কয়লা আমদানী বন্ধ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়ছে সম্ভাবনাময় তামাবিল শুল্ক ষ্টেশন

52

গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাটের তামাবিল শুল্ক ষ্টেশন কয়লা ও পাথর আমদানী রপ্তানী (যাত্রী ভ্রমণ কর) সহ বিভিন্ন খাত থেকে প্রতি বছর সরকারের কোষাগারে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের যোগান দিয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েক মাস ধরে কয়লা আমদানী বন্ধ থাকার কারণে মুখ থুবড়ে পড়ছে সম্ভাবনাময় তামাবিল শুল্ক ষ্টেশন।
জানা যায়, নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিক থেকে এই শুল্ক ষ্টেশন দিয়ে কৃষি পণ্য, ফলমূলসহ কয়লা ও পাথর আমদানী রপ্তানী শুরু হয়। তারপর থেকে কৃষি পণ্য ও ফলমূল আমদানী রপ্তানীর হার কমতে থাকলেও ক্রমাগতভাবে বছরের পর বছর বাড়তে থাকে কয়লা ও পাথর আমদানীর পরিমাণ। এরই ধারবাহিকতায় বর্তমানে দেশের যত ইটভাটা আছে তার জ্বালানী হিসেবে ব্যবহারের জন্য যে পরিমাণ কয়লার প্রয়োজন হয় এর ৬০ শতাংশই পূরণ করে আসছে তামাবিল শুল্ক ষ্টেশন দিয়ে আমদানীকৃত কয়লা। প্রায় এক বছর ধরে এই শুল্ক ষ্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানী বন্ধ রয়েছে। যার কারণে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রতিদিন ৫০০-৬০০টি গাড়ি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও কয়লা আমদানী বন্ধ থাকায় গত কয়েক মাস ধরে এর তুলনায় অনেক কম পণ্যবাহী গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
তামাবিল শুল্ক ষ্টেশনের কাস্টমস কর্মকর্তাদের তথ্যানুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হয় ৩৭,৭৯,৩৪,০০০ টাকা (৮,৭২,৩২৪মেঃটন)। কিন্তু আয়ের লক্ষমাত্রা ছিল ৪৫,৬৯,৬২,০০০ টাকা। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৭৯,০২৮,০০০ টাকা কম রাজস্ব আয় হয়।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হয় ৪৪,৭২,৮৩,০০০ টাকা (১১,৩৭,৯১০.৮মেঃটন)। কিন্তু আয়ের লক্ষমাত্রা ছিল ৩৮,৯৫,৫৬,০০০ টাকা। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৫,৭৭,২৭,০০০ টাকা বেশি রাজস্ব আয় হয়।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হয় ১৩,০০,০০,০০০ টাকা। কিন্তু আয়ের লক্ষমাত্রা ছিল ৪৯,৭৮,৩০,০০০ টাকা। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৩৬,৭৮,৩০,০০০ টাকা কম রাজস্ব আয় হয়।
চলতি অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায়ের পরিমান বেশী হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে এই ষ্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানী বন্ধ থাকার কারণে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য মাত্রায় পৌছানো যাবে কিনা এনিয়ে সন্দিহান তামাবিল শুল্ক ষ্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
এব্যপারে তামাবিল কয়লা পাথর আমদানী কারক  গ্র“পের সভাপতি গোলাম নবী ভূঁইয়া (নবু) বলেন, তামাবিল শুল্ক ষ্টেশন থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব জমা হচ্ছে সরকারী কোষাগারে। পর্যায়ক্রমে এই শুল্ক ষ্টেশনের আমদানী রপ্তানী কার্যক্রম বৃদ্ধিও পাচ্ছে ব্যাপক হারে। কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরীন সমস্যার কারনে সাম্প্রতিক কালে কয়লা আমদানী বন্ধ রয়েছে, যার কারণে বিপাকে রয়েছে ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি সরকার ও বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব আয় থেকে।
তামাবিল শুল্ক ষ্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা অসিল কুমার বড়–য়া এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, এই শুল্ক ষ্টেশনে রাজস্ব বৃদ্ধির হার পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কয়লা আমদানী বন্ধ থাকায় সরকার কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে তামাবিল শুল্ক ষ্টেশন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার লোকসানের সম্মুখীন হতে পারে।