ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের পাত্তা না দেওয়ায় ॥ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কানাইঘাট থানার ওসির অপসারণ দাবী, গভীর রাতে মিছিল

59

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
ভুক্তভোগী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সমস্যা নিয়ে থানায় বিভিন্ন সময়ে যাওয়ার পরও কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরী কোন সহযোগিতা করেন না এমন অভিযোগ এনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তার অপসারণ দাবী করে কানাইঘাট পৌর শহরে মিছিল করেছে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা। গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরে অনুষ্ঠিত মিছিল পরবর্তী পথসভায় ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরীকে দুর্নীতিবাজ ও বিএনপি জামায়াত জোটের আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতা উল্লেখ করে তার অপসারণ দাবী করে পৌর আ’লীগের আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় অতচ ভুক্তভোগী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সমস্যা নিয়ে থানায় গেলে ওসি আমাদের কথা শুনেন না। তিনি দুর্নীতিবাজদের নিয়ে ব্যস্ত থেকে লুটপাট করে যাচ্ছেন। এটা আর চলতে দেওয়া হবে না। ওসিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কানাইঘাট থেকে চলে যেতে হবে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম রানা তার বক্তব্যে বলেন, দুর্নীতিবাজ কোন সরকারী কর্মকর্তা কানাইঘাটে থাকতে পারবেন না। যারা লোভাছড়া পাথর কোয়ারী ও জলমহাল নিয়ে দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কেএইচএম আব্দুল্লাহ, নসির উদ্দিন প্রধান, খলিলুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বায়ক আজমল হোসেন, আ’লীগের সদস্য মাহবুবুর রহমান, যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মীর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাব উদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা আছাদ উদ্দিন, ইয়াহিয়া ডালিম, আব্দুর রহমান প্রমুখ
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর সাথে তার অপসারণ দাবী করে মিছিলের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেসব অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে মিছিল করা হয়েছে তার কোনটি সত্য নয়। উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা যখনই কোন অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেন তা তিনি নিজে তদারকি করে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করে থাকেন। বিষয় হচ্ছে সম্প্রতি থানা পুলিশ ভারত থেকে চোরাই পথ দিয়ে আসা একটি অবৈধ দামি মোটর সাইকেল আটক করে। পরবর্তীতে জিডির মাধ্যমে বিষয়টি এস.পি স্যারকে জানানো হয় এবং মামলা রুজু করা হয়। মোটর সাইকেলটি আটকের কয়েকদিন পর থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য পৌর আ’লীগের আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন আমাকে বেশ কয়েকবার বলেন। আমি বিষয়টি মামলাধীন আছে বলার পরও তিনি আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হন। এছাড়া জামাল উদ্দিন উপজেলার বাটইশাইল গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে একটি পক্ষ প্রবাসীর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ঘর পুড়ানোর একটি দরখাস্ত থানায় দাখিল করে। অভিযোগটি কয়েক বার পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত করে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তারপরও অভিযোগটি রেকর্ড করার জন্য জামাল উদ্দিন আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু আমি নিরীহ প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি রেকর্ড করিনি। এছাড়া কানাইঘাট বাজারের শাহজালাল রেস্টুরেন্টের পিছনে অবস্থিত একখন্ড দামি ভূমি জবর দখল করতে সহযোগিতা না করা সহ আইনশৃঙ্খলা কর্মকান্ডে বিঘœ ঘটে এমন অবৈধ তদবির অগ্রাহ্য করায় ক্ষোভের বশর্বর্তী হয়ে তার বিরুদ্ধে এ মিছিল করা হয়েছে বলে জানান। বিষয়টি তিনি সিলেটের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।