তাহিরপুরে নিম্ন মানের বীজ ধান সরবরাহের অভিযোগ

29

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
ধান ফালাইলাম জালা তো অইলো না, জালার চারও তো আর নাই কিছু যে ফালাইমু, ধান তো ফালাইছি হিসাব কইরা, এখনতো মনে অইতাছে জালায় টান পরবো। (স্থানীয় ভাষায় জালা মানে ধানের চারা, চার মানে জমি) শনির হাওরপার উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম শুক্রবার সকালে হাওরে তার ধানের চারা জমি দেখে বাড়ি ফিরতে ফিরেত এ কথা গুলো বললেন একাধিক লোকজনের কাছে। শুধুমাত্র আবুল কালাম নয় একই রকম আক্ষেপের সুর শনির হাওরের কৃষক উজান তাহিরপুর গ্রামের নুরুল হুদার। তিনিও জানান ব্রি-আর ২৮ ও ব্রি-আর ২৯ বীজ ধান এ বছর গজিয়েছে কম। ফলে হিসেব করে বীজ তলাতে ধান বপন করলেও বোর রোপন মৌসুমে হয়তো তাদের আরও ধানের চারা কিনতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রি আর ২৮,ব্রি-আর -২৯ সহ বিভিন্ন জাতের বীজ ধান উপজেলার ৭ ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট বাজরে বিক্রি করছেন বিএডিসির নিযুক্ত ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা। কৃষকরাও স্থানীয় বাজার থেকে বীজ ধান ক্রয় করছেন বিএডিসির নিযুক্ত বীজ ডিলার ও বীজ বিক্রেতাদের কাছ থেকে। কৃষকদের অভিযোগ বিগত বছর তারা প্রতি ১০ কেজি বস্তা ওজনের ব্রি-আর ২৮ ও ২৯ ধান কিনেছেন ৩শ ৫০ টাকা দিয়ে,চলতি বছর তারা স্থানীয় বাজার তাহিরপুর,বালিজুরী,বাদাঘাট,শ্রীপুর বাজার থেকে ব্রি-আর ২৮ ধান ক্রয় করছেন ৪শ ৭০ টাকা এবং ২৯ ধান ক্রয় করছেন ৫শ ৫০ টাকা দিয়ে তার পরেও তারা ভাল মানের বীজ পাচ্ছেন না। ফলে বিগত বছর ফসল হারানো কৃষকরা স্বপ্ন বুননের পথে নতুন করে আবার হোছট খাচ্ছেন নি¤œ মানের বীজ ধান কিনে।
শনির হাওরপার মধ্য তাহিরপুর গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম তিনি বলেন, তিনি চলতি বছর ২০ কেয়ার জমিতে বোরো ধান রোপণ করবেন। সে হিসেবে তিনি বীজ ধান বপন করেছেন (৪ মন)১৬০ কেজি। ধানের মান ভাল না থাকায় ধান কম গজিয়েছে যে কারণে তিনি কিছুটা চিন্তিত আছেন, চারা ধানে তার সম্পূর্ণ জমি রোপণ হবে কি-না।
তাহিরপুর সদর বাজার বীজ ডিলার সমীরণ রায় বলেন, আমাদের কাছে কোন কৃষক অভিযোগ নিয়ে আসেনি। আমরা প্রথম দিকে একটু বেশী করে বীজ ধান এনেছিলাম পরবর্তীতে আর আনিনি।
একই বাজারে অপর এক ডিলার সাময়ুন কবির বলেন, বিএডিসি থেকে আমরা যে বীজ ধান পেয়েছি তাতে গজানোর সর্ব নি¤œ ক্ষমতা রয়েছে ৮০%। সেই সাথে কৃষকদের প্রক্রিয়াজাত করণে কিছু ত্র“টি থাকায় আরও কিছু পার্সেন্টিজ কমেছে।
তাহিরপুর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লিটন চন্দ্র পাল বলেন, প্রতিটি ধানের বস্তার প্যাকেটে নির্দেশনা রয়েছে সে নিয়মানুসারে ধান পক্রিয়জাত করলে সম্পূর্ণ ধান গজানোর কথা।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস ছালাম বলেন, দু’একজন কৃষকও আমাকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএডিসি বীজ কর্মকর্তা আওালদ হোসেন বলেন, ক্রাইসিস মুহূর্তে ভিন্ন পন্থায় কিছু বীজ ঢুকে স্থানীয় বাজারে। বিএডিসি যে সমস্ত বীজ সরবরাহ করে ডিলারদের মাধ্যমে তা ঠিক আছে। এর পরেও আমি মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিচ্ছি।