মৌলভীবাজারে সবজির স্তুপ থাকলেও ক্রেতা নেই

57

06-04-12-Bazar-3শ্রীমঙ্গল থেকে সংবাদদাতা :
সবজির স্তুপ থাকলেও ক্রেতা নেই। কয়েকজন ক্রেতা যেন অযথাই করছেন হাটাহাটি। সবজির দাম কমলেও আড়তে আসা পাইকাররা নিতে চাচ্ছেন না তেমন মালামাল। হরতাল অবরোধে কাঁচাবাজারে তাই দিনদিন ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। ক্রেতাহীনতায় ভোগছে বিক্রেতারা। টানা এ হরতাল অবরোধ থাকায় গ্রাম ও আশ-পাশ থেকে আসতে পারছে না সাধারণ ক্রেতা। তাই দিনদিন লোকসান গুণতে হচ্ছে বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ীসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
মৌলভীবাজার শহরের বেরিরপাড়স্থ কাচামালের আড়তে ৯ ফেব্রয়ারি সোমবার সরেজমিন গেলে দেখা যায় বিভিন্ন রকমের কাঁচামালের স্তুপ। কিন্তু এখানে স্তুপ থাকলেও তুলনামূলকভাবে বিক্রেতা কম রয়েছে। বিক্রি না হওয়ায় বিভিন্ন মালামালে পচন ধরেছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী। এদিকে দিনমজুরদের কাজ না থাকায় তারা সবজি কিনাতো দূরের কথা চাল কিনে খাওয়াই কঠিন হয়ে পরেছে। শহরের আড়ৎ, পশ্চিমবাজারস্থ কাঁচাবাজার ও চৌমোহনাস্থ টিসি মার্কেট ঘুরেও এ চিত্র পাওয়া যায়।
জানা যায়, টানা হরতাল অবোরধ থাকার কারণে যানবাহনের অভাব রয়েছে। এজন্য বাইরে থেকে পুরোপুরীভাবে মালামাল আমদানী সম্ভব না হলেও যেগুলো আনা সম্ভব হচ্ছে সেগুলোই বিক্রি করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হরতাল অবরোধে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ ও সহিংসতার ভয়ে সাধারণ ক্রেতা বাজারে আসছে না। এ জন্য পচনের ভয়ে কম দামে বিক্রি করতে চাইলেও তা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তারা।
অবরোধ পূর্বকালীন সময়ে ব্যবসায়ীরা যে বেচা-বিক্রি করতে পারতেন বর্তমানে তার অর্ধেক কমে গেছে। পূর্বে ফুলকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সিমে দাম ৬০ টাকা থেকে ৩০ টাকায়, টমেটো ৩০ থেকে ১৮ টাকায়, আলু ২৮ টাকা থেকে ২২ টাকায়, গাজর ৫০ থেকে ২৫ টাকায়, ৬০ থেকে ৩০ টাকায়, ধনেয়া পাতা ৬০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবকিছুর দাম কমলেও বেড়েছে বেগুন ও হাঁসের ডিমের দাম। পূর্বে বেগুন ৩০-৩৫ টাকা বিক্রি হলে বর্তমানে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে হাঁসের ডিমের দাম পূর্বে ৩৬ টাকা থাকলেও বর্তমানে ৪২ টাকায় পৌঁছেছে।
এগুলো কেন বেড়েছে এমন প্রশ্নের উত্তর ব্যবসায়ীরা জানান, এগুলোর বেশিরভাগ ই আমাদের শহরের বাইরে থেকে আমদানী করতে হয়। পরিবহন ব্যবস্থার অভাবে তা আর আমদানী সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে হতে পারে বলে ধারনা করছেন ব্যবসায়ীরা।
ভূষিমাল ব্যবসায়ী সমিরণ বলেন, অবরোধ হরতালে আমাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। বেচা-বিকি না থাকার কারণে নিজেই চলা কঠিন হয়ে পরেছে। অন্যদিকে দোকানের কর্মচারীদের বেতন, খাওয়া দাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি। এভাবে হরতাল অবরোধ থাকলে ভবিষ্যতে খেয়ে বাঁচাও কঠিন হবে।
সবজি কিনতে বাজারে আসা শফিক মিয়া বলেন, বাজারে সবজির দাম কমলেও আমরাতো দিনমজুর। আমাদের কাজ নাই এ জন্য শুধু চাল কিনেই খেতে পারছি না।
টিসি মার্কেটের সবজি ব্যবসায়ী আতাউর রহমান বলেন, অবরোধ হরতাল থাকার কারণে ক্রেতা কম আসে। তাই বিক্রি হচ্ছে না। এ নিয়ে খুবই সংকটে আছি। মাল থাকতে থাকতে প্রায় মালে পচন ধরেছে।
এভাবে অবরোধ থাকলে আগামীতে আমাদের আরো ক্ষতির দিকে যেতে হবে। পূর্বে যেখানে আমরা ৬ হাজার টাকা দিনে করতে পারলেও বর্তমানে ২ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব হয় না।