আদালতপাড়া এলাকায় অপরাধী চক্র সক্রিয়

49

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
সিলেট নগরীর আদালতপাড়াসহ তার আশপাশ এলাকায় দালাল ও পকেটমারসহ ভাসমান পতিতা এবং বিভিন্ন Photo-1ধরনের অপরাধীদের অবাধ বিচরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আদালতের প্রবেশপথের লন্ডনীর পানের দোকানকে ঘিরে মাদক, পকেটমার, ছিনতাই ও মলমপার্টিরা এখন সক্রিয়।
তারা প্রতিদিন নির্ভয়ে মানুষজনের পকেট মারছে, ছিনতাই করছে ও পতিতাদের কাছে উটতি বয়সী যুবক ও স্কুল/কলেজ পড়–য়া ছাত্ররা প্রতারিত হচ্ছে। সারা রাত অবধি আদালতপাড়ার প্রথম গেইট সংলগ্ন লন্ডনীর পানের দোকানীর নেতৃত্বে এসব অপকর্মের বিচরণ লক্ষ্যণীয়। একটি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশের লাইনম্যানকে ম্যানেজ করে অপরাধীরা নিরাপদে তাদের অপকর্ম চালাচ্ছে।
ভুক্তিভোগিরা দাবী করছেন, যদি অচিরেই আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসব অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করতে অভিযানে না নামে তাহলে আদালতের প্রবেশমুখের পরিবেশ অনেকটা নষ্ট হয়ে যাবে। অপরাধীরা কয়েকটি গ্র“পে ভাগ হয়ে ওই এলাকায় অপরাধ কর্মকান্ড করে বেড়ায়। তখন অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের আর কিছুই করার থাকে না। শুনেছি একাধিক কোর্ট লকাপের পুলিশ সদস্যদেরও ওই অপরাধী চক্রের কাছে মানিব্যাগ খোয়াচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালতপাড়ার তিনটি প্রবেশ ফটক আছে। পুরো আদালতপাড়ার সামন ঘিরে ফুটপাতে কাপড়ের ও বিভিন্ন ভাসমান দোকান রয়েছে। তাই ফুটপাত দিয়ে চলাচলের পরিবেশ নেই। এই ফটকগুলোর সামনে ও সীমানা প্রাচীর ঘিরে বসেছে নানা জঞ্জাল। ফুটপাতের নিচের সারিতে পানের দোকান, গাছগাছাড়ির ওষুধের দোকান, ভাসমান মানুষের জটলা। প্রকাশ্যে ডজন খানেক পতিতারা খদ্দেরকে নিয়ে টানা-হেঁচড়া এসবের মধ্যে ওৎপেতে থাকে পকেটমারসহ অপরাধ চক্রের সদস্যরা। এরা আদালত পাড়ায় আগতদের পকেট কাটছে। কেউ ইচ্ছে করেই ধাক্কা দিয়ে গায়ের ওপর পড়ছে।
স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, ক’দিন আগে তিনি আদালতের ভেতরে খবর সংগ্রহ করতে যান। রিপোর্ট সংগ্রহ করে আদালতের প্রথম গেইট দিয়ে বেরিয়ে আসার পথে পকেটমারা তার মানিব্যাগ নিয়ে যায়। তিনি টেরই পাননি কিভাবে মানিব্যাগটা নিয়ে গেলো। তখন আশ্চার্য মনে হলো। পরে অনেকের কাছে ধর্ননা দিয়ে ও খোঁজাখুঁজি করে মানিব্যাগটা পাননি।
বেশ কজন ভুক্তভোগী জানালেন, আদালতপাড়ার ভেতরে বড় গাছতলার নিচে সোহেল নামের একজনের অধিনে আছে কিছু দালাল। এরা আগত বাদি-বিবাদীদের কাছে ভিড়ে তাদের প্রতারণা করছে। টাকা নিচ্ছে, কাজ করছে না। একইভাবে বিআরটিএ অফিসে আরও একটি দালাল চক্র। র‌্যাব প্রায়ই এদের অভিযান দিয়ে গ্রেফতার করে। কিছুদিন দালালমুক্ত থাকে বিআরটিএ কার্যালয়। বর্তমানে আবারো এসে ভিড় করছে দালালরা।
এ ব্যাপারে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম জানান, সুরমা মার্কেট ও আদালতপাড়ার আশপাশ এলাকায় অপরাধ প্রবণতা হওয়ায় প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। তখন কয়েকদিন ভাল গেলে আবার তাদের উৎপাত বেড়ে যায়। এভাবে একাধিকবার অভিযান চালালেও তাদেরকে দমন করা হিমশিম খেতে হয়। তিনি আরো বলেন, এখন আদালতপাড়ার প্রথম গেইটের আশপাশ এলাকায় সকাল-বিকেল অভিযান চলছে। এখনই সিরা ফোরকে পাঠিয়ে দিচ্ছি বলে জানালেন তিনি।