বড়বিলে আনন্দের পলো বাওয়া উৎসব

120

জাহাঙ্গীর আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
দূষণ, দখল, ভারট আর প্রাকৃতিক বৈরিতার কারণে বিলীন হচ্ছে খাল বিল। কমে যাচ্ছে নদ-নদীও। কিন্তু তারপরও আদিকাল থেকেই সেই চির চেনা মাছ ধরা উৎসব আজও লালন করে আসছেন সিলেটের বিশ্বনাথবাসী। উৎসবের আমেজে পালন করছেন এককালের হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন ঐতিহ্য ‘পলো বাওয়া’ উৎসব। আহা কি আনন্দ! সেই আদিকাল থেকেই ‘বড় বিলে’ বছরের পহেলা মাঘ ‘পলো বাওয়া’ উৎসব পালন করেন উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামবাসী। এবছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। গতকাল রোববার ‘বড়-বিলে’ হয়ে গেলে চিরায়ত বাংলার সেই ঝপ ঝপা ঝপ ‘পলো বাওয়া’। সকাল ১১টা থেকে থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মাছ ধরায় মেতেছিলেন ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ, সকলেই। বাদ পড়েননি গ্রামের প্রবাসীরাও। দেশি-বিদেশী সকলের অংশগ্রহণে ওই মাছ ধরা উৎসব জানিয়ে দিয়েছে বাংলার প্রাচীণ ঐতিহ্য ‘পলো বাওয়া’ উৎসব আজো হারিয়ে যায়নি।
এবছরও ‘বড় বিলে’ গ্রামবাসীর সঙ্গে মাছ ধরায় অংশ নিতে আব্দুল্লাহ ওরফে রহমত উল্লাহসহ অসংখ্য লন্ডন প্রবাসী দেশে ফেরেছেন। সকলের সঙ্গে তারাও (প্রবাসীরা) পলো দিয়ে মাছ ধরায় অংশ নিয়েছেন। যদিও ‘পলো বাইছ’ কিন্তু পলো ছাড়াও, ঠেলা জাল, হাতা জাল ইত্যাদি নিয়ে মাছ ধরায় মেতেছিলেন গ্রামবাসী। বোয়াল, ষৌল, গজার ও কার্ফু মাছ অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি পাওয়ায় হাসি মুখে বাড়ি ফিরেছেন গোয়াহরির ইকবাল হোসেন, তজম্মুল আলী, তাজুল আহমদ, তোফায়েল আহমদ, সিরাজুল ইসলাম, লন্ডন প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম কয়েছ ও সৌদী প্রবাসী মুহিবুর রহমা, বিশ্বনাথের রইছ আলী, সদুরগাওয়ের আব্দুর রবসহ আরও অনেকে।
বিলের পাড়ে বসা গোয়াহরির প্রবীণ মুরব্বী প্রবাসী হাজী তৈমুছ আলী বলেন, ৪শ’ বছরের পুরনো এ বিলে প্রায় ২শ’ বছর ধরে পহেলা মাঘ তারিখে ‘পলো বাওয়া’ হয়ে থাকে। বিলে নেমে মাছ ধরতে না পারলেও শুধু আনন্দ উপভোগ করতেই তিনি দেশে ফিরেছেন বলেও তিনি জানান।
গোয়াহরি গ্রামের ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, যুগ যুগ ধরে বড় বিলে পলো দিয়ে মাছ ধরাকে একটি উৎসব হিসেবেই পালন করে আসছি। এটা আমাদের গোয়াহরি গ্রামের একটি রেওয়াজ।