সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
আলোচিত ‘ক্যাসিনো-কাÐে’ নাম আসা সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোয়াজ্জেম হোসেনের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ পৌর শহরে তার বাড়িতে গিয়ে সেটি পরিমাপ করেছে দুদকের একটি দল।
এর আগে সোমবার তার গ্রামের বাড়ি জেলার ধর্মপাশা উপজেলার নওধার গ্রামে গিয়েছিলেন কর্মকর্তারা। আজ বুধবার যাবেন তাহিরপুর উপজেলায়।
২০২০ সালের ১৮ ফেব্রæয়ারি মোয়াজ্জেম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তার বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমের সঙ্গে সম্পর্ক, অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো কারবার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল। তখন তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মল্লিকপুর এলাকায় থাকা মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়ি ‘স্পর্শ স্পন্দন ড্রিম হাউসে’ যান দুদকের অনুসন্ধান দলের কর্মকর্তারা। সঙ্গে সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরাও ছিলেন। তারা বাড়িটি পরিমাপ করেন। এই বাড়ির নাম আগে ‘পায়েল ভিউ’ ছিল। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর নামও পরিবর্তন করা হয়েছে। বাড়িটি পরিমাপ ও মোয়াজ্জেম হোসেনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) কয়েকজন সদস্যও সেখানে ছিলেন। সোমবার একইভাবে ধর্মপাশা উপজেলার নওধার গ্রামের তার বিলাসবহুল বাড়ি ‘হাওর বাংলায়’ গিয়ে সেটির পরিমাপ করা হয়।
অনুসন্ধান দলের সদস্য দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান ভ‚ঁইয়া বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল। ৫ আগস্টের পর আরও কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের পরিচালক আবদুল মাজেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে। এই দলের বাকি দুই সদস্য হলেন দুদকের অতিরিক্ত পরিচালক গুলশান আনোয়ার ও উপসহকারী পরিচালক এলমান আহমেদ। মাহমুদুল হাসান ভ‚ঁইয়া আরো বলেন, এর আগেও মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগে অনুসন্ধান হয়েছে। সেগুলোর তথ্য দুদকে আছে। এখন সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও ঢাকায় অনুসন্ধান চলছে। তারা সব জায়গায় যাবেন। অনুসন্ধান শেষে দুদকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
দুপ্রকের সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য রাজু আহমাদ বলেন, পৌর শহরের ওই বাড়িতে মঙ্গলবার মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রী ও দুই সন্তান ছিলেন। দুদক কর্মকর্তারা মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। শহরের এই বাড়ি মোয়াজ্জেম হোসেনের নামে নয়, এটি তার স্ত্রীর নামে বলে জানা গেছে। ২০০৭ সালে বাড়িটি কেনা হয়েছিল। পুরোনো বাড়ির উত্তর পাশেই আরেকটি প্লটে নতুন করে দোকানপাট তৈরির কাজ চলছে। এটি পরে কিনেছেন মোয়াজ্জেম হোসেন।
মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়িতে সাত বছর ধরে কাজ করেন মিঠুন মারাক (৪৫)। তিনি বলেন, এখানে ৫ আগস্টের আগে থেকেই মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রী, সন্তানেরা বসবাস করছেন। মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়িতে গিয়েও বসবাস করেন তারা।