দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে সরকারের চেষ্টার অন্ত নেই। সরকারের চেষ্টার সর্বশেষ উদাহরণ হতে পারে আশুগঞ্জ হাসপাতাল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম হাসপাতালটি উদ্বোধন করেছেন। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা দেওয়ার পর ২০১২ সাল থেকে উপজেলা পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম চালু করা হয়। জমি অধিগ্রহণের পর ২০১৪ সালের শেষার্ধে হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয়। উদ্বোধন হলো ২০১৮ সালে এসে। হাসপাতালটি ৫০ শয্যার। এখানে অপারেশন থিয়েটার আছে। ল্যাবরেটরি আছে। একজন আবাসিক চিকিৎসক, তিনজন জুনিয়র কনসালট্যান্ট, তিনজন মেডিক্যাল অফিসার, ডেন্টাল সার্জনসহ প্রয়োজনীয় সব পদই আছে। কিন্তু তাতে উপজেলাবাসীর কষ্ট লাঘব হবে এমন কথা বলা যাচ্ছে না। হাসপাতালে আছে অনেক কিছু আবার অনেক কিছুই নেই। একজন আবাসিক চিকিৎসকের পদ থাকলেও চিকিৎসক নেই। তিনজন জুনিয়র কনসালট্যান্টের একজনও নেই। নেই ডেন্টাল সার্জন। মেডিক্যাল অফিসার তিনজনের মধ্যে দুজন থাকলেও তাঁরা প্রেষণে রাজধানীতে রয়েছেন। মিডওয়াইফ নার্সের চারটি পদের মধ্যে তিনটি শূন্য। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী কম আছে। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও নেই কোনো যন্ত্রপাতি। এক্স-রে মেশিন আছে, নেই আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন। সবচেয়ে বড় কথা, ৫০ শয্যার হাসপাতালে ৩১ শয্যার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
এ অবস্থায় আশুগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালটি এলাকার রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবে কী করে? প্রথম কথা হচ্ছে, যেকোনো হাসপাতালে প্রয়োজনীয়সংখ্যক চিকিৎসকের পদায়ন ও তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসকরা যদি হাসপাতালে না থাকেন, তাহলে চিকিৎসাসেবা কার কাছ থেকে পাওয়া যাবে। এর সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালে করা না গেলে, তা এলাকার মানুষের কোন কাজ লাগবে? উদ্বোধনের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এখন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবাও নিশ্চিত করতে হবে। পদের বিপরীতে চিকিৎসকদের পদায়ন যেমন দরকার, তেমনি সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকাও জরুরি। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট মহল জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে এলাকার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে। আশুগঞ্জের মানুষের কাছে সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হোক।