১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকান্ডে জিয়াউর রহমান আসল খলনায়ক – প্রধানমন্ত্রী

12
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুজিব শতবর্ষ এবং বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘মুক্তির মহানায়ক’ শীর্ষক থ্রিডি ও ভার্চুয়াল চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ডিজিটালি উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকান্ডে জিয়াউর রহমানকে ‘আসল খলনায়ক’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করতে না পেরে তাঁকে খুন করা হয়। জিয়াউর রহমান শুধু জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে নয়, জাতীয় চার নেতা এবং একের পর এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ও সৈনিকদের হত্যার সঙ্গে জড়িত, খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় আসার পরে ঠিক একই কাজ করেছিলেন। জিয়া ১৫ আগষ্টের হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত, স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে খালেদা জিয়া ২১ আগষ্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা ঘটায়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রবিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দীর্ঘদিন তারা চেষ্টা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছ থেকে সরাতে। কিন্তু পারেনি। তাই তারা এ ধরনের হত্যাকান্ড (বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড) ঘটিয়েছে।
১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড ও ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার তুলনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকান্ডের কলঙ্কজনক অধ্যায়ের কয়েক বছর পর একইভাবে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মতো আরেকটি নারকীয় হত্যাযজ্ঞে একই চরিত্রে আবির্ভূত হয়। প্রথম ঘটনায় বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করা হয়। অন্যদিকে, দ্বিতীয় হত্যা পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল আমিসহ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জিয়াউর রহমানকে ‘আসল খলনায়ক’ হিসেবে অভিহিত করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জড়িতরা খুনী মোশতাককে ক্ষমতায় রাখেনি। আসল যিনি নায়ক, মানে খলনায়ক তিনি (জিয়া) চলে এলেন সামনে। তিনি হলেন জিয়াউর রহমান। মোশতাকের পতনের পর জিয়াউর রহমানই হয়ে গেলেন রাষ্ট্রপতি, একাধারে সেনাপ্রধানও।
বঙ্গবন্ধুর খুনীদের জিয়া ও খালেদা জিয়াদের পুরস্কৃত ও মদদ প্রদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়া যেমন জাতির পিতা হত্যার সঙ্গে জড়িত, জাতীয় চার নেতাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত, একের পর এক ক্যু করে সেনাসদস্যদের হত্যা করেছে, মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করেছে, তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে ঠিক একই ঘটনা ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যেমন সেই আবদুল আলিম, মাওলানা মান্নান থেকে শুরু করে শাহ আজিজদের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং উপদেষ্টা বানিয়েছিল, একইভাবে আমরা দেখেছি খালেদা জিয়া সেই নিজামী থেকে শুরু করে যারা একেবারে সরাসরি বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদেরকে মন্ত্রী বানিয়েছিল, খুনী রশীদ এবং হুদা- তাদের ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে এনে বিরোধী দলের নেতার আসনে বসায়।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের কথা স্মরণ করে আবেগজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪৫ বছর পার হয়ে গেছে। এটা ভাবতে আমাদের অবাক লাগে। যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিলেন, মুক্তি এনে দিলেন, আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিলেন, একটা জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা এনে দিলেন- তাঁকেই (বঙ্গবন্ধু) হত্যা করা হয়েছিল এ দেশের মাটিতে। বারবার মৃত্যুর মুখে তিনি পড়েছেন। কিন্তু কখনও কোনমতেই জাতির যে আকাক্সক্ষা, জাতির জন্য তিনি যে কিছু করতে চেয়েছেন, এই বাঙালী জাতির জন্য তিনি জীবনকে যে উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁর আদর্শ সামনে নিয়েই তিনি এগিয়ে গেছেন। কখনও পেছন ফিরে তাকাননি, মৃত্যুকে পরোয়া করেননি। জেল-জুলুম-অত্যাচার কোন কিছুর তিনি পরোয়া করেননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই আদর্শ ও লক্ষ্যকে ধ্বংস করাই ছিল জাতির পিতাকে হত্যার উদ্দেশ্য। