তিন সমস্যায় নাকাল নগরবাসী

30

সিন্টু রঞ্জন চন্দ

তিন সমস্যায় নাকাল নগরবাসী। একের পর এক উদ্যোগ ও পরিকল্পনা নেওয়া হলেও নগরবাসী সমস্যার যে তিমিরে ছিলেন সেই তিমিরেই রয়ে গেছেন। নগরী জুড়ে সারা বছরই চলে খোঁড়াখুঁড়ি। সংস্কার আর নির্মাণের নামে নগরবাসী বছরের পর বছর থাকেন ভোগান্তিতে। এরপরও শেষ হয়না নির্মাণ আর সংস্কার কাজ। এই নির্মাণ আর সংস্কারের জের ধরে পোহাতে হয় নগরবাসীকে মশার উপদ্রব আর ভয়াবহ মাত্রার যানজট। সিলেট সিটি কর্পোরেশন ‘মশা মারতে কামান লাগালেও’ কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মশার যন্ত্রনায় এক কথায় অতিষ্ঠ নগরবাসী। অভিযোগ রয়েছে-মশার ওষধেও রয়েছে ভেজাল। এই দুর্ভোগের সাথে যানজট আরেক দুর্ভোগ। নগরীর ভেতর চলছে অসংখ্য লাইসেন্সবিহীন রিকশা, ব্যাটারি চালিত রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা। যার কোন সঠিক হিসাব সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাছে নেই। যে হিসাব আছে সেই হিসেবের সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। ফলে প্রতিদিন নগরী জুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত যানবাহনের কারনে ঘটছে দুঘর্টনা। এসব দুঘর্টনায় প্রতিদিনই হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
নগরীতে দফায় দফায় খোঁড়াখুঁড়ি:
নগরীজুড়ে বর্ষা মৌসুমে বেড়েছে খোঁড়াখুঁড়ি। সংস্কার না করেই একের পর এক খোঁড়াখুঁিড়তে পুরো নগরীতে রাস্তায় তৈরী হচ্ছে গর্ত আর এর পাশের্^ হচ্ছে ইট-সুরকির স্ত‚প। বছরজুড়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের এমন অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়িতে অতিষ্ঠ নগরজীবন। তবে সহসা এ থেকে মুক্তির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে খোদ সিসিক। আগামী বর্ষা মওসুম পর্যন্ত চলবে খোঁড়াখুঁড়ি। ফলে দীর্ঘায়িত হতে যাচ্ছে জনদুর্ভোগ। সংস্কার কাজের দোহাই দিয়ে সদ্য কার্পেটিং করা নতুন রাস্তা খুঁড়ে বিধ্বস্ত করে দেয়া হলেও পুনঃসংস্কারের কোন নাম নেই। উন্নয়নের নামে সিসিকের এমন কর্মযজ্ঞ শুধু নগরীর প্রধান প্রধান রাস্তা নয়, ছড়িয়ে পড়ছে পাড়া মহল্লা আর অলিগলিতে। খোঁড়াখুঁড়ি জনিত কারণে বৃষ্টিতে কাদা আর রোদে ধুলায় ধূসর হচ্ছে নগরী। ধুলোবালি থেকে বাঁচতে নাকে রুমাল দিয়ে হাঁটাচলা করছেন জনসাধারণ। বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বয়স্করা। বায়ুদুষণের কারণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন তারা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরবাজারস্থ নগর ভবন সংলগ্ন কুদরত উল্লাহ মসজিদের সামনে থেকে শুরু হওয়া খোঁড়াখুঁড়ির বিস্তৃতি গোটা নগরীজুড়ে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই খোঁড়াখুঁড়ি। চলার উপায় নেই সড়কে। অপরিকল্পিত এই খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পুরো সিলেট শহরে বাড়ছে যানজট। বেড়েছে দুর্ভোগ। প্রভাব পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্যেও। একসাথে রাস্তা, কালভার্ট ও ড্রেনের নির্মাণ কাজ চলছে, এর মধ্যে পানির পাইপলাইনের জন্য নতুন করে খোঁড়াখুঁড়িতে সব রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। সিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, নগরীর উন্নয়নের জন্যই এসব খোঁড়াখুঁড়ি। উন্নয়নের স্বার্থে এ দুর্ভোগ মেনে নিতে হবে। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে কাজ হচ্ছে। জনদুর্ভোগের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না।
