অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও লাইসেন্সহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ

46

কাজিরবাজার ডেস্ক :
গণপরিবহনে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও লাইসেন্সহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ১৩ বছর বয়সী শিশুর বাস চালানোর ছবি প্রকাশের পর দিনই এই নির্দেশ এলো।
যদিও এই ভিডিও নয়, নির্দেশনাটি এসেছে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে।
গত তিন দিন ধরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে চলা বিক্ষোভের মধ্যে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সড়ক পরিবগন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআরটিএ, বিআরটিসিসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সভা হয়। আর এতেই এই নির্দেশনা আসে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৫ এস এম তরিকুল ইসলাম সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএ এবং ঢাকা মহানগর পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে মঙ্গলবার জনস্বার্থে করা একটি রিটের শুনানি নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনারোধে যানবাহনের ফিটনেস যাচাই করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অন্তত ১৫ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করে আগামী ৩ মাসের মধ্যে একটি সার্ভে রিপোর্ট আদালতে দাখিল করতে সড়ক ও সেতু বিভাগের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং বিআরটিএ এর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচার মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রবিবার বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় মারা যান রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী। সেদিনই এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে শতাধিক বাস ভাঙচুর করে ক্ষোভ জানায় কলেজের ছাত্ররা।
পরদিন অভিযুক্ত চালককে গ্রেফতার, সাজাসহ নানা দাবিতে আবার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ছাত্ররা। সেদিন শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরে বিকালের দিকে খিলক্ষেত এলাকায় বেপরোয়া ভাঙচুর চালায় তারা।
তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও সড়ক আটকে বিক্ষোভ করে এই কলেজসহ আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা। এদিনও ব্যাপক ভাঙচুরের পাশাপাশি একাধিক গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করাসহ নয় দফা দাবি জানিয়ে আসছে।
এর মধ্যে সোমবার ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে যেখানে ১৩ বছর বয়সী মুন্নাকে বাসে চালকের আসনে দেখা যায়। শিশুটি এক বছর ধরে ঢাকার আজিমপুর থেকে সাভারের নবীনগর রুটে যে ‘গ্রামীণ শুভেচ্ছা’ পরিবহনের বাস চালালেও পুলিশের চোখে ধরা পড়েনি। আর গুলিস্তান এলাকায় পুলিশ ধরলে কিছু বলবে না, সেটি মুন্না নিজে ওই ভিডিওতে বলেছে।
আবার দুর্ঘটনায় নিহত দিয়া আক্তার মিমের পরিবারকে সান্তনা দিতে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মঙ্গলবার তার বাসায় গেলে পরিবহনে নৈরাজ্যের বিষয়টি তুলে ধরেন এই কিশোরীর বাবা জাহাঙ্গীর আলম।
জাহাঙ্গীর নিজেও একজন বাস চালক। তবে তিনি দূরপাল্লায় যাত্রী পরিবহন করেন। তিনি মন্ত্রীকে বলেন, নগর পরিবহনে চলাচলকারী বাসগুলোর বেশিরভাগের চালক অদক্ষ, তাদের হয় লাইসেন্স নেই বা পাওয়ার কথা না।
আরও বেশি কিছু বিষয় উঠে আসে এই আলোচনায় আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফিটনেসহীন বাসের বিরুদ্ধে, লাইসেন্সহীন চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।
এদিকে সড়ক দুর্ঘটনারোধে যানবাহনের ফিটনেস যাচাই করতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অন্তত ১৫ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করে আগামী ৩ মাসের মধ্যে একটি সার্ভে রিপোর্ট আদালতে দাখিল করতে সড়ক ও সেতু বিভাগের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং বিআরটিএ এর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদের জনস্বার্থে করা একটি রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচার মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
এছাড়া যানবাহনের ফিটনেসের নিশ্চয়তা ও মনিটরিংএ বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ফিটনেস বিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না রুলে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু সাইদ।
তানভীর আহমেদ জানান, সড়কে চলাচল করা অনেক যানবাহনগুলোর লুকিং গ্লাস, ব্রেক লাইট, সিগন্যাল লাইট ঠিক নেই। এমনকি অনেক যানবাহনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ফিটনেসও নেই। ফিটনেসবিহীন এসব যানবাহনের কারণে যেখানে-সেখানে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।’