বিশ্বনাথে পলো বাওয়া উৎসবে আনন্দের ঢল

2

বিশ্বনাথ সংবাদদাতা
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার গোয়াহরি গ্রামের শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্য পলো বাওয়া উৎসব। এ উৎসব ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে চলে প্রস্তুতি। উৎসবে যোগ দিতে অনেক প্রবাসীও পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশে আসেন। পাশাপাশি এই উৎসবে যোগ দিতে বিয়ে হওয়া গ্রামের মেয়েরাও স্বামী সন্তান নিয়ে আসেন।
মাঘ মাসের প্রথম দিনে এ উৎসব হয়ে থাকে। এদিন গ্রামের ছোট-বড় সবাই দলবেঁধে পলো নিয়ে গ্রামের দক্ষিণের বড় বিলে মাছ ধরতে নামেন। এ দিনটির অপেক্ষায় থাকেন গ্রামবাসী।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে চলতি বছরের পলো বাওয়া উৎসব উদযাপিত হয়েছে। মাঘের কনকনে শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকেই পলো, বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় হাতজাল নিয়ে বিলের পাড়ে জড়ো হতে থাকেন মাছশিকারিরা। এ দৃশ্য দেখতে সেখানে ভিড় করেন দূরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা দর্শনার্থীরাও।
ঘড়ির কাঁটায় যখন ঠিক ১১টা, একসঙ্গে পলো নিয়ে বিলের পানিতে ঝাঁপ দেন মাছশিকারিরা। এ সময় তাদের হৈ-হুল্লোড়ে অন্যরকম আমেজ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা মাছ ধরা শেষে একে একে উঠে আসেন তারা। সবার হাতে ছিল নানা ধরনের দেশীয় মাছ। কারও হাতে ছিল বড় বোয়াল, কারও হাতে ছিল কাতলা, শোল, গজার কিংবা রুই মাছ। আর হাতজাল দিয়ে ছোটরা শিকার করেন টেংরা-পুঁটিসহ ছোট মাছ।
স্থানীয়রা জানান, গোয়াহরি গ্রামের পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ভাদ্র মাস থেকে বিলে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর পাঁচ মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকে। মাঘ মাসের প্রথম দিনে প্রথা অনুসারে উৎসব আয়োজন করে মাছ ধরতে নামেন গ্রামবাসী। তবে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিলে মাছ কম ছিল। পলো বাওয়া উৎসবে এসেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলম খান। তিনি বলেন, পলো দিয়ে মাছ শিকার আমাদের কাছে মজার বিষয়। ছোটবেলা থেকেই এ উৎসব দেখে আসছি। তাই পলো বাওয়া উৎসবে অংশ নিতে দেশে এসেছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, গোয়াহরি গ্রামের পলো বাওয়া উৎসব পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া ঐতিহ্য। যুগ যুগ ধরে এ ঐতিহ্য বজায় রেখেছি। এ উৎসবের আনন্দ অন্য কিছুতে পাওয়া যাবে না।