দুশ্চিন্তায় ও এবং এ লেভেল পরীক্ষার্থীরা

43

exam_bg_413251003কাজিরবাজার ডেস্ক :
ফাহিম শাহরিয়ারের মন খারাপ। আগামী ৫ মে থেকে শুরু হচ্ছে তার ‘ও’ লেভেল পরীক্ষা। উইরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুল (ইএসএস) থেকে পরীক্ষা দেবে ফাহিম। কিন্তু চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়েই তার যতো চিন্তা। কারণ এরআগে এসএসসি পরীক্ষা হরতালের জন্য ঠিক সময়ে হয়নি। দফায় দফায় পিছিয়েছে ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষা। ফাহিমের ভয়-তার পরীক্ষার সময় না জানি এ অবস্থা হয়!
শুধু ফাহিমই নয়, চলমান হরতাল-অবরোধে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে দেশের ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের প্রায় ৩০ হাজার পরীক্ষার্থী-অভিভাবক। আগামী ৫ মে থেকে শুরু হচ্ছে ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত এ পরীক্ষা। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে একযোগে শুরু হবে এ পরীক্ষা।
চলমান অস্থিতিশীল অবস্থার অবসান না হলে ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের পরীক্ষার্থীদের ভাগ্যে কী আছে তা কেউ বলতে পারছেন না। এর আগেও হরতালে ‘এ’ এবং ও লেভেলের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা চলমান অবরোধ শুরু হয়েছিল চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে। সেটি এখনও অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ১৫ জানুয়ারি থেকে দফায় দফায় চলছে হরতাল। এ অবস্থায় ৫ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেলের পরীক্ষার সময় হরতাল কর্মসূচি থাকবে কি না তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে বেগ পেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মানসিক চাপ তো রয়েছেই।
সাদিয়া আক্তার রিয়া নামে এ লেভেল পরীক্ষার্থী জানান, ‘দেশের যে অবস্থা তাতে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। পরীক্ষা কি ঠিক সময়ে হবে না কি পরিবর্তন হবে সেটিও বুজতে পারছি না।’
রিয়া বলেন, ‘মানসিক চাপে পড়ালেখা ভাল হচ্ছে না। প্রস্তুতি নিতে বেশ সমস্যা হচ্ছে।এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মতো অবস্থা যেন আমাদের না হয়।’
এর আগে ২ ফেব্র“য়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হরতাল-অবরোধের কারণে ৬ ফেব্র“য়ারি থেকে এ পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর দফায় দফায় পরিবর্তন হয়েছে পরীক্ষাসূচি। ফলে ভোগান্তির অন্ত ছিল না ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীর।
ব্রিটিশ কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে ইংরেজি মাধ্যমের পরীক্ষাগুলো হয়ে থাকে দু’টি আন্তর্জাতিক বোর্ডের অধীনে। যে কোনো পরীক্ষা বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে শেষ করার ব্যাপারে বোর্ডগুলোর নির্দেশনা রয়েছে।
সাধারণত ক্যামব্রিজ বোর্ডের অধীনে সকালের পরীক্ষাগুলো বেলা ১১টা থেকে এবং বিকালের পরীক্ষাগুলো বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়। এ ছাড়া এডেক্সেল বোর্ডের অধীনে পরীক্ষাগুলো দুপুর ২টা এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে থাকে। হরতালের সময় পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজার আহসানুল আজাদ বলেন, ‘হরতালের দিনগুলোতে ক্যামব্রিজ ও এডেক্সেল উভয় বোর্ডের পরীক্ষাগুলো নিয়ে আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটিই আমরা অনুসরণ করি।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা পরিবর্তন হবে কি হবে না, তা আমরা পরীক্ষা চলাকালীন সময়ের পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত নেবো। এটি এখনই বলা যাচ্ছে না। আমাদের হাতে এখনও অনেক সময় আছে।’
বাংলাদেশে ‘ও’ লেভেল আর ‘এ’ লেভেলের আনুমানিক সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে প্রাইভেট পরীক্ষার্থীও রয়েছে। এ বছর ‘ও’ লেভেলের পরীক্ষা শুরু হবে ৫ মে থেকে। আর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ১২ জুন। আর ‘এ’ লেভেলের পরীক্ষা শুরু হবে ৫ মে। আর শেষ হবে ১৯ মে।