দেখা গেছে, নগরীর তালতলা ভিআইপি সড়ক, মিরাবাজার-রায়নগর সড়কে সম্প্রতি নতুন কার্পেটিং করা হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই নতুন রাস্তাটি খোঁড়াখুঁড়িতে বিধ্বস্ত করে ফেলা হয়েছে। একইভাবে দাদা পীর মাজার থেকে শাহী ঈদগাহগামী সড়কেরও একই অবস্থা। সুরমা মার্কেট থেকে তালতলা সড়ক ও নগরীর ধোপাদিঘীর পাড়স্থ সিটি মসজিদ ও বিনোদিনী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনের রাস্তার চিত্র আরো ভয়াবহ। এখানে খোঁড়াখুঁড়িতে কেবলই ধুলোই উড়ছে না জমছে কাদাও। নাইওরপুল থেকে শিশুপার্ক পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা অনেকটা ‘বোরো জমির’ মতো।
এদিকে নগরীর কুদরত উল্লাহ মসজিদের সামনে থেকে শুরু করে তালতলা হয়ে কাজিরবাজার ব্রিজ মোড় ঘুরে শেখঘাট-লামাবাজারের রাস্তার চিত্রও একই। এখানে মাস খানেক আগে পানির পাইপলাইনের জন্য খোঁড়া হয়েছিল। কিন্তু খোঁড়ার পর ফের মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে সেখান থেকে একদিকে ধুলো উড়ছে। অপরদিকে সৃষ্টি হচ্ছে গর্তের।
নগরীর রিকাবীবাজার থেকে একদিকে ওসমানী মেডিকেল রোড হয়ে কানিশাইল রোড, অপরদিকে বাগবাড়ী হয়ে মদিনা মার্কেটের রোডে খোঁড়াখুঁড়ির জন্য রাস্তায় চলা দায় হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় দিনের বেলা চলতে গেলে নাকে রুমাল দিয়ে চলতে হয়। একটু বৃষ্টি হলে চিত্র তখন ভয়াবহতা রূপ নেয়।
নগর ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরবাজার থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে হয়ে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট পর্যন্ত সিসিকের পানি সরবরাহের পাইপলাইন স্থাপনের জন্য সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি হয়। অপরদিকে তালতলা ,কাজিরবাজার, শেখঘাট, নাইওরপুল, মিরাবাজার, শিবগঞ্জ, সুবিদবাজার, পাঠানটুলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ড্রেনের নির্মাণ কাজ।
নগরবাসীর প্রধান সমস্যা মশা:
সিলেট সিটি কপোরেশনের মশা নিধনের এতো আয়োজনের পরও নগরীতে কমছে না মশার উপদ্রব। মশার উৎপাতে দিনরাত সমানভাবে যন্ত্রণাভোগ করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। নিয়মিত ওষধ ছিটানো সম্ভব না হওয়ায় এবং অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি, অপরিচ্ছিন্ন ড্রেনের ¯øাব, রাস্তার গর্তে পানি জমে যাওয়ায় মশার বংশ বৃদ্ধিও কমছে না বলে দাবি জনগণের।
এসব কারনেই নগরীর প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় মশার উপদ্রব মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। এ জন্য মশার উপদ্রব বাড়ায় দিনের বেলায় ঘুমাতে গেলেও নগরবাসীকে টানাতে হচ্ছে মশারি। মশক নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে নগরীতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে।
মশক নিধনে সিটি করপোরেশনও নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে হলে সারাবছরই নগরীতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাতে হয়। বিশেষ করে মশার প্রজননের মৌসুমে ১০ দিন অন্তর অন্তর একযোগে পুরো নগরীতে মশার ঔষধ ছিটাতে হবে। এভাবে দুইমাস ঔষধ ছিটানো গেলে মশার বংশ বৃদ্ধি কমে আসবে। নগরবাসীও মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাবেন।
সিসিকের স্বাস্থ্য শাখা সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে (বর্ধিত নতুন ১২টি ওয়ার্ড ছাড়া) একযোগে ঔষধ ছিটাতে হলে অন্তত ১৫০ জন কর্মী প্রয়োজন। কিন্তু এই কাজের জন্য সিটি করপোরেশনের কোন জনবল নেই। মাত্র দুইজন স্প্রে ম্যান রয়েছেন। তাই কখনোই একযোগে পুরো নগরীতে ঔষধ ছিটানো সম্ভব হয় না। একেক ওয়ার্ড করে ঔষধ ছিটাতে গেলেও বাইরের দিনমজুরের উপরের ভরসা রাখতে হয়। অনভিজ্ঞ কর্মীরা ঠিকমতো ঔষধ ছিটাতেও পারে না। এছাড়া একেক ওয়ার্ড করে ঔষধ ছিটানোর পর মশা পার্শ্ববর্তী এলাকায় চলে যায়। যে কারণে মশক নিধন সম্ভব হয় না। ফলে মশার বংশবৃদ্ধি কমছে না। তাই ঔষধ ছিটিয়েও ফল মিলছে না।