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছে বাঙালীরা, এটা তারা মানতে পারেনি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানের পাশে ছিল তারাও বাংলাদেশের অভ্যুদয় বা বাংলাদেশের বিজয়কে মানতে পারেনি। কাজেই ষড়যন্ত্র চলছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের যে, আমাদের দেশের ভেতরেই অনেকে বোধহয় সেটা বুঝতে পারেননি।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং প্রতিবেশী দেশটির জনগণ বাংলাদেশের পাশে থাকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (ইন্দিরা গান্ধী) বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য সারাবিশ্বে যেভাবে প্রচার করেছিলেন এবং আমাদের বন্ধুপ্রতিম যেসব দেশ আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন দিয়েছিল, তারাও সেই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মুক্তি চায় এবং এমনকি যারা আমাদের বৈরিতা করেছিল, সেসব দেশের মানুষও কিন্তু আমাদের এই মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন দেয় এবং বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চায়। বিশ্বব্যাপী এই যে একটা জনমত সৃষ্টি হয়, সবকিছু মিলিয়ে কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে মুক্তি দেয়া হয় এবং তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
১৫ আগষ্ট বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা স্বাধীনতার পর জাতির পিতার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করেন। সেই সময় প্রয়োজন ছিল এদেশের সকল মানুষের একাত্ম হয়ে বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়ানো এবং সহযোগিতা করা। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য- তাঁকে হত্যা করার এই প্রক্রিয়াটা শুরু করার জন্য দেখা গেছে, আমাদের দলের অভ্যন্তরে যেমন নানা ধরনের খেলা শুরু হয়, কিছু লোক সব সময়ই যারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীনও দালালি করতে প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি জানা-অজানা বা যেভাবে হোক কিছু লোক নানা ধরনের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। যারা সেই সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণের পর সমালোচনা করেছে বা লিখেছে- হ্যাঁ সমালোচনার প্রয়োজন আছে। কিন্তু এমনভাবে তাদের লেখনী এবং তাদের কার্যকলাপ ছিল এবং পরিকল্পিতভাবে সারা বাংলাদেশে অপবাদ ছড়ানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, তাদের (ষড়যন্ত্রকারী) উদ্দেশ্যটাই ছিল যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে জনপ্রিয়তা সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে, যে গ্রহণযোগ্যতা- সেটা নস্যাৎ করা। সেটা যখন তারা একান্তভাবেই পারেনি, তারপরই কিন্তু তারা এই হত্যার পথ বেছে নেয়। বিবিসিকে দেয়া বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্নেল ফারুক ও কর্নেল রশীদ যে সাক্ষাতকার সেখানে দিয়েছিল, সেখানে তারা এই কথাই বলেছিল যে- দীর্ঘদিন তারা চেষ্টা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছ থেকে সরাতে। কিন্তু জনগণের মন থেকে মুছতে পারেনি। তাই তারা এই ধরনের হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান যে জড়িত এটা কর্নেল ফারুক, রশীদ তারা নিজেরাই বলেছে, জিয়া সব সময় তাদের সঙ্গে ছিল। খন্দকার মোশতাক অবৈধভাবে যখন ক্ষমতা দখল করল, নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিল এই খুনীদের সঙ্গে নিয়েই। এই খুনীরাই অস্ত্র হাতে তার পাশে, অর্থাৎ খুনী রশীদ, ফারুক, ডালিমসহ এই গং তাদের সঙ্গে ছিল। জিয়াউর রহমানকে তখন সেনাপ্রধান করা হলো। জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করে খুনী মোশতাক এটাই প্রমাণ করে দিল যে, তারা একই সঙ্গে ছিল এবং একই সঙ্গে চক্রান্তে তারা সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু খুনী মোশতাক বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, পারেনি এটা খুব স্বাভাবিক।