশে রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোপনে মিলিত হয়। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন কয়েকটি মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত হানা দিয়েছে ঘোষণা দিলে স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় তাৎক্ষণিক কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আহাদ, ওসি (তদন্ত) মোঃ নুনুমিয়া, এস.আই বশির আহমদ, এ.এস.আই খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে হানা দেন। পুলিশ ও জনতার উপস্থিতি টের পেয়ে ১০/১২ জনের ডাকাতদল ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে একটি নাম্বারবিহীন সিএনজি অটোরিক্সা গাড়ীসহ চুরি-ডাকাতি ও অপরাধ মূলক কাজে ব্যবহৃত বিপুল সরঞ্জামসহ পল্লী বিদ্যুত জোনাল অফিসের সামনে থেকে এনাম ডাকাত (২৮) ও সিএনজি ড্রাইভার জন্তিপুর রাধানগর গ্রামের মৃত বশির আহমদের পুত্র তাকলিমুল ইসলাম (২২) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি শব্দবিহীন পাকা দেওয়াল ও দরজা কাটার ডিজিটাল আধুনিক ডিল মেশিন, দরজা ও তালা ভাঙ্গার বিশেষ ভাবে তৈরী লোহার শাবল, ৪৬ ইঞ্চি ধারালো ১টি তরবারী, ১টি ধারালো দা, ২টি ছুরা, ১টি আধুনিক চাকু, তালা ভাঙ্গার ২টি বিশেষ রড, কয়েকটি মুখোশ, ১টি গ্রীল ভাঙ্গার শাবল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত এনাম ডাকাত ও তার সহযোগী তাকলিমুল ইসলাম জানায় কানাইঘাট সদর ইউপির একটি গ্রামে ডাকাতির উদ্দেশ্যে আন্দু নদী জলমহালের পাশে জড়ো হয়েছিল এমন গুরুত্বপূর্র্ণ তথ্য পুলিশকে দেয় এবং তাদের সাথে ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হয়ে পালিয়ে যাওয়া অন্যান্য ডাকাতদের নাম ও ঠিকানা পুলিশকে প্রদান করে। পালিয়ে যাওয়া ডাকাতদের গ্রেফতার করতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন এনাম ডাকাত এলাকার ত্রাস। সে ছদ্ম বেশে সব সময় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সহ নানা ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। গত রমজানে মাসে সেহরীর সময় কানাইঘাট বাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ধারালো অস্ত্র শব্দ বিহীন ডিজিটাল ডিল মেশিন সহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এলাকায় বোরকা ও মুখোশ পরে রাতের বেলা সশস্ত্র অবস্থায় সে অপরাধ করত। ডাকাত এনাম বাহিনীকে একটি গডফাদার চক্র অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে শেল্টার দিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানিয়েছেন, চুরি-ডাকাতিসহ বড় ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড প্রতিরোধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। ডাকাত এনাম বাহিনী ডাকাতির উদ্দেশ্যে মহিলা কলেজের আন্দু নদী জলমহালের পাশের নির্জন জায়গায় একত্রিত হয়ে শলাপরামর্শ করছেন এমন গোপন সংবাদ পুলিশ জানতে পেরে তাদেরকে আটক করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় লোকজন ডাকাতদের অবস্থান টের পেয়ে এলাকার মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত হানা দিচ্ছে ঘোষনা দিলে তাৎক্ষণিক এনাম ডাকাত সহ তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করতে সেখানে অভিযান চালিয়ে কুখ্যাত ডাকাত এনাম সহ ২ জনকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিপুল সরঞ্জামসহ গ্রেফতার করা হয়। এনাম ডাকাত ডাকাতি সহ সবধরনের অপরাধের সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে পূর্বে থানায় কয়েকটি মামলা ছিল। তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে এবং গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে ওসি জানান। কানাইঘাটে ডাকাতি সহ বড় ধরনের কোন অপরাধ কাউকে করতে দেওয়া হবে না। এলাকা ভিত্তিক ডাকাতদের তালিকা তৈরী করে তাদের গতিবিধি নজরধারী সহ গ্রেফতার করা হবে। গ্রেফতারকৃত দু’জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি প্রস্তুতির চেষ্টার ঘটনায় থানা মামলা দায়ের সহ সিলেটের বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত ডাকাতির মামলার আসামী দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে বলে ওসি আব্দুল আহাদ বলেন। কানাইঘাটের কোথাও চুরি ও ডাকাতির এমন সংবাদ পেলে তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানানোর জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবং জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।