তফসিল ঠেকাতে দুর্গাপূজার পর সরকারবিরোধী চ‚ড়ান্ত আন্দোলন

7

কাজির বাজর ডেস্ক

দুর্গাপূজার পর ঢাকায় জনসভা করে সরকারবিরোধী চ‚ড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে চায় বিএনপি। এ পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভবনমুখী পদযাত্রা-ঘেরাও, অবস্থান ও অবরোধ কর্মসূচি নিয়েও ভাবছে দলটি। বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া গেছে।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, নতুন যে কর্মসূচি শুরু হবে তার মূল লক্ষ্য থাকবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ঠেকানো। এ জন্য তফসিল ঘোষণার অন্তত দুই সপ্তাহ আগে থেকেই কঠোর কর্মসূচি শুরু করতে চায় দলটি। দলের নেতারা মনে করছেন, উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তফসিল ঘোষণা করা সহজ হবে না। পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত করতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থায়ী কমিটির সোমবারের নির্ধারিত বৈঠক ছাড়াও অনির্ধারিত একাধিক বৈঠক করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। গত সপ্তাহে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করে আন্দোলনের কর্মসূচির বিষয়ে মতামত নিয়েছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গত কয়েক দিনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বও শরিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বলে জানা গেছে।
বৈঠকগুলোর একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, চলতি মাসের শেষের দিকে ঢাকায় জনসভা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। জনসভার সম্ভাব্য তারিখ হতে পারে ২৭ কিংবা ২৮ অক্টোবর। সেখান থেকে কী কর্মসূচি দেওয়া হবে তা এখন চ‚ড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দল ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা কয়েকটি মত দিয়েছেন। নেতাদের বেশির ভাগ সচিবালয় ঘেরাও কিংবা সচিবালয়মুখী পদযাত্রার মাধ্যমে কর্মসূচি শুরুর পক্ষে। কোনো কোনো নেতার মত, ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে ঢাকামুখী রোড মার্চ করা। কেউ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন কিংবা সর্বোচ্চ আদালতমুখী পদযাত্রার মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করা যেতে পারে। গত ১৪ অক্টোবর এক সমাবেশ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পূজার পর কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আর গণতন্ত্রের মুক্তি- দুটিই সমার্থক ও অবিচ্ছেদ্য। এই দুই দাবিকে সমন্বয় করে পূজার পর দুর্বার গণ-আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, পূজার পর আন্দোলনের চ‚ড়ান্ত ধাপের কর্মসূচি শুরু হবে। এই ধাপে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে সরকারের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে।
আলটিমেটাম থেকে সরে আসা : আগামী ১৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে বিএনপি। সেই কর্মসূচি থেকে আলটিমেটাম দেওয়ার কথা থাকলেও তা নিয়ে দলে ভিন্নমত তৈরি হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের বক্তব্যসহ কয়েকটি ঘটনায় সে বাস্তবতা এখন আর নেই বলে মনে করেন নেতারা।
বহিষ্কৃতদের সাধারণ ক্ষমা : বিএনপির স্থায়ী কমিটি সূত্র জানায়, দলের বহিষ্কৃত নেতাদের সাধারণ ক্ষমা করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, বহিষ্কৃতদের মধ্যে অনেক ত্যাগী ও প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন। আন্দোলনে তাঁদের কাজে লাগাতে সবার একসঙ্গে বহিষ্কারদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।