সূত্র জানায়, নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছড়া ও খালের উপর এবং রাস্তার পাশে বক্স ড্রেন নির্মাণ করেছে সিটি করপোরেশন। এই বক্স ড্রেনগুলোই বিভিন্ন বর্র্জ্য আটকে গিয়ে মশার প্রজনন স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপর অংশ বন্ধ থাকার কারণে ড্রেনের ভেতর ঔষধও ছিটানো সম্ভব হয় না। ফলে এসব ড্রেনের ভেতর মশা ডিম পেড়ে বংশ বৃদ্ধি করছে। একটি মশা প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজারের মতো ডিম পাড়ে।
যানজটে নাকাল নগরবাসী:
নগরীর বেশীর ভাগ সড়কে মারাত্মক যানজটে নাকাল নগরবাসী। সড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়া, উন্নয়নের জন্য রাস্তাঘাটের বিভিন্ন স্থানে সড়কের উপর মাটি ¯ূÍপ করে রাখা, খোঁড়াখুঁড়ি ও পাড়া-মহল্লার অপ্রশস্ত রাস্তায় যানজটের মূল কারণ হিসেবে মনে করছেন নগরীর মানুষজন। গতকাল সোমবার নগরীর একাধিক এলাকায় যান চলাচল স্থবির হয়ে থাকতে দেখা গেছে। রোজার মধ্যে তীব্র দাবদাহে যানজটে পড়ে ব্যাপক দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন নগরীর বাসিন্দারা।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, রমজান মাস হওয়ায় বিকেলের আগেই মানুষ প্রয়োজনীয় সব কাজ শেষ করতে তৎপর। এ ছাড়া অন্যান্য সময়ের তুলনায় নগরীর যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তালতলা, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, চৌহাট্টা, সুরমা মার্কেট, লালদিঘীর পাড় ও সোবহানীঘাট এবং শাহজালাল উপশহরসহ কিছু এলাকার ফুটপাতও বেদখলে রয়েছে। এতে দীর্ঘক্ষণ ধরে যানজট হচ্ছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের যানজটের প্রভাব পাড়া-মহল্লাতে গিয়েও ঠেকছে।
সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগের তথ্য বলছে, নগরীতে মূলত পাঁচ কারণে যানজট হচ্ছে। সেগুলো হলো অবৈধ যানবাহন, অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট, সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি, ফুটপাত বেদখল ও যত্রতত্র পার্কিং। এ ছাড়া নগরী রিকশাসহ অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ হাজার অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে বলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্দরবাজার, রাজা জিসি রোড, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, সুরমা মার্কেট, লামাবাজার, কাজলশাহ, মদিনা মার্কেট, নাইওরপুল, সোবহানীঘাট, ধোপাদিঘীর পাড়, শিবগঞ্জ, শাহজালাল উপশহর, মহাজনপট্টি, কালীঘাট, সিটি পয়েন্ট, কদমতলী ও ভার্তখলা এলাকায় তীব্র যানজটে যান চলাচল স্থবির হয়ে আছে। সকাল থেকেই থেমে থেমে এসব এলাকায় যানজট ছিল। এতে নগরবাসীকে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
নগরীতে মশার উপদ্রব কবে থেকে রক্ষা পাবে এ সম্পর্কে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মো: জাহিদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মশক নিধন কর্মসূচি চলমান রয়েছে। প্রতিদিনই কোন না কোন ওয়ার্ডে মশা নিধন অভিযান চলছে। মুলত একটি মশা প্রতিদিন ৩০ হাজার ডিম পাড়ে। এখন পর্যন্ত ১৯টি ওয়ার্ডে এই মশা নিধনের কার্যক্রম চলছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ওয়ার্ডে মশক নিধন অভিযান চালানো হবে। তিনি বলেন, মুলত ৩টি কারনে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। (১) অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা ও ভবন নির্মাণ করা (২) যত্রতত্রভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলা এবং (৩) ড্রেন, ছড়া ও খালে পলিথিনসহ বিভিন্ন বর্জ্য আটকে থাকা। মুলত এই তিন কারনেই মশা দ্রæত বংশবৃদ্ধি করতে পারে।
