কাজিরবাজার ডেস্ক :
সৌদি আরবে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি টাকা দুর্নীতি ও আত্মসাতের তদন্তে ২০১ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের আটকের বিষয়টি দুর্নীতির বিরোধী ব্যাপক তদন্তের অংশ বলেছেন সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সৌদ আল-মোজেব এই তথ্য জানান। শুক্রবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর প্রকাশ করে।
অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সৌদ আল-মোজেব এক বিবৃতিতে জানান, শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে মোট ২০৮ জনকে আটক করা হয়েছিল। পরে সাতজনকে কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই মুক্তি দেয়া হয়েছে। তিনি কারো নাম প্রকাশ করেননি। তবে আটককৃতদের মধ্যে কয়েক ডজন প্রিন্স, একাধিক মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী রয়েছেন।
তিনি আরো জানান, দুর্নীতির বিষয়ে তাদের কাছে যথেষ্ট পোক্ত প্রমাণ রয়েছে। তবে দুর্নীতি বিরোধী এই অভিযানের কারণে স্বাভাবিক ব্যবসায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে তিনি জোর দিয়ে বলেন। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবই জব্দ করা হয়েছে।
সৌদি বাদশাহ সালমান সম্প্রতি এক ডিক্রির মাধ্যমে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে নতুন দুর্নীতি দমন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। এরপর ১১ জন প্রিন্স, চারজন মন্ত্রী এবং ডজনখানেক সাবেক মন্ত্রীকে আটক করার খবর আসে।
সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সৌদ আল-মোজেব বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে তদন্তের ভিত্তিতে আমরা ধারণা করছি, কয়েক দশকে ঘুষ, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে অন্তত ১০০ বিলিয়ন ডলার অপব্যবহার হয়েছে।’
এই তদন্তে কয়েক ডজন প্রিন্স, একাধিক মন্ত্রী ও ধনকুবেরকে আটকের কথা গত সপ্তাহে ঘোষণা করে সৌদি কর্তৃপক্ষ, যাকে যুবরাজ মোহাম্মদের প্রভাব আরও সুসংহত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষের এই তদন্তে কার্যক্রম প্রতিবেশী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতেও বিস্তৃত হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৯ সৌদির ব্যাংক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য জানাতে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।
বিলিয়নেয়ার প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন তালাল ও ন্যাশনাল গার্ডের সাবেক প্রধান প্রিন্স মেতিব বিন আবদুল্লাহসহ এই ১৯ জনের প্রায় সবাইকে আটক করা হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সৌদি আরবের প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের ছেলে মেতিবকে এক সময় সিংহাসনের অন্যতম দাবিদার বলে মনে করা হত। রাজপরিবারে আবদুল্লাহর বংশধরদের মধ্যে কেবল তিনিই সৌদি সরকারের সর্বোচ্চ স্তরে ছিলেন।
যুবরাজ্যের নেতৃত্বে গঠিত দুর্নীতি দমন কমিটিকে গ্রেফতারি পরোয়ানার পাশাপাশি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারিরও ক্ষমতা দেয়া হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।