জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই হবে ত্রিমুখি

57

জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে এবার মেয়র পদে ত্রিমুখি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দেয়। যদিও তফসিল ঘোষণার আগ থেকেই প্রার্থীরা তাদের প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে যান। এই প্রথম বারের মতো স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়া নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে আলাদা আমেজ বিরাজ করছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ থেকেই প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় প্রার্থীরা নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি।
জানা গেছে, এবারের পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মোট ৮ জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে ৫ জন আওয়ামীলীগ ও ৩ জন বিএনপি সমর্থিত। তারা হচ্ছেন, পৌর এলাকার হবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পৌর মেয়র যুক্তরাজ্য প্রবাসি আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ ( আ’লীগ), ইকড়ছই গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসি মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া (আ’লীগ), শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পৌর কমিশনার লুৎফুর রহমান (আ’লীগ), ইসহাকপুর গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসি আলহাজ্ব শাহ নুরুল করিম (আ’লীগ), ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসি আব্দুল হান্নান (আ’লীগ), হবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আবিবুল বারী আয়হান (বিএনপি), জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসি রাজু আহমদ (বিএনপি) ও লুদরপুর গ্রামের বাসিন্দা আলফুজ্জামান বকুল (বিএনপি)। তাদের মধ্যে আওয়ামীলীগ সমর্থিত আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ, মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া ও লুৎফুর রহমান হচ্ছেন হেভিওয়েট প্রার্থী। তারা অতীতে জনপ্রতিনিধিত্ব করায় তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিএনপি সমর্থিত আবিবুল বারী আয়হান, রাজু আহমদ ও আলফুজ্জামান বকুল নতুন মুখ। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করতে গিয়ে ৩ হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে আওয়ামীলীগ। তবে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী বর্তমান পৌর মেয়র আক্তার হোসেন এবার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করায় যোগ্য প্রার্থী সংকটে পড়েছে বিএনপি। তবে এবারের নির্বাচনে সম্ভাব্য সকল মেয়র প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ইমেজ রয়েছে। অনেকে দলীয় ইমেজ, অনেকে ব্যক্তি ইমেজ আবার অনেকে উভয় ইমেজকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের মধ্যে সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ এলাকায় দানশীল ব্যক্তি হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এছাড়া অতীতে জনপ্রতিনিধিত্ব করায় এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন এবং জগন্নাথপুর পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ হিরন মিয়ার ছেলে হিসেবে ও অতীতে জনপ্রতিনিধিত্ব করায় এলাকার তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। লুৎফুর রহমান ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা ও অতীতে জনপ্রতিনিধিত্ব করায় এলাকায় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। আলহাজ্ব শাহ নুরুল করিম শিক্ষানুরাগী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। আব্দুল হান্নান বিগত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করায় এলাকায় পরিচিতি রয়েছে। আবিবুল বারী আয়হান সাবেক কৃতি ফুটবলার হিসেবে এলাকায় পরিচিত। রাজু আহমদ ও আলফুজ্জামান বকুল দলীয় সক্রিয় ও ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত। জনসেবায় তারা সকল প্রার্থীর কম-বেশি ভূমিকা রয়েছে। ভোটাররা জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ৩ হেভিওয়েট প্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ, মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া ও লুৎফুর রহমানের মধ্যে ত্রিমুখি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দলীয় প্রার্থী হবেন একজন। বাকিরা যদি বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন তাহলে এ অবস্থার সৃষ্টি হবে। আর দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে সকলে সহযোগিতা করলে অনায়াসে আওয়ামীলীগের প্রার্থী নির্বাচিত হবেন। এদিকে-বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রাথীকে অন্য প্রার্থীরা সহযোগিতা করলে হয়তো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে। তা না হলে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সামনে বিএনপির প্রার্থী দাঁড়াতেই পারবে না। সব মিলিয়ে তফসিল ঘোষণার পর জগন্নাথপুরে আরো জমে উঠেছে নির্বাচনী আমেজ।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার জানান, আগামী ৩ ডিসেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা, ৫ ও ৬ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই ১৩ ডিসেম্বর প্রত্যাহার ও ৩০ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।