সিলেটে ব্যবসায়ীদের মালামাল ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান

14

সিলেট নগরীর কালীঘাট সহ বিভিন্ন এলাকায় চিনি, পেঁয়াজ, সবজি সহ অন্যান্য মালামাল ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহনযোগে বিভিন্ন বাজারে যাওয়া ও আসার পথে সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যবসায়ীদের হয়রানী, মালামালা, শ্রমিকদের উপর নির্যাতন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভ‚মিকা প্রসঙ্গে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সিলেট ব্যবসায়ী সমিতি ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় পরিষদ ও সিলেট জেলা ট্রাক-পিকআপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট ট্রেড সেন্টার ভেজিটেবল মার্কেট ও হাজী নওয়াব আলী সবজি মার্কেটের নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রæয়ারি) দুপুর ১২টায় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা মিছিল সহকারে সিলেটের জেলা প্রশাসক, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশার, পুলিশ সুপার বরাবরে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি তাহমিন আহমেদ, সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: জিয়াউল হক, সাধারণ সম্পাদক হাজী মো: দিলওয়ার হোসেন, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী আব্দুর গফ্ফার মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম মুনিম, সিলেট জেলা ট্রাক-পিকআপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: দিলু মিয়া, কার্যকরী সভাপতি আব্দুস ছালাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর, সিলেট ট্রেড সেন্টার ভেজিটেবল মার্কেটের সভাপতি মো. ছাদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো: রাজু আহমদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আলেক মিয়া, হাজী নওয়াব আলী সবজি মার্কেটের সভাপতি আলহাজ¦ মো: আবুল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক কাজী বোরহান উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য সৈয়দ জাহিদ উদ্দিন, খালেদ হোসেন, হুরেয়ারা ইফতার হোসেন, হাজী রহমত মিয়া, শরিফ হোসেন, শ্রমিক কল্যাণ সংস্থার সভাপতি বাহার মিয়া, সাধারণ সম্পাদক লিটন মিয়া। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি প্রদানে অংশ নেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়-১৯৮৯ সালে ৭টি এলাকা নিয়ে গঠিত সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির আওতাভ‚ক্ত কালিঘাট, লালদিঘীরপাড়, আমজাদ আলী রোড, শাহচট রোড, মহাজনপট্টি, চাউল বাজার, ডাকবাংলা রোড সিলেট বিভাগের প্রাচীনতম বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে খ্যাত। উক্ত প্রাচীনতম পাইকারী বাজার থেকে প্রতি দিন ট্রাকসহ বিভিন্ন ছোট-বড় যানবাহনে করে সিলেট জেলা তথা সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বাজারে খাদ্যদ্রব্য সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহ হয়ে থাকে। সমিতিভ‚ক্ত এলাকার ব্যবসায়ী, বাজারে আগত ব্যবসায়ী, বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত ব্যাংক, বীমা, স্কুলগামী ছাত্র, অভিভাবক, ৩টি পাড়ার (কামালগড়, ছড়ারপার, মাছিমপুর) জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে যানজট সমস্যা নিরসনকল্পে ও বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ১৯৯০ সালে সিলেট ব্যবসায়ী সমিতি ও পার্শ্ববর্তী ৩টি পাড়ার জনসাধারণ এবং সিলেট জেলা ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সমন্বয়ে “যানবাহন নিয়ন্ত্রন সমন্বয় পরিষদ” নামে পৃথক একটি সংগঠন তৈরী করা হয়। বর্তমানে সিলেট ব্যবসায়ী সমিতি ও যানবাহন সমন্বয় পরিষদের যৌথ পরিচালনায় যানজট সমস্যা নিরসনসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ১৭ জন ট্রাফিক (লাইনম্যান), ১ জন অফিস সহায়ক ও একজন সচিব নিয়োগ করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
দুইটি সংগঠনের যৌথ প্রচেষ্টায় বৃহত্তর এই বাণিজ্যিক এলাকার যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অটুট রয়েছে। তাছাড়া বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো কঠোর করার লক্ষ্যে বিগত ৭/৭/২০১৭ইং তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী মরহুম আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডঃ এ.কে আব্দুল মোমেন এমপি, সাবেক ময়র মরহুম বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এবং বর্তমান সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে লালদিঘীরপারস্থ উভয় সংগঠনের কার্যালয়ের সম্মূখে জনসভার মাধ্যমে ১৬টি সি.সি. ক্যামেরা উদ্ধোধন করেন। উক্ত ১৬টি সিসি ক্যামেরা সার্বক্ষণিক সচল থাকার ফলে এবং অফিস থেকে মনিটরের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করায় বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকার (কালিঘাট, শাহচট, লালদিঘীরপাড়, আমজাদ আলী রাড, মহাজনপট্টি, চাউল বাজার ও ডাক বাংলা রোড) সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অটুট রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বিগত কিছুদিন যাবৎ উক্ত বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকায় সকালে ও রাতে কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ বাজারে প্রবেশ করে ব্যবসায়ীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে মালামাল লোড-আনলোডে বাঁধা প্রদান করে চাঁদা দাবী করে এবং বাজারে আগত ব্যবসায়ীগণ মালামাল ক্রয় করে যানবাহনে করে নিয়ে যাওয়ার ও বাজারে মালামাল প্রবেশের সময় শহরের বিভিন্ন স্থানে গাড়ী আটকিয়ে মালামাল লুট সহ চাঁদাবাজী করে আসছে। তাদের এহেন কার্যকলাপের সাথে কিছু সংখ্যক অসাধু আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা জড়িত রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
এমতাবস্থায়, বাজারের ব্যবসায়ীগণ সহ বাজারের আগত অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভ‚গছে। এদের এহেন কার্যকলাপের ফলে বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য বিঘিœত হচ্ছে এবং আইন-শৃঙ্খলার বাহিনী ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির উপর ইহার প্রভাব পড়ছে বলে আমরা মনে করি। সন্ত্রাসীদের এহেন কার্যকলাপ এবং আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যদের নিরব ভ‚মিকার ফলে বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকার ব্যবসায়ীগণ ও স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। যাহা যেকোন সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনায় রূপ নিতে পারে।
উল্লেখ্য যে, সোবহানীঘাটের কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ীবৃন্দ উল্লেখিত সমস্যার কারণে আমাদের অবহিতকরণ সহ আমাদের দ্বারা পরিচালিত যাবতীয় কার্যক্রমের সহিত একমত পোষন করিয়াছেন।
উল্লেখিত অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং সরকার নির্দেশিত দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষে আগামী ৭ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় ব্যবসায়ীরা যেকোন কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হইবে। বিজ্ঞপ্তি