তিনি বলেন, এতে যদি মানুষ একটু সচেতন হয়ে তার স্থাপনা ও ভবনের আশপাশ সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছিন্ন রাখেন তাহলে মশার উপদ্রব অনেকাংশে কমে আসবে। এছাড়া মশার ঔষধ ছিটাতে সিটি কর্পোরেশনের একটি সমস্যা রয়েছে। সেটা হলো জনবল কম থাকা। ফগার মিশিনে ঔষধ যাকে দিয়ে ছিটানো হয় তাকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা দিতে হয়। সিটি কপোরেশনের অর্থায়নে এই মশা নিধনের কার্যক্রম চালানো হয়ে থাকে। এছাড়া এসব কাজ করতে লোকজন পাওয়াটা সম্ভব হয়ে উঠেনা। ফলে এক ওয়ার্ডে ঔষধ ছিটালো অন্য ওয়ার্ডে মশা গিয়ে বংশবৃদ্ধি করার ফলে মশার উপদ্রব লক্ষণীয়। তাই জনগণ এ ব্যাপারে জনসচেতনাতা অবলম্ভন করতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষ তার চার পাশ পরিস্কার পরিচ্ছিন্নতা রাখার আহবান জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
নগরী রাস্তা-ঘাট এত বেশী খোঁড়াখুড়ি হচ্ছে কেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাসরি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, আসলে সিলেট নগরীর বৃটিশ আমলের ও ২০/২৫ বছর আগের পানির পাইপ লাইন ছিলো এগুলো ফেটে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে পাইপ লিগেজ হওয়ার কারণে খোঁড়াখুড়ি হচ্ছে মেরামতের জন্য। একিস্থানে ২ থেকে ৩ বার খোঁড়াখুড়ি হচ্ছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, পানির পাইপ লাইন মেরামত করার পরে অনেক গ্রাহকদের পানির লাইন সেট না হওয়ায় এগুলো হয়। এছাড়া নগরীর ভেতরে রাস্তার উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য চাপ খেয়ে অনেকস্থানে পানির পাইপ লাইন ফেটে যায়। ফলে এগুলো মেরামত করতে গিয়ে রাস্তা খোঁড়াখুড়ি করা হয়ে থাকে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এধরনের প্রজেক্ট চলমান থাকবে।
তিনি আরো বলেন, রাস্তার পাশের ড্রেনে ময়লা আবর্জনা ফেলে পানির প্রবাহমুখ অনেক সময় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এগুলো কাজ করতে গিয়ে খোঁড়াখুড়ি করা হয়ে থাকে। খোঁড়াখুড়ির পর অনেক সময় দেখা যায় রাস্তার উপর মাটি ও ময়লা স্তুপ করে রাখা হয় এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আসলে আমরা রাস্তায় লোকজন সহজভাবে চলাচলের জন্য যত দ্রæত সম্ভব রাস্তা থেকে মাটিগুলো সরানো হয়ে থাকে। মানুষ সঠিক স্থানে সঠিকভাবে বর্জ্য ব্যবহার করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ এ ব্যাপারে যদি সচেতন হয় তাহলে খোঁড়াখুড়ি অনেকটা কমে আসবে বলে জানান সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান।
নগরীতে যানজট ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া এন্ড কমিউনিটি সার্ভিস) সুদীপ দাস জানান, নগরীর পয়েন্টে পয়েন্টে রমজান মাসে যানজট নিরসনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর এক পাশের রাস্তা জুড়ে ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে মোড়ে মোড়ে জিনিসপত্র বিক্রি করছে। পুলিশ এসব ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন উচ্ছেদ করে তাদেরকে সর্তক করে দিলেও পরে আবার তারা বসে ব্যবসা করায় রাস্তায় যানজট হচ্ছে। তিনি বলেন, নগরীতে মানুষ বাড়ছে ও নতুন নতুন গাড়ী বাড়ানোর কারনে নগরীর ছোট ছোট রাস্তায় যানজটে পড়ছেন মানুষজন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।