দক্ষ জনবল তৈরী

3

উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা ও সেবা খাতে প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ লোকের চাহিদা আছে। কিন্তু দক্ষ জনবলের অভাবে সেই চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। আবার বেকারের সংখ্যাও বাড়ছে। এই সঙ্কট দূর করতে হলে দক্ষ জনবল গড়ে তোলা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সরকারী-বেসরকারী খাতের সমন্বিত উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। এক্ষেত্রে সহযোগিতা দেবে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর। রবিবার এফবিসিসিআই আয়োজিত বিনিয়োগ, দেশীয় বাজার উন্নয়ন এবং রফতানি বৈচিত্র্যকরণের লক্ষ্যে দক্ষকর্মী ব্যবস্থাপক তৈরি সংক্রান্ত ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তারা এমন অভিমত তুলে ধরেন।
একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে চলেছে দেশ। শ্রমবাজারে চ্যালেঞ্জটা সবচেয়ে বেশি। এই চ্যালেঞ্জে সফল হতে হলে কর্মসংস্থানের চাহিদা ও জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বয় দরকার। তহলে কারিগরি ও বিশেষায়িত যোগ্যতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী বেরিয়ে আসবে। বর্তমান বিশ্বে এটা প্রমাণিত হয়েছে, কর্মমুখী ও ব্যবহারিক শিক্ষার শক্তিই হচ্ছে উন্নয়ন ও জাতি গঠনের আসল প্রেরণা, যা জাতীয় জীবনে অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।
বর্তমান জনবান্ধব ও গণমুখী সরকারের দেশব্যাপী নানাবিধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলেও প্রশাসনে দক্ষতা ও জনবল আশানুরূপ বাড়েনি। ফলে সরকারের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সঙ্গে তাল মেলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রায় সর্বস্তরের প্রশাসনকে রাজধানী থেকে তৃণমূল পর্যন্ত। গত তিন দশক বিশেষ করে বর্তমান সরকারের গত এক দশকে কর্মপরিধি বেড়েছে কয়েকগুণ। জনগোষ্ঠী বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। অথচ প্রশাসনে জনবল বেড়েছে মাত্র দশমিক ২৭ ভাগ। ফলে শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকা পর্যন্ত সুবিশাল জনগোষ্ঠীকে জনসেবা দিতে পদে পদে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
প্রয়োজনীয় দক্ষকর্মী সরবরাহের জন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন এখন মূল চ্যালেঞ্জ। এমন অভিমত দক্ষকর্মী ব্যবস্থাপক তৈরি সংক্রান্ত ভার্চুয়াল বৈঠকে আবারও উচ্চারিত হতে শোনা গেল। আমরা মনে করি শিক্ষাব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তনের সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণের কাজ এখনই শুরু করা চাই। একসময় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসবেই। বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণের আওতায় চলে এলে কোভিডপূর্ব পরিবেশ-পরিস্থিতি শতভাগ না হলেও অনেকটাই ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে। সেই সুবর্ণ নতুন দিনে দক্ষ জনবল তৈরিতে নতুন কাঠামোয় শিক্ষা প্রদানের উদ্বোধন হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।