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমরা ইতিহাসের দিকে যদি তাকাই, সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে বেইমানি করেছিল মীরজাফর। ব্রিটিশ বেনিয়ার দল তাকে ব্যবহার করেছিল। সেও কিন্তু তিন মাস ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। দুই মাসের কিছু সময় পরে তাকে বিদায় নিতে হয়েছিল। মোশতাকও ঠিক তাই। যাদের প্ররোচনায় সে বেইমানিটা, মুনাফেকিটা করেছিল, জাতির পিতার হত্যাকান্ডে মদদ দিয়েছিল, তারা কিন্তু তাকে ক্ষমতায় রাখেনি। ক্ষমতার আসল যিনি নায়ক, মানে খলনায়ক, সেই চলে এলো সামনে। সে হলো জিয়াউর রহমান।
খন্দকার মোশতাকের পর জিয়াউর রহমান একাধারে রাষ্ট্রপতি এবং সেনাপ্রধান হন। সেই ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন- এ থেকে কী প্রমাণিত হয়? জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসায় পর দেশের সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে, সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের হত্যা করে, ৩ নবেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনা ঘটায়, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। যারা পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল তাদের দেশে ফিরিয়ে আনে, ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত, নারী নির্যাতন যারা করেছে- তাদের মন্ত্রী, উপদেষ্টা বানায়।
সে সময় অনেকে কেন জিয়াউর রহমানকে সমর্থন দিয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর ‘কোনদিন পাননি’ মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে, তারা কি এটা পারে? আর এখনও দেখা যায় যে কিছু কিছু লোক, এরা সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করে। এই দেশে যত রক্তপাত, যত হত্যাকান্ড, যা কিছু- সবই তো সেই থেকে শুরু। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই গভীর চক্রান্ত কাজ করছিল। পাকিস্তানীরা পরাজয় মানতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানীদের পক্ষে ছিল তারা অভ্যুদয়, বাংলাদেশের বিজয় মানতে পারেনি। তখন থেকেই ষড়যন্ত্র চলছিল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা এবং এদেশের মানুষের হৃদয়ে তাঁর প্রতি গভীর ভালবাসার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই কয়েকটা খুনী, বেইমান বা মুনাফেক ছাড়া অগণিত জনগণ জাতির পিতার জন্য এখনও কাঁদে বঙ্গবন্ধুর নামটা তারা মুছে ফেলার এত চেষ্টা করার পরও। ২১ বছর চেষ্টা করেছে, কিন্তু সেই নাম (বঙ্গবন্ধু) মুছতে পারেনি। যতই চেষ্টা চালাক, আজকে শুধু বাংলাদেশে নয়, বাংলাদেশ ছাড়িয়ে আজকে বিশ্বব্যাপী জাতির পিতার নাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম উজ্জ্বল।
দেশকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যেন কেউ খাদ্যে কষ্টে না পায়, চিকিৎসা সেবা যেন পায়, তাদের জীবনটা যেন অর্থবহ হয়। সেই প্রচেষ্টাই আমরা চালাব। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষায়। জাতির পিতা সবসময় এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারাদেশে বৃক্ষরোপণ করে সবুজ শ্যামল বাংলাদেশকে আরও সবুজ, আরও শ্যামল করে গড়ে তোলা এবং দেশকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করাই আমাদের লক্ষ্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে কাজটা করতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁর যে স্বপ্ন ছিল, সেটা যেন আমরা পূরণ করে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি।
স্মরণসভায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রান্ত থেকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। সভায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করেন সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। অনুষ্ঠানে মুক্তির মহানায়ক শীর্ষক ভার্চুয়াল চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকাবহ যন্ত্রসঙ্গীত দিয়ে সভা শুরু হয় এবং শ্রদ্ধাসঙ্গীত দিয়ে শেষ হয় স্মরণসভা।