জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অবহেলার কারণে সামান্য একটু রাস্তার বেহাল দশার জন্য উপজেলা বাসীকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভের শেষ নেই। এসব ভাঙ্গাচোরা রাস্তা ঘাট নিয়ে বারবার গণমাধ্যমে ফলোআপ করে সংবাদ ছাপা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জেনে-বুঝে নিলজ্জের মতো এড়িয়ে যাচ্ছেন। এতে ভুক্তভোগী জনতার মধ্যে দিনদিন আরো ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। প্রতিনিয়ত ভাঙ্গাচোরা রাস্তার গর্তে জমে থাকা ময়লা পানি ডিঙিয়ে যানবাহন ও জন সাধারণকে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তাটি যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। জগন্নাথপুর পৌরসভা এবং সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের মধ্যে এ রাস্তাটির মালিকানা নিয়ে রশি টানাটানিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। কেউ এ রাস্তাটির দায় নিতে চায় না। যে কারণে বছরের পর বছর ধরে জনতাকে অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর পৌর শহরের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা হচ্ছে স্থানীয় ব্যস্ততম পৌর পয়েন্ট থেকে থানা রোড পর্যন্ত। এখানে রাস্তার দৈর্ঘ্য হবে মাত্র ৬শ থেকে ৭শ ফুট। সামান্য এ রাস্তার মেরামত কাজ হচ্ছে না বছরের পর বছর ধরে। রাস্তাটি ভাঙতে ভাঙতে এখন বড়-বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টি ও রাস্তার পাশে থাকা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা ময়লা পানি জমে থাকে। এসব ময়লা পানি ডিঙিয়ে প্রতিনিয়ত যানবাহন ও জন সাধারণ চলাচল করছেন।
বুধবার সরজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে ভাঙ্গাচোরা সড়কের গর্তে জমে থাকা পানিতে মাছ চাষের উপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী সহ ভূক্তভোগী জনতাদের মধ্যে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সামান্য এ রাস্তা পুরো জগন্নাথপুর উপজেলা বাসীকে চরম লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। দেশের যে কোন অঞ্চল থেকে ও বিদেশ থেকে প্রবাসীরা জগন্নাথপুর আসলেই সবার নজরে পড়ে জগন্নাথপুর পৌর শহরের এ নাজুক রাস্তাটি। এ সময় এসব আগন্তুকদের কঠিন প্রশ্নের সম্মুখিন হতে জগন্নাথপুর উপজেলার যে কোন মানুষকে। তখন তাদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে লজ্জায় পড়ে যান তারা। জগন্নাথপুর হচ্ছে একটি প্রবাসী অধ্যুষিত ধনী উপজেলা। এ উপজেলার এমপি হচ্ছেন সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী। রয়েছেন বরেণ্য রাজনীতিবিদ ও অনেক আলোকিত ব্যক্তি। বহির্বিশ্বে রয়েছে জগন্নাথপুরের পরিচিত। আছে অনেক মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যময় ইতিহাস। সর্বক্ষেত্রে এ উপজেলাটি ঐতিহ্যবাহী। এতো সব অর্জন থাকা সত্ত্বেও জগন্নাথপুরের সামান্য একটু রাস্তার জন্য আজ সকল সুনাম ভেস্তে যেতে বসেছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে এ রাস্তাটি মেরামত করে জগন্নাথপুর বাসীকে লজ্জা থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান ভুক্তভোগী জনতা।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আবদুল মনাফ বলেন, পৌর শহরের প্রধান এ সড়কটি সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে। এখানে আমরা চাইলেও কিছুই করতে পারিনা। এরপরও তাদের অবহেলার কারণে কাজ না হওয়ায় পৌরবাসী সহ সর্বস্তরের জনতার ভোগান্তি লাঘবে ইতোমধ্যে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয়ে কয়েকবার সামান্য মেরামত কাজ করেছি। তবে সড়কটি ব্যস্ততম হওয়ায় মেরামতের কিছু দিন পর আবারো ভেঙে যায়। এখানে স্থায়ীভাবে কাজ করাতে হবে। এতো সামর্থ্য পৌরসভার নেই। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথপুরে সড়কের উক্ত স্থানে কাজের টেন্ডার হয়ে গেছে। আশা করছি আগামি মাস দেড় মাসের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে যাবে।
এছাড়া জগন্নাথপুর উপজেলার সকল রাস্তা-ঘাটের অবস্থা ও নাজুক। জগন্নাথপুর-সিলেট সড়কে মেরামত কাজ করা হলেও কাজ চলাকালীন অবস্থায় আবারো ভেঙে যাচ্ছে। জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ সড়কের ঘোষগাঁও ব্রিজের এপ্রোচ ভেঙ্গে গিয়ে এবং একই সড়কের পাইলগাঁও এলাকায় ভাঙ্গাবাড়ি নামক স্থানে রাস্তা ভেঙে কুশিয়ারা নদীতে চলে যাওয়ায় জন ভোগান্তির শেষ নেই।